আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাবেক রাষ্ট্রপতি ও তার বিশেষ দূত এইচএম এরশাদের উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘উনার ভাবি (খালেদা জিয়া) যাকে উনি বাড়ি-গাড়ি দিয়েছিলেন, সেই ভাবি উনাকেসহ জাতীয় পার্টির সবাইকে জেলে পুরলেন। এতো কবিতা লিখলেন, ভাবির জন্য একটা কবিতা লিখে মন জয় করতে পারেননি?’
বৃহস্পতিবার দশম সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে শেখ হাসিনা এ রসিকতা করেন। এসময় এরশাদ সংসদে তার নির্ধারিত আসনেই বসাছিলেন।
জিয়াউর রহমান ও এইচএম এরশাদের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা সব সময় চাইতাম গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা বজায় থাকুক। কিন্তু অস্ত্র, টাকা, মাদক ও ঋণখেলাপি সৃষ্টি করেছিল সেনা শাসকেরা। জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে পাকাপোক্ত করতে ধনিক শ্রেণী তৈরি করেছিলেন। ১৯৭৫ থেকে ১৯৮১ পর্যন্ত ১৯ বার ক্যু হয়েছিল। প্রতিবারই শত শত সেনাসদস্য হত্যা করা হয়েছিল। একবার বিমান বাহিনীরই ৫৬২ জনকে হত্যা করা হয়েছিল।’
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে খালেদা জিয়ার সাক্ষাৎকার সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তিনি বিদেশি পত্রিকায় বক্তব্য দেন। কিন্তু নিজের চেহারা দেখেন না। তিনি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, নাকি নিজে লিখেছেন, জানি না। তবে ছাপা হয়েছে সাক্ষাৎকার আকারে। তিনি বলেছেন- আওয়ামী লীগ নাকি কিছু করেনি। উনিই নাকি সবকিছু করেছেন। কিন্তু উনি কী করেছেন, তা তো দেশের মানুষ জানে। সংখ্যালঘুদের জন্য তিনি মায়াকান্না করছেন। হত্যা, খুন আর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে দোষ চাপিয়েছেন আওয়ামী লীগের ওপর।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাই। দক্ষিণ এশিয়ার সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়াই আমাদের পররাষ্ট্রনীতি। ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা সংক্রান্ত মামলার রায় চলতি সপ্তাহে দেয়া হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়া যেভাবে ক্ষমতা দখল করেছিলেন, ঠিক একইভাবে ক্ষমতা দখল করেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। বঙ্গভবনে গিয়ে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি আবদুস সাত্তারকে বললাম, আপনি কারও প্রার্থী হবেন না। জনগণের প্রার্থী হোন। আপনি পলাশী প্রান্তর থেকে শিক্ষা নেন। মীরজাফর হবেন না। তিন মাসও টিকতে পারবেন না। কিন্তু এরশাদ সাহেব ঘোষণা দিলেন, সাত্তার উনার প্রার্থী। সেনাপ্রধান হয়ে তিনি এভাবে ঘোষণা দিতে পারেন কি না, সেটা প্রশ্ন। তারপর খালেদা জিয়া সাত্তার সাহেবের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিলেন। এরশাদ
সাহেবের হয়তো মনে আছে, যা হওয়ার তাই হলো। তখন নির্বাচন কমিশনের হাত-পা বাঁধা ছিল। সাত্তার সাহেবকে সরিয়ে আহসান উল্লাহ সাহেবকে আনা হলো। সামরিক শাসন জারি হলো। আমাদের গ্রেপ্তার করা হলো। অনেক রক্ত নিয়ে ১৯৮৬ সালে নির্বাচন হলো। নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে উনাকে (এরশাদ) পদত্যাগ করতে হতো না।’