DMCA.com Protection Status
title="৭

সাতছড়ির অস্ত্র উদ্ধারঃএর আসল রহস্য কি,ভারতীয় পত্রিকার দৃষ্টিতে

habiganj1 ‘সাতছড়ি অস্ত্র কাণ্ড হাসিনার কূটকৌশল, র্যাবের নাটক?’- এই শিরোনামে আজ একটি সংবাদ ছেপেছে ভারতীয় আসামের রাজধানী গৌহাটি থেকে প্রকাশিত প্রভাবশালী দৈনিক ‘যুগশঙ্খ’। সংবাদটি করা হয়েছে নয়া দিল্লি থেকে।

বাংলাদেশের একটি আলোচিত ঘটনার খবরটি ভারতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার বিষয়টি বেশ দৃষ্টিগ্রাহ্য।

এখানে যুগশঙ্খে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি হুবহু তুলে ধরা হলো।

“বাংলাদেশ সরকার একদিকে চীনের সঙ্গে গভীর সমুদ্র বন্দর স্থাপনে চুক্তি করছে, যা কি না ভারতের কাছে হুমকিস্বরূপ। অন্যদিকে সাতছড়ি অঞ্চলের তথাকথিত অস্ত্র উদ্ধারের কথা বলছে। ওই এলাকায় বিশাল অস্ত্রভাণ্ডার উদ্ধারের নেপথ্যে কার্যত রহস্যের ছায়া। এই অস্ত্রকাণ্ডকে স্পষ্টত বাংলাদেশি নিরাপত্তা বাহিনী র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নের (র্যাব) নাটক অভিহিত করেছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। মূলত দু’টি সুপরিকল্পিত উদ্দেশ্য নিহিত রয়েছে সাতছড়ি কাণ্ডের আড়ালে।

 

প্রথমত, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা তথা সরকারবিরোধী আন্দোলন প্রতিহত করার নামে আতিশয্য চালানোর দরুন র্যাবের কলুষিত ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করা। এবং আরেকটি অভিসন্ধি হল উত্তর-পূর্ব ভারতের জঙ্গিদের প্রতি হাসিনা সরকার কখনো সুর নরম করেনি, মোদি সরকারকে এই কড়া বার্তা দেওয়া। বাংলাদেশ সরকারের এ ধরনের প্রয়াসের পরিষ্কার লক্ষ্য ভারতের নবনির্বাচিত মোদি সরকারের সহানুভূতি লাভ করা।

 

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট উপজেলার নির্বাহী অফিসার এক সংবাদিককে তথাকথিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের একটি লিফলেট প্রচারপত্র দেখিয়েছেন। যা বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। প্রচারপত্রটি অস্ত্র উদ্ধার হওয়া স্থানেই মিলেছে।


একজন বিশিষ্ট প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞের মতে এই লিফলেট বা প্রচারপত্র পাওয়াটা একটি সাজানো বিষয় হতে পারে। র্যাব দাবি করছে, উদ্ধার করা অস্ত্রশস্ত্রগুলি কম করেও ২০ বছর পুরনো। তাহলে কীভাবে কম্পিউটার লিখিত লিফলেট সেখানে মিলবে। আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে মুদ্রিত প্রচারপত্র দু’দশক আগে থাকার কথা নয়। তাই প্রচারপত্রের ব্যাপারটি গোলমেলে।


আসলে পুরো সাতছড়ি অস্ত্র উদ্ধার কাণ্ড নাটক ছাড়া আর কিছুই নয়। যে নাটকের প্রযোজক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং পরিচালক হলেন র্যাবের অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল কর্নেল জিয়াউল হাসান। এঁরা দু’জন ইলিয়াস আলি ও চৌধুরী আলমের নিখোঁজ হওয়া, সৌদি কূটনীতিক খালাফ আলির খুন, সাংবাদিক জুটি সাগর সরওয়ার ও মেহরুন রুনির হত্যাকাণ্ড এবং সাম্প্রতিকতম নারায়ণগঞ্জ গণহত্যার ঘটনায়ও জড়িত ছিলেন। প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জে ১১ জনকে খুন করা হয়েছে। র্যাবের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার পাশাপাশি ভারতের মোদি সরকারকে তোষামোধ করার কৌশল ফেঁদেছেন সিদ্দিক ও হাসান।


ইতিপূর্বে একটি ভারতীয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত এক খবরে দাবি করা হয়েছে, র্যাব ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইংয়ের (র) নির্দেশে কাজ করেছে। লক্ষণীয়, ওই পত্রিকাটি লোকসভা নির্বাচনের সময় নরেন্দ্র মোদি ও বিজেপির বিরোধিতায় সোচ্চার ছিল। তাছাড়া একাংশ সংবাদপত্রও এসব অস্ত্রশস্ত্র আলফার বলে অভিযোগ তোলে। কিন্তু একজন প্রথম সারির রাজনৈতিক বিশ্লেষক এ শামস বলেছেন, ‘আমি ইতিপূর্বে চট্টগ্রাম বন্দরে দশ ট্রাক অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার নিয়ে একটি বিশদ প্রবন্ধ লিখেছি।


শিরোনাম ছিল- দেশপ্রেমীদের কি মৃত্যুদণ্ডের সাজা হবে? সেখানে আমি এই সেই অস্ত্র উদ্ধারের নেপথ্য কারণ তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। সেইসঙ্গে কিছু দেশপ্রেমী সেনা অফিসারকে দোষী সাব্যস্ত করার আড়ালে সরকারের উদ্দেশ্যও বর্ণনা করেছি। সাম্প্রতিক সাতছড়ি অস্ত্র উদ্ধার ঘটনা সম্পূর্ণ নাটক। অন্য কোনও কিছু নয়। সম্ভবত কয়েক বছর আগে উদ্ধার হওয়া দশ ট্রাক অস্ত্রশস্ত্রের মধ্যে এগুলিও ছিল। মানুষকে একই ফাঁদে ফেলে বার বার হেনস্থা করার অপবাদ রয়েছে র্যাবের বিরুদ্ধে।


এখন হাসিনা সরকার সর্বতোভাবে চেষ্টা করছে দশ ট্রাক অস্ত্রকাণ্ডের সঙ্গে সাতছড়ি ঘটনাকে জুড়ে দেওয়ার। শীঘ্রই দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা হাইকোর্টে উঠবে। তাই সরকার বিষয়টিকে ইচ্ছাকৃতভাবে জটিল করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।”

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!