ঢাকা মহানগরের কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে আগামী দিনে আন্দোলনমুখী মনোভাবের স্পষ্ট ইঙ্গিত দিল বিএনপি। সাদেক হোসেন খোকাকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য মীর্জা আব্বাসকে ঢাকা মহানগর কমিটির আহ্বায়ক করাকেই আন্দোলনমুখিনতার সবচেয়ে বড় প্রমাণ হিসেবে চিহ্নিত করছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা।
অভিযোগ আছে, ওই কমিটির পূর্বের আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকা অনেক বেশি ক্ষমতাসীন দলের প্রতি অনুগত। এমনকি তার বিরুদ্ধে মাঠে গড়ানোর আগেই আন্দোলন স্থবির করে ফেলার অভিযোগও ছিল। এর বিপরীতে, মির্জা আব্বাস অনেক বেশি সক্রিয় ও শক্তিশালী। ঢাকা মহানগরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতেও মির্জা আব্বাসের প্রভাব বলয় বেশ শক্তিশালী। এছাড়া, তিনি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানেরও আস্থাভাজন। একারণেই, রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, এই কমিটি ঈদের পর যে কোন সময় আন্দোলন শুরু করলে ঢাকা মহানগরে অনেক বেশি সংগঠিতভাবে আন্দোলনে নামতে পারবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আগাম নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে নামার আগে আটকে থাকা কমিটিগুলো পুনর্গঠনের ঘোষণা দিয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। সেই ঘোষণারই প্রতিফলন হিসেবে মাঠ পর্যায়ে আন্দোলনের সক্ষম একটি কমিটিই গঠন করেছে বিএনপি।
গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সংবাদ সম্মেলন করে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত ৫৩ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটি ঘোষণা করেন। এতে মির্জা আব্বাসকে আহ্বায়ক ও হাবিব উন নবী খান সোহেলকে সদস্য সচিব করে ঢাকা মহানগর কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটিতে চারজন উপদেষ্টা রয়েছেন। উপদেষ্টা মণ্ডলীতে রয়েছেন, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য বিগ্রেডিয়ার (অবঃ) আসম হান্নান শাহ, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা ও অর্থনীতি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম।
আন্দোলনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে একমাসের মধ্যে মহানগরীর সব ওয়ার্ড ও থানার পূর্ণাঙ্গ কমিটিও গঠন করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
নবগঠিত ঢাকা মহানগর কমিটির ছয়জন যুগ্ম আহ্বায়কের মধ্যে রয়েছেন, চেয়ারপার্সনের উপেদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ব্যবসায়ী নেতা আব্দুল আউয়াল মিন্টু, নির্বাহী কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক সালাউদ্দিন আহমেদ, সদস্য কাজী আবুল বাসার, সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু, সদস্য এমএ কাইয়ুম ও সহ তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আবু সাইদ খান খোকন।
নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির ৪৫ সদস্যে আছেন, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমান উল্লাহ আমান, বরকত উল্লাহ বুলু, এসএ খালেক, আবুল খায়ের ভুইয়া, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, সাহাবুদ্দিন আহমেদ।
এছাড়াও আব্দুল লতিফ ও সিরাজুল ইসলাম (কলাবাগান), আব্দুল মজিদ (রমনা), আনোয়ারুজ্জামান (তেজগাঁও), শামসুল হুদা ও গোলাম হোসেন (সবুজবাগ), সাজ্জাদ জহির ও একরামুল হক (শাজাহানপুর), ইউনুস মৃধা (খিলগাঁও), বজলুল বাসিত আনজু (মিরপুর), সাদেক আহমেদ (মুক্তিযোদ্ধা), আলী আজগর মাতবর (কাফরুল), নিতাই চন্দ্র ঘোষ (সুত্রাপুর), আহসান উল্লাহ হাসান ও আলী ইমাম আসাদ (পল্লবী) বোরহানুজ্জামান ওমর ও তানভীর আদেল বাবু (পল্টন), হারুনর রশিদ খোকন (মতিঝিল), আবুল হাসান তালুকদার ননী (শাহবাগ), আবু মোতালেব ও আনোয়ার পারভেজ বাদল (চকবাজার), আব্দুল মতিন (মোহাম্মদপুর), আব্দুস সামাদ (কোতোয়ালি), হাজী আলতাফ হোসেন (লালবাগ), ফরিদ আহমেদ (দয়াগঞ্জ), আক্তার হোসেন (খিলক্ষেত), নবী উল্লাহ নবী, মীর হোসেন মীরু, ফকরুল ইসলাম, ফেরদৗস আহমেদ মিষ্টি (শাহআলী) তানভীর আহমেদ রবিন (কদমতলী), শেখ রবিউল আলম (ধানমন্ডি), কফিল (উত্তরা পুর্ব) আরিফুর রহমান নাদিম (আরমানিটোলা), জাফরুল ইসলাম (বংশাল) ও এসএম জিলানী।