দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ প্রতিবেদনঃ পেলে কেন বিশ্বসেরা? এই প্রশ্নটির উত্তর খুঁজতে গিয়ে অবিশ্বাস্য কিছু খুঁজে পেয়েছেন গার্ডিয়ানের সাংবাদিক জনাথন লিউ। বলা হয়, পেলে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ফুটবল খেলোয়াড়। কিন্তু পেলের সম্পর্কে যাই বলা হয়, তাই অতিরঞ্জিত। তিনি আসলে নিজের ঢোল পিটানোর সেরা কুশলী। এছাড়া পেলের কপালেও শিকে ছিঁড়েছে প্রায়ই।
১৯৬২ সাল। চিলিতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে যোগ দিতে ব্রাজিলের ফুটবল টিমকে নিয়ে আন্দিজ পর্বতমালা অতিক্রম করছিল একটি বিমান।
হঠাৎ করেই বিমানটিতে সমস্যা দেখা দেয়। সবাই মিলে মৃত্যুভয়ে আর্তনাদ শুরু করে। কিন্তু একজন খেলোয়াড়ই চুপচাপ বসেছিলে। এই খেলোয়াড়টির শান্তভাব দেখে রীতিমত বিরক্তই হচ্ছিল বাকী সবাই। কিন্তু তিনি নির্বিকারভাবেই বসেছিলেন। আর, সতীর্থদের বলছিলেন, মৃত্যু যদি হবেই তাহলে কিছু করার নাই। এত উদ্বিগ্ন হয়ে লাভ কি? এই খেলোয়াড়টি আর কেউ নন। ব্রাজিলের পেলে।
এ বিষয়ে পেলে লিখেছিলেন, যদি মৃত্যুই লেখা থাকে, তাহলে তাকে গ্রহণ করা ছাড়া আর কিছুই করার নাই আমাদের। ঈশ্বরের ওপর এই পরিমাণ অগাধ বিশ্বাসই পেলেকে চিনতে সহায়তা করে। পেলে কে নিয়ে যত কথা বলা হয়, তাতে মূলতঃ তার শৈশবকালের দারিদ্র নিয়েই কথা হয়। কিন্তু পেলের ধর্মবিশ্বাস নিয়ে খুব কমই আলোচনা হয়েছে।
পেলের বয়স যখন নয়, তখন ব্রাজিল ১৯৫০ সালের বিশ্বকাপের ফাইনালে উরুগুয়ের কাছে হেরে যায়। ওই পরাজয় সমস্ত ব্রাজিলবাসীর মনভেঙ্গে দেয়। পেলে তখন তার বাবার রুমে যান। তার বাবার রুম পুরোটাই যীশুর ছবিতে সাজান ছিল। পেলে যীশুর ছবির দিকে তাকিয়ে বলতে থাকেন, আমরা কেন উরুগুয়ের কাছে হেরে গেলাম? আমাদেরকে কেন শাস্তি দেওয়া হচ্ছে?
তরুণ পেলে কাঁদতেই থাকলেন আর যীশুর সাথে কথা বলতেই থাকলেন। তারপর পেলে নিজের বাবার কাছে ফিরে গিয়ে প্রতিজ্ঞা করলেন, বাবা, আমি তোমাকে একটা বিশ্বকাপ এনে দেব।
পেলে শৈশব থেকেই ঈশ্বরকে সর্বশক্তিমান হিসেবে মেনে এসেছেন। আর বিশ্ব এখন পেলেকে সর্বশক্তিমান হিসেবে মেনে চলে।
কয়েক দশক ধরে ফুটবলে পেলের শ্রেষ্ঠত্বের দাবি ধ্রুব সত্য হিসেবে মেনে আসা হয়েছে। যদিও ম্যারাডোনা, মেসি ও রোনালদোর মত খেলোয়াড়রা বিশ্বসেরার আসনটি দখল করার জন্য দাবিদার হয়ে উঠেছেন। তবুও পেলেই একমাত্র যার সাথে তুলনা করে অন্যদের শ্রেষ্ঠত্বের সার্টিফিকেট দেওয়া হয়।
সমসাময়িক খেলোয়াড় থেকে শুরু করে পেলে নিজেই নিজেকে সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে আখ্যা দেন। ২০০২ সালে তিনি মন্তব্য করেছিলেন, ফুটবলে পেলে একদিকে সারাবিশ্ব আরেকদিকে। কিন্তু এই মন্তব্যটি একটি গোঁড়ামি ও মুখস্ত বুলি ছাড়া আর কিছুই না। এর উদাহরণ হচ্ছে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। তিনি বলেছিলেন, ফুটবলে সবচেয়ে সেরা খেলোয়াড় হচ্ছে পেলে। এবং মানব ইতিহাসে একজনই পেলে আছে। কিন্তু রোনালদো নিজে জন্ম নিয়েছিলে ১৯৮৫ সালে। তার জন্মেরও আট বছর আগে পেলে খেলা ছেড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু পেলেকে খেলতে না দেখেই একজনকে কিভাবে ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়ের আখ্যা দেওয়া যায়?
