শিশুদের নিয়ে পর্নোগ্রাফি তৈরি করে বিদেশে সরবরাহের অভিযোগে শিশুসাহিত্যিক টিপু কিবরিয়া ও তার দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি পুলিশ।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) গতকাল বুধবার ও আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর মুগদা ও খিলগাঁও থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে। সিআইডি’র পুলিশ সুপার (অর্গানাইজড ক্রাইম) আশরাফুল ইসলাম জানান, বিদেশি ক্লায়েন্টদের চাহিদা অনুযায়ী পর্নোছবি বানিয়ে জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, সৌদি আরব ও যুক্তরাজ্যে পাঠাতেন শিশুসাহিত্যিক টিপু কিবরিয়া।
এই অভিযোগ পাওয়ার পর রাজধানীর পৃথক এলাকায় অভিযান চালিয়ে টিপু কিবরিয়া ছাড়াও তার আরও দুই সহযোগীকে পর্নোছবি তৈরির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত বাকি দু’জন হলেন, নুরুল আমিন নুরু ও শাহারুল ইসলাম। তাদের গ্রেফতারের পর বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় সিআইডি’র সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান সিআইডি’র পুলিশ সুপার (অর্গানাইজড ক্রাইম) আশরাফুল ইসলাম।
তিনি জানান, ৩ থেকে ৪ শ’ টাকার লোভ দেখিয়ে পথশিশুদের দিয়ে টিপু দীর্ঘদিন ধরে পর্নোগ্রাফি তৈরি করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন দেশে সরবরাহ করে আসছিলেন। তারা মূলত ছেলে শিশুদের দিয়ে পর্নোগ্রাফি বানাতেন। টিপু কিবরিয়ার আসল নাম টি আই এম ফকরুজ্জমান। তিনি মূলত একজন ফ্রি-ল্যান্সার ফটোগ্রাফার। আর এসবের আড়ালে তিনি পর্নোছবি বানিয়ে ব্যবসা করতেন বলেও জানান আশরাফুল ইসলাম।
তিনি জানান, সম্প্রতি আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের অনুরোধে শিশু পর্নোছবি বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে সিআইডি। এর ধারাবাহিকতায় রাজধানীর খিলগাঁও এলাকার তারাবাগের বাসা থেকে টিপু কিবরিয়াকে আটক করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে মানিকনগরের মুগদা এলাকায় অবস্থিত পর্নোছবি বানানোর স্টুডিওতে অভিযান চালিয়ে আপত্তিকর অবস্থায় নুরুল ইসলামকে আটক করা হয়। এ সময় এক ভিকটিম শিশুকে উদ্ধার করা হয়।
এ সময় বিপুল পরিমাণ পর্নোছবি,কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক, স্টিল, ভিডিও ক্যামেরা, ল্যাপটপ ও ৭০টি লুব্রিকেটিং জেল উদ্ধার করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত ডিআইজি ( অর্গানাইজড ক্রাইম) শাহ আলম জানান, এ পর্নো ছবিগুলো বিক্রি করে ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের মানি এক্সটচঞ্জের মাধ্যমে বিদেশ থেকে টাকা আনতেন টিপু। এক একটি পর্নোছবি মোটা অংকের টাকায় বিক্রি হত বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে মুগদা থানায় ২০১২ সালের পর্নোগ্রাফি আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় গ্রেফতারকৃতরা তিন দিনের রিমান্ডে আছেন। মামলাটি তদন্ত করছে সিআইডি।