যাত্রীবাহী বিমানগুলোতে সব সময় যাত্রীর নিরাপত্তার বিষয়টিকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়ে থাকে। এ কারণে সংঘাতপূর্ণ কিংবা ঝুঁকিপূর্ণ যে কোনো রুটকেই এড়িয়ে চলে যাত্রীবাহী বিমানগুলো।
এজন্যে বেশি তেল খরচ হলে সেটাও বহন করে যাত্রীরা। যে কারণে ইউক্রেন সংকট শুরু হওয়ার পর থেকেই অনেক যাত্রীবাহী বিমান ইউক্রেনের ঝুঁকিপূর্ণ রুটটি এড়িয়ে চলছিল। কিন্তু মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের বিমানটি এই বিষয়টি জানার পরও কেন ওই রুট দিয়ে গেল সেটা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন।
এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ডের সাবেক সভাপতি রবার্ট ফ্রান্সিস বলেন, ‘আমি খুব অবাক হয়েছি যে একটি যাত্রী বিমান পরিবহন সংস্থা ওই রকম একটি এলাকা দিয়ে উড়ছিল।’
কিছু দিন আগে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে রাশিয়াপন্থী বিদ্রোহীদের সংঘর্ষের কারণে ইউক্রেনের পূর্ব সীমান্তে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সংঘাত শুরু হওয়ার পর গত এপ্রিলে দেশটির ওই অংশের ওপর দিয়ে বিমান ওড়াওড়ির ব্যাপারে সতর্কতা জারি করেছিল জাতিসংঘের ‘ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অর্গানাইজেশন’। এ ব্যাপারে প্রত্যেকটি দেশের বিমান পরিবহন সংস্থাকে সতর্ক করার ব্যাপারে দেশগুলোকেও নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
গত সপ্তাহে ওই এলাকাতেই ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর একটি বিমান ভূপাতিত করে বিদ্রোহীরা। বৃহস্পতিবার রাতে ওই এলাকার নিকটেই মালয়েশিয়ান বিমানটি মিসাইলের আঘাতে বিধ্বস্ত হয়। ইউক্রেন সেনাবাহিনীর বিমানটির পাইলট বাঁচতে পারলেও মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের বিমানটির যাত্রীদের কারোরি সে সৌভাগ্য হয়নি।
থমাস রুথ নামে এক বিমান পরিবহন বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘এটা খুবই অস্বাভাবিক বিষয় যে একটি বিমান পরিবহন সংস্থা এ ধরনের সতর্কতাকে অবহেলা করলো। অবশ্য যাত্রীদের জন্য কোন পথটা সঠিক সেটা নির্ধারণের অধিকার পরিবহন সংস্থার নিজের রয়েছে। যেমন প্রত্যেক দিন বেশ কিছু বিমান আফগানিস্তানের আকাশ দিয়ে ভ্রমণ করছে।’
ধারণা করা হচ্ছে খরচ বাঁচাতেই এ কাজটি করা হয়ে থাকতে পারে। কারণ যে বিমানের পথ পালটালে বেশ খরচ হয়। এ সম্পর্কে নোমান শাঙ্ক বলেন,‘ অনেক বিমানই সতর্কতা স্বত্বেও ওই রুট দিয়ে উড়ছে। কারণ এই রুটটি হলো সংক্ষিপ্ত যা তাদের পয়সা বাঁচাচ্ছে।’
তবে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকেই এমিরেটস এয়ারলাইন্সের সব বিমান ওই এলাকা পরিহার করে চলছে। আটলান্টা ভিত্তিক ডেল্টা এয়ারওয়েজও সতর্কতার পর থেকে ওই রুট পরিহার করছে। আর ১৭ জুলাইয়ের পর জার্মানির লুফথানসা ও ভারতের এয়ার ইন্ডিয়া এবং জেট এয়ারও ওই রুট পরিহার করেছে।