DMCA.com Protection Status
title="৭

রাজধানীতে দায়সারাভাবে সাত থানা নির্বাচন অফিসের কাজ শুরুঃনয় ছয়ের অভিযোগ

download (7)রাজধানীতে নতুন ৭টি থানা নির্বাচন অফিসের কার্যক্রমUntitlECed-2 copy অব্যবস্থাপনা ও দায়সারাভাবে শুরু করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

ঢাকা জোনে সাত অফিস স্থাপনে বাজার মূল্যের চেয়ে বেশি দামে ফ্ল্যাট কেনার অভিযোগ উঠেছে। এসব অফিস ভবন বুঝে পেলেও চাহিদা অনুযায়ী অফিসের সরঞ্জামাদি সাজানো হয়নি বলেও সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন।

এ অবস্থায় তাড়াহুড়ো করে নতুন নির্বাচন অফিসের কার্যক্রম শুরু করা হচ্ছে। অন্যদিকে থানা নির্বাচন অফিসের জন্য মিরপুর, পল্লবী, তেজগাঁও ও গুলশান এলাকার চারটি ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন করা হলেও ধানমণ্ডি, মোহাম্মদপুর ও ক্যান্টনমেন্ট এলাকার তিনটি ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন হয়নি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মিরপুর অফিসের ফ্ল্যাট এক হাজার ৯০০ বর্গফুটের। এর মূল্য পরিশোধ করা হয়েছে ২ কোটি ৫৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

পল্লবী অফিসটির স্পেস এক হাজার ৭১৯ বর্গফুটের। এর মূল্য ২ কোটি ৩২ লাখ সাড়ে ৬ হাজার টাকা।

ফার্মগেটের কনকর্ড ভবনে পুরনো একটি কোচিং সেন্টার কিনে তেজগাঁও অফিস ভবন করা হয়েছে। এই ফ্ল্যাটটি এক হাজার ৪২৬ বর্গফুটের। এটার মূল্য ২ কোটি ১৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা। গত এক বছরে এখানে অফিস না করেই ৯৫ হাজার টাকা সার্ভিস চার্জ গুনতে হয়েছে ইসিকে। এই অফিসেও নানা অসুবিধার কথা জানিয়ে প্রকল্পে চিঠি দেয়। পুরনো ভবন হওয়ায় অফিস হিসেবে ব্যবহারের ক্ষেত্রে নানা অসুবিধা ভোগ করতে হবে সংশ্লিষ্টদের।

এদিকে গুলশান অফিসে সব চেয়ে সমস্যা চিহ্নিত হয়েছে। ভবনটির ৭ তলায় অফিস স্থাপন করা হলেও এখনো লিফট বসানো হয়নি। অফিসারের কক্ষে ও সার্ভার রুমে ফিক্সড গ্লাস বসানোর কারণে বাতাস বের হওয়ার সুযোগ নেই। বিদ্যুত্ অচল হলে অফিস চালানো কষ্টসাধ্য হবে, সার্ভারের ভিতরে কাজ সম্পন্ন হলেও বাইরে প্লাস্টারসহ অন্য কাজ অসম্পূর্ণ। প্রকল্প থেকে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেও এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। এই ফ্লাটটি এক হাজার ৩৩০ বর্গফুটের। এর মূল্য ২ কোটি ৪৬ লাখ ৫ হাজার টাকা।

ধানমণ্ডি, ক্যান্টনমেন্ট ও মোহাম্মদপুর থানা অফিসের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়নি। এসব ফ্ল্যাটের দামও জানা যায়নি।

তবে ক্যান্টনমেন্টের ফ্ল্যাটটি রাজধানীর কচুক্ষেতে রূপায়ণ প্রাইমের তত্ত্বাবধানে এই ভবনটির নির্মাণ কাজ চলছে। ইসির জন্য কেনা ফ্ল্যাটটির আয়তন এক হাজার ৫৫৭ বর্গফুটের। ধানমন্ডির ৭ নং রোডের ২ নম্বর বাড়ির তৃতীয় তলায় এক হাজার ৫ বর্গফুটের ফ্ল্যাটের কাজ এখনো শেষ হয়নি।