নিঃসন্দেহে পেলের পক্ষে প্রচুর প্রমাণ আছে। তার করা ১২৮৩টি গোলের হাতে গোনা কয়েকটির ভিডিও পাওয়া যায়। ওই যতসামান্য ভিডিও থেকেও পেলের চমৎকারিত্য সম্পর্কে ধারণা করা যায়। দ্রুতগতি, কঠিন ফুটবলকে সহজ বানিয়ে ফেলার দক্ষতা, শক্তি ও বুদ্ধি সবই খুজে পাওয়া যায় পেলের মধ্যে। এর থেকেই বোঝা যায়, তিনি সাধারণ কোন ফুটবলার ছিলেন না।
এর বাইরে রয়েছে পেলের করা রেকর্ড। তার সময়ে তিনবার বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয় ব্রাজিল। এছাড়া দুইবার নিজদেশের জন্য ইন্টার কন্টিনেন্টাল কাপও জিতে নিয়ে আসেন তিনি। কিন্তু এতশত অর্জনের মধ্যেও ছিদ্র ঠিকই পাওয়া যায়। ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল জগতে সেরা গোল দাতাদের একজন ইরানের আলি ডাএই। তিনি মোট ১০৯টি গোল দিয়েছিলেন। কিন্তু আলি ডাএই বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় নন। সেরা খেলোয়াড় হলেন পেলে। কিন্তু পেলের শতাধিক গোল আসলে খুবই দুর্বল দলের বিরুদ্ধে করা। কখনও কখনও প্রীতি ম্যাচে করা হয় পেলের গোলগুলো। নিঃসন্দেহে পেলে অনেকভালো দলের বিরুদ্ধে গোল করেছেন, কিন্তু তিনি অনেক দুর্বল দলের বিরুদ্ধেও গোল করেছেন।
তার সন্তোষজনক বিশ্বকাপ রেকর্ড নিয়েও আছে অতিকথন। তিনি আসলে ১৯৬২ সালের বিশ্বকাপের সময় আহত থাকায় খেলতে পারেননি। এই বিবেচনায় পেলে তিনটি নয়, আসলে দুটি বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন। কোন বিশ্বকাপেই তিনি সর্বসেরা খেলোয়াড় ছিলেন না। ১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপে পেলে নয়, ডিডি টুর্নামেন্ট সেরা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। আবার ১৯৭০ এর বিশ্বকাপ ঠিক পেলের জন্য নয় পুরো দলের নৈপুণ্যের কারণেই ব্রাজিল চ্যাম্পিয়ন হয়। এছাড়া ওসাতো ও জাইয়ারজিনহোর মতো খেলোয়াড়দের ছিল বিশেষ অবদান।
পেলের কৃতিত্ব নিয়ে এই অতিকথন ব্রাজিলের মানুষদের অজানা নয়। যে কোন একজন ব্রাজিলের নাগরিককে যদি জিজ্ঞ্যেস করা হয় যে, বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়কে? আপনি হয়ত পেলের নাম তাদের মুখে নাও শুনতে পারেন। আপনি হয়ত হেলেনো, গারিনচা, জাইয়ারজিনহো কিংবা জিজিনহোর নাম শুনবেন।
ফুটবল খেলা ছেড়ে দেওয়ার পরও পেলে খুব বেশি সম্মানিত ছিলেন না। বরং নানান সময়ে ঘৃণিতই হতে হয়েছে তাকে। ব্রাজিলের কোচ স্কলারি ২০০২ সালে বলেছিলেন, আমার মনে হয় পেলে ফুটবল সম্পর্কে কিছুই জানে না। তিনি কোচ হিসেবে কিছুই করতে পারেননি। বরং তিনি যা যা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করেছেন তার প্রায় সবই ভুল। তিনি ফুটবলের আদর্শ কিন্তু তার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের কোন মূল্য নাই।
