দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ বিশ্লেষনঃ ব্রাজিলের ফুটবল ইতিহাসে চির কলঙ্ক হয়ে থাকবে ব্রাজিল বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে পরাজয়। ব্রাজিলের এমন হারের পরে সারা বিশ্বের ফুটবল প্রেমীদের মনে দেখা দিয়েছে নানান প্রশ্ন। ৭-১ গোলে হারের পরে ফুটবলপ্রেমীদের মনে কী, কেন, কিভাবে এই হার সম্ভব হল,এই প্রশ্নগুলো স্বাভাবিকভাবেই দেখা দিয়েছে। তাই, ব্রাজিলের এমন হারের কারণ উদঘাটনে জন্য ময়নাতদন্তে নেমেছে সারা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমী ও বোদ্ধারা। ফুটবল বোদ্ধাদের ময়নাতদন্তের ফলাফল দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলোঃ
নিজেদের মাঠে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ নিয়ে অনেক বেশি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে ব্রাজিলের খেলোয়াড়রা। এছাড়া সেমিফাইনালের আগে নেইমারের বিদায় তাদেরকে আরো বেশি আবেগী করে তোলে। ম্যাচ শুরুর আগে নেইমারের জার্সি প্রদর্শন করে তার প্রতি আবেগের বহিঃপ্রকাশ দেখায় ব্রাজিলের খেলোয়াড়রা। এত আবেগের কারণেই ব্রাজিলের পরাজয় ঘটেছে বলে মনে করছে ফুটবলবোদ্ধারা
খেলার শুরু থেকেই খুব বেশি আক্রমণাত্বক হয়ে উঠে ব্রাজিল। ব্রাজিল খেলার শুরুতে খুব বেশি আক্রমণ চালিয়েছে, তবে সেটা আক্রমণের কোন খেলোয়াড়কে দিয়ে নয়। রক্ষণভাগের খেলোয়াড় মার্সেলো দিয়েছেন আক্রমণের নেতৃত্ব। ম্যাচটি দেখলে যে কারো মনে হতেই পারে, তিনিই ছিলেন ব্রাজিলের আক্রমণভাগের মূল খেলোয়াড়
ব্রাজিলের লেফট উইংয়ে খেলা মার্সেলো বারবার আক্রমণে উঠে আসায় রক্ষভাগে তৈরি হয় বিশাল শূণ্যতা। জার্মানির খেলোয়াড়রা যখন আক্রমণে ব্রাজিলের রক্ষণকে অস্থির করে তুলেছে, রক্ষণভাগের খেলোয়াড় মার্সেলো তখনও ফিরে আসতে পারেনি নিজের জায়গায়। রক্ষণভাগের এই শূণ্যতাকে কাজে লাগিয়েছে জার্মানি
জার্মানদের দখলে ব্রাজিলের রক্ষণভাগ। ব্রাজিলের রক্ষণভাগ পুরোটাই ছিল জার্মানির দখলে। দেখা যায়, খেলায় জার্মানির আক্রমণ ভাগের পাঁচ খেলোয়াড়ের বিপরীতে মাত্র একজন রক্ষণভাগের খেলোয়াড় আছে ব্রাজিলের।
রক্ষণভাগে কোন খেলোয়াড় না থাকায় বার বার বল হারাতে হয়েছে ফার্নান্দোকে
নিজেদের রক্ষণভাগ জার্মানির দখলে তুলে দেওয়ার ফলাফল হাতেনাতেই পেয়েছে ব্রাজিল। কর্ণার থেকে ফাঁকায় দাঁড়ান মুলারের গোল
দুই মিনিট পরেই ক্লোসার বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডের গোল, এর পরে তো ব্রাজিলের উপর দিয়ে রীতিমত গোলঝড়ই বইয়ে দিয়েছে জার্মানির খেলোয়াড়রা
সেমিফাইনালে ৭ গোল হজম করা ব্রাজিলের গোলরক্ষক জুলিয়াস সিজারকে দেখে মনে হয়েছে তিনি খুবই ক্লান্ত। ৩৪ বছর বয়স্ক সিজারকে দেখে মনে হয়েছে, তিনি তার সেরা সময় অনেক আগেই পার করে এসেছেন। এখন তার অবসরের সময়। একাধিক ভুলের পাশাপাশি বল গ্রিপ করার ক্ষেত্রেও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন সিজার
জার্মানির বদলি খেলোয়াড় যখন সপ্তম গোলের জন্য কিক নিলেন, তখন দাঁড়িয়ে বল দেখে গেলেন সিজার। আটকানর কোন চেষ্টাই করলেন না
খেলোয়াড়রা নিজেদের জায়গা ভুলে অন্য জায়গায় দাড়িয়ে থাকলেও তা প্রতিরোধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি ব্রাজিল কোচ ফেলিপে স্কলারি।
সেমিফাইনালে ব্রাজিলের দল পুরোটাই ছন্নছাড়াভাবে ছিল। ছিল না কোন সমন্বয়….
থিয়াগো সিলভার অুনপস্থিতি
ডেভিড লুইসের অতি আত্মবিশ্বাসী লং পাস
লম্বা পাসে খেলতে গিয়ে নিজের অক্ষমতা বুঝতে পেরে ছোট পাস দেওয়ার চেষ্টা লুইসের। কিন্তু সেখানেও করলেন বড় ভুল। নিজেদের গোলবারের সামনে বল দিয়ে দিলেন জার্মানির খেলোয়াড়দের পায়ে
ম্যাচের প্রথম ১০ মিনিট বাদে ব্রাজিলের খেলোয়াড়দের দেখে কখনোই মনে হয়নি তারা জেতার জন্য খেলছে। প্রতি খেলোয়াড়ের চোখে-মুখে ছিল হতাশা আর ক্লান্তির ছাপ….
জার্মানির গোলবারের সামনে নিজে নিজেই পরে গেলেন ফ্রেড। পেনাল্টির আবেদন জানালেন রেফারি তার আবেদন সাড়া দেয়নি। এইভাবে ভূয়া পেনাল্টি আদায় করতে না পারার কারণেই জেতা হয়নি ব্রাজিলের। সবসময়তো আর রেফারি অযাচিত বাঁশি বাজিয়ে ব্রাজিলকে জিতিয়ে দেবে না….