দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ প্রতিবেদনঃ নারায়নগন্জের সেভেন মার্ডার কেসের প্রধান আসামী নূর হোসেন কলকাতায় আটক হলেও তাকে সহসাই দেশে ফিরিয়ে না আনার লক্ষণগুলো স্পষ্ট হয়ে উঠছে ধীরে ধীরে।
অনুপ্রবেশ এবং অবৈধভাবে অস্ত্র রাখার অভিযোগে নূর হোসেনকে রিমান্ডে নেওয়া হলেও ভারতের পুলিশ তাকে নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের সম্পৃক্ততার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, নূর হোসেন জিজ্ঞাসাবাদে সাত খুনের সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। কলকাতার তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ইন্টারপোলের রেড নোটিসের কারণে অবৈধ অনুপ্রবেশ ছাড়াও রোমহর্ষক ওই সাত হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে নূর হোসেনকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
কিন্তু কয়েকটি সুনির্দিষ্ট কারণে, নূর হোসেনকে দেশে ফিরিয়ে না এনে কলকাতার পুলিশের পক্ষ থেকেই সাত খুনের বিষয়ে টুকটাক জিজ্ঞাসাবাদেই প্রসন্ন থাকবে বাংলাদেশ সরকার। এই পরিস্থিতিতে পর্যবেক্ষকরা ধারণা করছেন, সহসাই নূর হোসেনকে দেশে ফিরিয়ে নাও আনা হতে পারে। এছাড়া, কয়েকটি নির্দিষ্ট কারণে নূর হোসেন নিজেও কলকাতায় আটক থাকতেই অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন। আর, এইভাবেই জনচক্ষুর আড়ালে চলে যেতে পারে চাঞ্চল্যকর সাত খুনের মামলাটি।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই মুহূর্তে দেশে ফিরিয়ে আনলে নূর হোসেন যে কোন পক্ষের হাতে খুন হতে পারেন। এই রকম একটি পরিস্থিতি এড়ানর জন্যও নূর হোসেন নিজে ও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ, তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে চাইবে না।
নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের সাথে একজন প্রভাবশালী সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীর আত্মীয়ের জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে এসেছে। নূর হোসেন নিজের স্বীকারোক্তিতেও তা জানিয়েছেন। সাত খুনের সাথে এই রাজনীতিকদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি নিয়ে দেশে তোলপাড় হলেও রাজনীতিকরা তা কখনোই স্বীকার করেননি। এমনকি এই অংশটি নিজেদের বাঁচাতে নূর হোসেনকে দেশ ত্যাগে সহযোগিতাও করেছে। ফলে, সাত খুনের সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে অভিযুক্ত ক্ষমতাসীন দলের অন্যান্য উর্ধ্বতন ব্যক্তিরাও চাইছে নূর হোসেনকে দেশে ফিরিয়ে না আনতে। কেননা, নূর হোসেনকে দেশে ফিরিয়ে আনলে এই অংশটির রাজনীতিক ক্যারিয়ার ও পরিবার হুমকির মুখে পড়বে।
এছাড়া, নূর হোসেন নিজেও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। নূর হোসেনের পরিবার ও অনুসারীদের আকাঙ্ক্ষা আছে, এই বিপদ থেকে উদ্ধার করতে আওয়ামী লীগ সহযোগিতার হাত বাড়াবে। নূর হোসেনকে দেশে ফিরিয়ে আনা না হলে,নূর হোসেনের অনুসারীদের এই অংশটিকেও সন্তুষ্ট রাখা যাবে।
এই পরিস্থিতিতে, নূর হোসেনকে দেশে ফিরিয়ে না আনলে একদিকে সকল পক্ষকে সন্তুষ্ট ও নিরাপদ রাখার সুযোগ পাবে আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে, ইন্টারপোলের রেড এলার্টের আওতায় টুকটাক জিজ্ঞাসাবাদের আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়াও জিইয়ে রাখা যাবে।অবস্থাদৃষ্ঠে নূর হোসেনকে বিভিন্ন অজুহাতে দেশে না অভিপ্রায় রয়েছে আওয়াম সরকারের,আর আনলেও আরও কিছুদিন পর যখন পরিস্থিতি অনেকটা স্থিমিপ হয়ে আসবে তখন।
এসকল কারণেই পর্যবেক্ষকরা ধারণা করছেন, নূর হোসেনকে দেশে ফিরিয়ে না এনে কলকাতায় রেখে সাত খুনের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আর, এতেই সন্তুষ্ট থাকছে আওয়ামী লীগ থেকে শুরু করে নূর হোসেন,শামীম ওসমান সবাই।