ফুটবল নামের একটি বইয়ে ব্রাজিলিয়ান লেখক এলেক্স বেলোস বলেন, অনেকেই মনে করেন, পেলে ব্রাজিলের চাইতেও বিশ্বের মানুষের কাছে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরো বলেন, আন্তর্জাতিক ফুটবলের কথা বললেই পেলেকে দিয়ে শুরু করতে হয়।কারণ তাকে চেনা খুবই সহজ। একজন গরীব মানুষ যিনি নিজের পরিশ্রম আর ভালবাসা দিয়ে বিশ্বসেরা হয়েছেন। কিন্তু ব্রাজিলের মানুষ গারিনচাকে যতদূর ভালবাসে পেলেকে ততদূর মনেও করে না। আসলে পেলের ফুটবল কৃতিত্ব হচ্ছে দুইবারের বিশ্বকাপ জেতা।
১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপে তিনি আসলে নিজের জগতটা তৈরী করে নিয়েছিলেন। সে সময়কার সেমিফাইনালে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে তিনি একটা হ্যাট্রিক করেন। আর ফাইনালে সুইডেনের বিরুদ্ধে দুইটি গোল করেন। আর ১৯৭০ সাল আসতে আসতে তিনি বিশ্বসেরা খেলোয়াড়ে পরিণত হন। সে সময় কোকাকোলা নামটির পরই পেলের নাম পুরো ইউরোপ জুড়ে শুনা যেত। এই পেলেভক্তির যতটানা খেলার কারণে তারচেয়েও বেশি ছিল প্রচার-প্রচারণার কারণে।
১৯৫৮ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়ে সংবাদগুলো যাচাই করলে সহজেই পেলের অস্তিত্ব টের পাওয়া যায়। কিন্তু পেলের চেয়েও সেরা খেলোয়াড় ছিলেন গারিনচা। এর পরপরই ১৭ বছরের এক গরীব তরুণের কথা বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ে। তাকে নিয়ে বই, সিনেমা আর সংবাদপত্রে প্রতিবেদন ছাপা হতে থাকে।
পেলের ক্লাব, স্যান্টস ব্যাপারটির গুরুত্ব টের পেয়েছিল। একারণেই, পেলের কাধে চড়ে নিজেদের নাম ডাক বাড়ানর মিশনে নেমে পড়ে স্যান্টস। তখন পেলেকে নিয়ে অনেক ট্যুরের আয়োজন শুরু করে স্যান্টস। এইভাবে ক্লাবের পক্ষ থেকে ট্যুরে গিয়ে ১৯৫৯ সালে পেলে কমপক্ষে ১০০টি ম্যাচ খেলেন। তখন তিনি ইউরোপে সফরে গিয়ে তিন সপ্তাহে ১৫টি ম্যাচ খেলেছিলেন। ১৯৬০ সালের দিকে সফরে গিয়ে গিয়ে সপ্তাহে কমপক্ষে তিনটি ম্যাচ খেলতেন। এই ট্যুরগুলোর কারণেই পেলের গোলের রেকর্ড বেরে যায়। অপরদিকে চারদিকে তার সুনাম ছড়িয়ে পড়তে থাকে।
পেলের কৃতিত্বে ১৯৫৮ সালে ব্রাজিলের বিশ্বকাপ জয়, পুরো জাতিটিকেই বদলে দিয়েছে। ব্রাজিলের এই বদলে যাওয়াটা টের পেয়েছিলেন পেলে।
পেলের বীরত্বগাথা শেষ পর্যন্ত গৃহীত হয় যখন মারাকানায় একটি ফুটবল ম্যাচ খেলতে আসে ইংল্যান্ড দল। ব্রাজিল ইংল্যান্ডকে ৫-১ গোলে হারিয়েছে। তখনকার খ্যাতিমান দ্য টাইমস পত্রিকার রিপোর্ট অনুসারে, বেঁচে থাকলে পেলের খেলা দেখুন।
পেলের জনপ্রিয়তা বাড়ার পেছনে টেলিভিশনের আবিষ্কারও জরুরী। ১৯৭০ সালের বিশ্বকাপটিই প্রথমবারের মতো রঙ্গিন টেলিভিশনে দেখান হয়। পেলে যদি ১৯৪০ সালে জন্ম না নিয়ে ১৯২০ সালে জন্ম নিতেন তাহলে তার ভাগ্য হতো হেলেনো ডি ফ্রেইটাসের মতো। হেলেনো ডি ফ্রেইটাসের খেলার দৃশ্য খুব কম মানুষই দেখেছে। এবং দুঃখজনক হলেও সত্যি মানুষ তাকে ভুলে গেছে।
