ভারতের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের আসন্ন ঢাকা সফরেই বহু প্রতীক্ষিত সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন ও তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির জট খুলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এ দুটি বিষয়ের মীমাংসার আশ্বাস দিয়ে স্বরাজ তেঁতুলিয়া করিডোর খুলে দিতে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানাবেন বলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। আগামী ২৫ জুন প্রথম বিদেশ সফরে দুই দিনের জন্য ঢাকা আসছেন ভারতের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তবে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারনের ঐকান্তিক দাবী একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারের বিশ্বের বৃহত্তম গনতান্ত্রীক দেশ ভারতের কোন প্রচেষ্টা আছে কিনা তা জানতে সকলে আগ্রহী।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সইয়ের জন্য অত্যন্ত আগ্রহী মোদি সরকার। ‘প্রস্তুতিমূলক কাজ এরইমধ্যে শুরু হয়ে গেছে এবং শিগগিরই আপনারা তার ফল দেখতে পাবেন— বলেন বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা।
বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এরইমধ্যে তিস্তায় পানিপ্রবাহ বেশি রাখতে সিকিম রাজ্য সরকারের সম্মতি আদায় করেছেন এবং এটা নিয়ে এখন বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজি করাতে কাজ করছেন।
তিস্তা চুক্তিতে রাজি হলে পশ্চিমবঙ্গে বিশেষ অর্থনৈতিক প্যাকেজ দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে মোদির। অন্য এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য ভারত বাংলাদেশের কাছে তেঁতুলিয়া করিডোর উন্মুক্ত চাইবে, যাতে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে ভারতের অন্য অংশের যোগাযোগ বাড়ে। এতে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে মানুষের যাতায়াত বৃদ্ধির পাশাপাশি মালামাল আনা-নেয়া সহজ হবে।’
চার কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই করিডোর পেলে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোর দূরত্ব প্রায় ৮৫ কিলোমিটার কমে যাবে। ক্ষমতায় আসার আগে পার্লামেন্টে স্থল সীমান্ত চুক্তি অনুসমর্থনের বিরোধিতা করে বিজেপি, যদিও গত ডিসেম্বরে এ সংক্রান্ত সংবিধান সংশোধনের একটি বিল রাজ্যসভায় তোলে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার।
তবে নরেন্দ্র মোদি এখন বলছেন, এ চুক্তি বাস্তবায়নে বাংলাদেশের কাছে ভারত ‘প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’ এবং তার প্রতি সম্মান জানাতে হবে। এক্ষেত্রে আসামে যাতে আর কোনো বিরোধিতার মুখে পড়তে না হয় সেজন্য উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য কিছু সুবিধা আদায় করতে চাইছেন তিনি। স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন হলে দুই দেশের মধ্যে ছিটমহল বিনিময়ের পাশাপাশি সীমান্ত ব্যবস্থাপনা আরও সহজতর হবে।