যদি হঠাৎ করে জানতে পারেন ফেসবুক আপনার আবেগ নিয়ে খেলছে তাহলে আপনার আপনার অনুভূতিটা কেমন হবে? নিশ্চয় রাগ করবেন কিংবা ফেববুক এমন কাজ কেন করবে এই প্রশ্নটিও করতে পারেন। কিন্তু ২০১২ সালের দিকে এমনটাই করেছে সামাজিক যোগাযোগের সবচেয়ে জনপ্রিয় এ মাধ্যমটি। প্রায় সাত লাখ ব্যবহারকারীর নিউজ ফিডে ইচ্ছামত পরিবর্তন এনেছিল তারা। ফেসবুকের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে গবেষণার অজুহাত দেয়া হলেও অনেকের মতেই এটা ছিল ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন।
তবে গোপনীয়তার অভিযোগটা শেষ পর্যন্ত ধোপে টিকবে না। কারণ, ফেসবুকে নিবন্ধন করার সময় ব্যবহারকারীর তথ্য বিভিন্ন ধরনের কাজে ব্যবহার করার অনুমতি নিয়ে রেখেছে ফেসবুক। ‘আবেগ সংক্রমণ প্রবণতা’ নামের ওই গবেষণাটি করার জন্য ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ২০১২ সালে এক সপ্তাহজুড়ে ৭ লাখ ব্যবহারকারীর নিউজ ফিড এডিট করেছিল। কারো ফিড থেকে সব ইতিবাচক সংবাদ আবার কারো ফিড থেকে সব নেতিবাচক সংবাদ সরিয়ে ফেলা হয়েছিল।
এই গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের অনুভূতিগুলো সংক্রমণাত্মক। অর্থাৎ যদি নিউজ ফিডে মানুষ কষ্টের কথা বেশি খেয়াল করে তাহলে সেও দুঃখজনক অনুভূতিই ব্যক্ত করে। আবার যদি নিউজ ফিডের মধ্যে আনন্দের স্ট্যাটাসের আধিক্য থাকে তাহলে ব্যবহারকারী নিজেও আনন্দ অনুভূতি ব্যক্ত করতে পছন্দ করে।
মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও তথ্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ক্রিস্টিয়ান স্যান্ডভিগ বলেন, ‘ফেসবুক যেভাবে গবেষণাটি করেছে সেটা নৈতিকভাবে সঠিক ছিল না।’ তিনি আরো বলেন, ‘মানুষ কখনোই চাইবে না ফেসবুকে শেয়ার করা তার ব্যক্তিগত বিষয়গুলো নিয়ে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ গবেষণা করুক। কিন্তু ফেসবুক এ কাজটা করেছে।’
তবে ফেসবুকের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ব্যবহারকারীদেরকে অতিরিক্ত সেবা দিতেই তারা এ কাজটি করেছে। ফেসবুকের এক মুখপাত্র বলেন, ‘২০১২ সালে মাত্র এক সপ্তাহের জন্য এ গবেষণাটি করা হয়েছিল। ওই গবেষণার জন্য নির্দিষ্ট কোনো ব্যবহারকারীর তথ্য ব্যবহার করা হয়নি।’
ফেসবুকের পক্ষ থেকে আরো জানানো হয়, তারা ব্যবহারকারীকে এমন সব কন্টেন্ট দিতে চান যেগুলো তার সঙ্গে সম্পর্কিত। এজন্য তার বন্ধু, পছন্দ করা পেজসহ অন্যান্য বিষয়গুলো গবেষণা করা হয়েছে যাতে তার পছন্দ অনুযায়ী সেবা দেয়া যায়।