পেলে যে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় তা প্রথম দাবি করেছিলেন পেলে নিজেই। ১৯৬৩ সালে তিনি নিজেকে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় বলে দিবে করতে শুরু করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি মন্তব্য করেন, আমার মনে হয়েছিলে, বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় এখনও জন্ম নেয়নি। তখন থেকেই পেলে নিজেকে সারাবিশ্বের কাছে বিক্রি করতে শুরু করেন।
১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপের পরই পেলের কাছে ইউরোপের ক্লাবগুলো থেকে নানান প্রস্তাবনা আসতে শুরু করে। কিন্তু তিনি সব প্রস্তাবই বাতিল করতে থাকেন। কেবল নিজের ক্লাব স্যান্টসের সাথে একটি চুক্তি করেছিলেন। চুক্তি অনুযায়ী, যে কোন জায়গায় গিয়ে প্রদর্শনী ম্যাচ খেললে, স্যান্টস পেলেকে অর্ধেক সম্মানি দেবে। এ সময় ব্যাপক আর্থিক কষ্টে পড়ে যান পেলে। সমস্যা সমাধানের জন্য তিই পোমা কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হন। চুক্তি অনুযায়ী, পেলে কোম্পানিটির ব্রান্ডের জুতা পড়বে, বিনিময়ে তিনি এক লাখ ২০ হাজার ডলার পাবেন। ১৯৭০ সালের বিশ্বকাপের খেলা চলাকালে অদ্ভূত এক দৃশ্য দেখতে পেল দর্শকরা। সে সময় পেলের জুতার ফিতা বারবার খুলে যেত এবং তিনি তা লাগাতেন। এইভাবে পোমা জুতা কোম্পানির প্রচারের জন্য প্রাণপন চেষ্টা করেছিলেন পেলে।
এরপর থেকে পেলে যৌন সমস্যার সমাধানের পণ্য থেকে শুরু করে ঘড়ি সমস্ত কিছুর বিজ্ঞাপনের জন্যই নিজেকে কাজে লাগিয়েছেন। এইভাবে অর্থ উপার্জনের কাজে পেলে এখন সমানতালেই সক্রিয়। হিসাব মতে, ২০১৪ সালে তিনি কমপক্ষে ২৫ মিলিয়ন ডলার আয় করবেন। এইভাবে পেলে যেমন কোম্পানিগুলোর ব্যবসায় প্রসারে কাজ করেছেন। তেমনি কোম্পানিগুলো পেলেকে ফুটবল ঈশ্বর বানাতে অযাচিত প্রচার চালিয়েছে। এতে করে দু’পক্ষই সমানে সমানে উপকৃত হয়েছে।
পেলের এই প্রচার ‘লিপ্সা’ এত বেশি যে কেবল ফুটবলে কৃতিত্ব জয় করেই ক্ষান্ত হননি তিনি। সমস্ত কিছুই জয় করতে চেয়েছেন পেলে। নিজের জীবনীগ্রন্থে পেলে লিখেন, ‘আমি কে? কেবলই একজন খেলোয়াড়? না, আমাকে এর চেয়েও বেশি কিছু হতে হয়েছে’।
তিনি নিজেকে একজন বর্ণবাদ বিরোধী, শোষণবিরোধী মানুষ হিসেবে প্রচার করেছেন। প্রচারের পক্ষে প্রয়োজনীয় রসদও জুগিয়েছেন তিনি। ১৯৬৬ সালে তিনি একজন শ্বেতাঙ্গ নারীকে বিয়ে করেন। এই সকল মহৎ কাজের কোনটিই আড়ালে থেকে করেননি পেলে। সবকিছুকে নিয়েই নিজের ঢোল পেটান পেলের স্বভাব। এক্ষেত্রেও তিনি তাই করেছেন।
তিনি নিজের জীবনীগ্রন্থে লিখেছেন, আমেরিকায় এলভিস প্রেসলি কিংবা মার্টিন লুথার কিংয়ের নামে মিউজিয়াম আছে। কিন্তু ব্রাজিলে আমাকে নিয়ে কোন মিউজিয়াম নাই’। অবশ্য শেষপর্যন্ত ২০১২ সালে পেলের নামে একটা মিউজিয়াম উদ্বোধন করে, তারই ক্লাব স্যান্টোস। এইভাবেই পেলে নিজেকে এলভিস প্রেসলি কিংবা মার্টিন লুথার কিংয়ের পর্যায়ে তুলনা করতেন। এবং সফলতাও পেয়েছেন।