লিফট, পর্দা, লাইট ও ফ্যানসহ অনেক কিছুর কাজ শেষ না করেই দায়সারাভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে নির্বাচন অফিসের জন্য এসব ভবন। এর জন্য ইসির পক্ষ থেকে বারবার তাগিদ দেয়ার পরও কোন ফল হয়নি বলে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অন্যদিকে রাজধানীর ৭টি এলাকায় যে নতুন কার্যালয় স্থাপন হয়েছে বাইরে থেকে তা বোঝার উপায় নেই।

বাইরে কোনো লোকেশন নেই, কোনো সাইনবোর্ড টানানো হয়নি। ফলে এসব অফিস খুঁজে পেতে গলদঘর্ম হতে হয়। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, মিরপুর অফিস থেকে থানা নির্বাচন অফিসারের কক্ষ বড় করা, স্টোর রুমের গ্লাসের স্লাইডে গ্রিল বসানো, গ্লাস দিয়ে পানি প্রবেশ বন্ধ এবং প্রধান ফটকের দরজার পাল্লা হালকা উল্লেখ করা হয়।

প্রকল্প থেকে দায়সারা জবাবে বলা হয়েছে, বর্তমান অবস্থায় অফিসারের রুম বড় করা সম্ভব নয়, নিরাপত্তার বিষয়টি গণপূর্তের সঙ্গে পরামর্শ করে করণীয় জানানো হবে, গ্লাস দিয়ে পানি প্রবেশ বন্ধে পদক্ষেপ নেয়া হবে এবং দরজার সাইজ স্ট্যান্ডার্ড মাপের। তবে মিরপুর অফিসের কেউ মুখ খুলতে রাজি হননি। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবু হাফিজ বলেন, ঢাকা জোনে ৭টি অফিস কেনা হয়েছে সার্ভার স্টেশনের কার্যক্রমকে সম্প্রসারণ করার জন্য। তবে যে মূল্যে ফ্ল্যাট কেনা হয়েছে তার দাললিক প্রমাণ রয়েছে বিধায় অনিয়ম হয়েছে বলা সমীচীন হবে না। সব কিছু নিয়ম মেনেই করা হয়েছে দাবি করেন সাবেক আমলা এই নির্বাচন কমিশনার।

অফিসের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে সিএসএসইডি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ব্রি. জেনারেল কে এম সালজার হোসেন গত বৃহস্পতিবার  বলেন, কমিশনের অনুমতি ছাড়া আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না, করাও সমীচীন হবে না। স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করেছি মন্তব্য করে তিনি বলেন, ফ্ল্যাট কেনায় কোনো দুর্নীতি করিনি।

এজন্য একই প্রকল্পে চার বছর সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছি। ইসির কর্মকর্তারা জানান, গত ১৪ মে গণপূর্তের কাজ থেকে রাজধানীর ৭টি থানা সার্ভার স্টেশন অফিস বুঝে নেয় ইসি। তখনও অফিস হিসেবে ব্যবহারের অনুপযোগী ছিল এসব ফ্ল্যাট।

এর বিপরীতে থানা নির্বাচন অফিসের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় কাজ সম্পাদনের জন্য একটি চাহিদাপত্র দেয় সিএসএসইডি প্রকল্পে। অভিযোগ পাওয়া গেছে, সাতটি ফ্ল্যাট গড়ে দেড় হাজার স্কয়ার ফুট হলেও প্রত্যেক ফ্ল্যাটের জন্য দাম পড়েছে আড়াই কোটি টাকা। এতে অতিরিক্ত ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা বেশি লেগেছে বলে সংশ্লিষ্টরা দাবি করেছেন। 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!