বাংলাদেশি থাকবে আর সেখানে রাজনীতি হবে না, সেটা অশোভন। আর যদি হয় দেশের বৃহৎ একটি রাজনৈতিক দল বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ঘিরে, সেটি যে জ্বরের মতো প্রভাবিত হবে, সেটাই যেন স্বাভাবিক।
মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বিএনপি সমর্থক বাংলাদেশিরা এখন তারেক জ্বরে আক্রান্ত। সেখানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের রেঁস্তোরা, হোটেল, বাজার এখন সরগরম তারেক রহমান আলোচনায়। হৈ হৈ করে সারাদেশেই প্রচার হয়ে পড়েছে তারেক রহমানের আগমনের খবর।
তারেকের এ ঝড়ে ভিনদেশী বন্ধুরাও বাংলাদেশিদের কাছ থেকে তারেকের খোঁজ খবর করছেন। গতকাল সোমবার মালয়েশিয়ায় পৌঁছান তিনি। এরপর থেকেই চলছে জল্পনা-কল্পনা। তারেক রহমানের এ ভ্রমণে তৈরি হয়েছে নানা ধূম্রজাল।
কোথায় রয়েছেন তারেক রহমান! একেকজন একেক তথ্য দিচ্ছেন। বিএনপির দুই পক্ষের দাবি দুই ধরনের। উভয় পক্ষই দাবি করছে তাদের সঙ্গে তারেকের ঘনিষ্ঠতা। তবে আবার এক পক্ষ আরেক পক্ষের বিরোধিতাও করছেন। আবার একই গ্রুপের বিভিন্ন মাত্রার নেতারাও দিচ্ছেন বিভিন্ন তথ্য। অনেকেই বলছেন, মালয়েশিয়া সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রীর অতিথি তিনি। তাই তিনি মালয়ী দাতু’দের সমাদরেই রয়েছেন।
যেমন কেউ নিশ্চিত করেই বলছেন, তারেক রহমান ৭ তারিখ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত সময় কাটিয়েছেন সিঙ্গাপুরে, সঙ্গী ছিলেন ভাই আরাফত রহমান কোকো। তবে অন্যরাও নিশ্চিত করে বলছেন, তারেক মালয়েশিয়াতেই রয়েছেন। সময় কাটাচ্ছেন লাঙ্কাভিতে। তবে এখানে প্রায় অর্ধশত নেতাকর্মী আর সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলে বোঝা যাচ্ছে, তারেক রহমানের কাছে পৌঁছানো এখানে সম্ভব হয়েছে হাতেগোণা দুই-এক জনের।
আর তারেকের সঙ্গে তার সাবেক ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মিয়া নাসিরুদ্দিন অপু রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন প্রায় সবাই। র্যাব বিলুপ্তির দাবিতে তারেক জিয়া মালয়েশিয়ায় গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করবেন বলে দাবি জানিয়েছে বিএনপির একটি অংশ।
তবে তারেক অনুষ্ঠান কোথায়, কখন, কাদের সঙ্গে করবেন সেটি প্রথম দিকে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। জানা গেছে, ৬ জুন গভীর রাতের বৈঠকে মিটমাট হয় দুই পক্ষের। মালয়েশিয়ায় বিএনপির দুটি অংশকে সমন্বয় করেই আয়োজন করা হচ্ছে অনুষ্ঠানের। তারেকের এ অনুষ্ঠান ঘিরে মালয়েশিয়া বিএনপির দীর্ঘদিনের বিভক্তিও ঘুচবে বলে আশা করছেন সমর্থকরা।
১১ জুন সন্ধ্যায় কুয়ালালামপুরের পুত্রা ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে (পিডাব্লিউটিসি) একটি অনুষ্ঠান হবে, সব নেতাকর্মী ও প্রবাসী বাংলাদেশীদের সঙ্গে সেখানে দেখা হবে তারেক রহমানের। সেই প্রস্তুতি চলছে বেশ জোরেসোরে। মালয়েশিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে থাকা বিএনপির সমর্থক প্রবাসীরা এদিন জড়ো হবেন পিডব্লিউটিসিতে। তারেক রহমান কি বলবেন, কি ধরনের দিক নির্দেশনা দেবেন, সেই আলোচনা চলছে মালয়েশিয়ার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে।
মালয়েশিয়ায় বিএনপ’র ৭২টি অঙ্গসংগঠন নিজেদের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তারেক রহমানের কাছে মালয়েশিয়া বিএনপির অর্থ ও জনশক্তির শোডাউন দেয়ার এটাই উপযুক্ত সময়। তাই মিটিংয়ে মিটিংয়ে ব্যস্ত এখানকার বিএনপি নেতা আর সমর্থকরা। প্রবাসীদের বাংলা পত্রিকাগুলোও বেশ সরগরম করে প্রকাশ করছে তারেকের খবর।
প্রকাশ করছে বিশেষ সাময়িকী। বিএনপি’ একজন সমর্থক সোহেল রহমান মালয়েশিয়ায় রয়েছেন গত ৭ বছর ধরে। তিনি জানান, দেশে থাকতেই বিএনপি করতাম। এখনো সেখানে পরিবার পরিজন রয়েছে, দেশের রাজনীতি করি, কারণ দেশ নিয়ে চিন্তা করি। তারেক রহমান আগামীতে দেশের ক্ষমতায় আসবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।