সীমান্ত চুক্তি ও ভিসা ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে কোন আলোচনাই করেননি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। বুধবার দিল্লিতে আসামের বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা জানিয়েছেন তিনি।
গতকাল ভারতের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত ‘ল্যান্ড ডিল, ভিসাস নট পার্ট অব বাংলা টক’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ সব কথা বলা হয়। এতে আরও বলা হয়, আসামের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ ভারতের ক্ষমতাসীন সরকারকে এ দু’টি ইস্যুতে ক্রমাগত চাপ দিয়ে চলেছেন।
এতে অতিষ্ঠ হয়ে দিল্লি চলে যান আসাম বিজেপির এমপি, এমএলএরা। তারা সুষমা স্বরাজের সঙ্গে বৈঠক করেন বুধবার। এ সময় তারা জানতে চান সুষমা স্বরাজ ঢাকা সফরের সময় সীমান্ত চুক্তি ও বাংলাদেশীদের ভিসামুক্ত ভারতে প্রবেশের বিষয় নিয়ে কোন আলোচনা করেছেন কিনা।
বিজেপির প্রতিনিধি দল এ সময় সুষমাকে জানান, আসামের জন্য অনুপ্রবেশ একটি বড় সমস্যা। এছাড়া বৈধ ভিসায় ভারতে গিয়েও অনেক বাংলাদেশী সেখানে অবস্থান করেন। ওই বৈঠকের পর বিজেপির ন্যাশনাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ও গুয়াহাটির এমপি বিজয়া চক্রবর্তী বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা তাদেরকে বলেছেন- ঢাকা সফরের সময় সীমান্ত চুক্তি নিয়ে কোন আলোচনা হয় নি। এ সময় তিনি আসাম বিজেপি নেতাদের নিশ্চয়তা দেন যে, বাংলাদেশীদের জন্য ভারতে বিনা ভিসায় প্রবেশের বিষয়েও কোন আলোচনা হয়নি। আসামের তেজপুর থেকে নির্বাচিত বিজেপির এমপি রামপ্রসাদ শর্মা বলেছেন, সীমান্ত চুক্তি ও ভিসা ইস্যু নিয়ে উদ্বেগ ছিল।
কিন্তু এর কোনটিই আলোচনা হয়নি ঢাকার সঙ্গে। ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়, আসামের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ বর্তমান এনডিএ সরকারের বিরুদ্ধে ক্রমাগত অভিযোগ আনছেন। বিশেষ করে ১৮ বছরের কম ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সী বাংলাদেশীদের জন্য ভিসামুক্ত প্রবেশের প্রস্তাব নিয়ে তার আক্রমণে জর্জরিত আসাম বিজেপি।
গত মাসে নয়া দিল্লিতে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে বাংলাদেশের ওই বয়সসীমার নাগরিকদের বিনা ভিসায় ভারতে প্রবেশের প্রস্তাব করা হয়। এর জবাবে তরুণ গগৈ পরিষ্কার করেন তার রাজ্য সরকারের অবস্থান। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন, আসামে বাংলাদেশী অনুপ্রবেশ একটি জটিল ও স্পর্শকাতর সমস্যা। ঢাকা সফরের সময় সুষমা স্বরাজ অনুপ্রবেশ ইস্যুটি উত্থাপন করেন নি বলে তরুণ গগৈ তার তীব্র সমালোচনা করেন।
বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমার সঙ্গে সাক্ষাতের পর আসাম বিজেপি প্রতিনিধিরা তরুণ গগৈয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন। তারা বলেন, তিনি সুষমা স্বরাজের ঢাকা সফরকে রাজনীতিকরণ করে জনগণকে দ্বিধান্বিত করছেন। বিজয় চক্রবর্তী বলেন, রাজনৈতিক খেলার মাধ্যমে জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করা উচিত নয় মুখ্যমন্ত্রীর।
নয়া দিল্লিতে আমাদের সরকার উত্তর-পূর্ব ভারতের স্বার্থ পূরণের ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিজেপি নেতারা বলেন, সুষমা স্বরাজের ঢাকা সফর ছিল একটি শুভেচ্ছা সফর। একে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখা উচিত নয় কংগ্রেসের।