ফের ইসরাইলি বিমান হামলার মধ্যেই গাজার পাশে দাঁড়ালো আলজেরিয়ার ফুটবল টিম।
একদিকে গাজা সীমান্তের দিকে এগোচ্ছে ইসরাইলি সেনা, অন্যদিকে বিশ্বকাপের তাবৎ পুরস্কার অর্থ গাজার লড়াকু মানুষদের হাতে তুলে দেয়ার কথা ঘোষণা করলেন ইসলাম স্লিমানিরা।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে দ্বিতীয়ার্ধে যার গোলে আলজেরিয়া ইতিহাসে এই প্রথম নকআউট পর্যায়ে উঠে আসে, লিসবনের স্পোর্টিং ক্লাবের সেই তারকা স্লিমানি জানিয়েছেন: ‘জাতীয় দল তুলে দেবে পুরো ৯০ লক্ষ ডলার’। কারণ, ‘এই অর্থ- আমাদের চেয়েও ওদের কাছে অনেক বেশি প্রয়োজন’।
জার্মানির সঙ্গে টেক্কা দিলেও, শেষ পর্যন্ত পেরে ওঠেনি আলজেরিয়া। নব্বই মিনিট জার্মানদের আটকে রাখলেও, অতিরিক্ত সময়ে ২-১গোলে হেরে যায়। হেরে গেলেও, খেলোয়াড়দের জিতে নিয়েছেন আলজেরীয়বাসীর হৃদয়। রাজধানী আলজিয়ার্সে ফিরে পেয়েছেন বীরের সংবর্ধনা।
রাজপথে লাখো জনতার আবেগে ভেসেছে খেলোয়াড়রা। টিমবাসের ছাদে জাতীয় পতাকার সঙ্গেই তখন ফিলিস্তিনি পতাকা।
তার আগেই এসেছে প্যালেস্তিনীয় মানুষের প্রতি সংহতির বার্তা- নকআউট পর্যায়ে উঠতেই দলের মিডফিল্ডার সোফিয়ান ফেগৌলির ট্যুইট- “ আল্লাহকে শুকরিয়া, আমরা চার কোটি আলজেরীয়বাসী এবং কোটি কোটি আরব জনগণ, আমরা এগিয়েছি। আমরা এই জয় উৎসর্গ করতে চাই আরব জনগণের জন্য, বিশেষত ফিলিস্তিনীদের প্রতি।”
বেলজিয়ামের সঙ্গে প্রথম ম্যাচে এই ফেগৌলির গোলই ২৮ বছর বাদে আলজেরিয়ার প্রথম গোল।
১৯৬২, ফ্রান্সের থেকে স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে আলজেরিয়া বরাবরই মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়ার জোরালো সমর্থক। ইসরাইলের সঙ্গে নেই কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক। ১৯৭৪, আলজেরিয়ায় খোলা হয় প্যালেস্তাইন দূতাবাস। জাতিসংঘের অধিবেশনে সবসময়ই স্বাধীন প্যালেস্তাইন রাষ্ট্রের পক্ষে থেকেছে আলজেরিয়া।
এদিকে গাজায় বৃহস্পতিবার আবারো বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এতে অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় মানুষ। ফিলিস্তিনিরা পাল্টা গাজা থেকে রকেট হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে ইসরাইলের দু’টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। দু’পক্ষের হামলায় সীমান্তে বাড়ছে উত্তেজনা। সীমান্তে হিংসা ছড়িয়ে দেয়ার জন্য ইসরাইল ও প্যালেস্তাইন দুপক্ষেরই নিন্দা করেছে জাতিসংঘ। সংগঠনের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনার নাভি পিল্লাই সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘মানবাধিকারের দৃষ্টিকোণ থেকে আমি এই রকেট হামলা এবং এর জবাবে ইসরাইলের বেপরোয়া শক্তির ব্যবহারের তীব্র নিন্দা জানাই।’
বুধবার পূর্ব জেরুজালেমে ১৬ বছর বয়সী এক ফিলিস্তিন কিশোরের লাশ পাওয়ার পরই ফিলিস্তিনিরা প্রতিবাদে সরব হন। ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের রাষ্ট্রপতি মেহমুদ আব্বাস চেয়েছেন ‘হত্যাকারীদের চরম শাস্তি’। এর আগে অধিকৃত পশ্চিম তীরের ইহুদী বসতির অপহৃত তিন কিশোরের লাশ পাওয়ার পর এরজন্য হাসামকে দোষারোপ করে প্রতিশোধ হিসাবে গাজায় একতরফা বিমান হামলা শুরু করে ইসরাইল। গাজায় হামাসের অন্তত তিনটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল।-