DMCA.com Protection Status
title="৭

মধ্যপ্রাচ্য সংকটঃ ধর্মীয় পরিচয় নয়, মতাদর্শিক অবস্থানই গুরুত্বপূর্ণ

article-0-1FAB657100000578-304_634x432ইসরাইলী বোমার আঘাতে, সন্ত্রাসী তৎপরতায় গাজায় ‘মৃতের সংখ্যা’ ৫০০ ছাড়িয়ে গেছে। শুধু সংখ্যা দিয়ে কি বোঝা যায় শিশু নারীসহ নিরস্ত্র মানুষদের ওপর সশস্ত্র বাহিনীর বর্বরতা, জীবনের হাহাকার ও ক্রোধ? বছরের পর বছর একই ঘটনার অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যে শিশু শরীরে কিংবা হৃদয়ে জখম নিয়ে বড় হচ্ছে সে হাতে অস্ত্র নেবে না তো কী নেবে?



দখলদার, গণহত্যাকারীর বিরুদ্ধে যে কোন ধরনের প্রতিরোধই যুক্তিযুক্ত। জুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিরোধই তাই প্যালেস্টাইনের আরেক নাম। প্রশ্ন হলো, একটি ছোট্ট রাষ্ট্র ইসরাইল কীভাবে দশকের পর দশক পুরো বিশ্বকে রক্তাক্ত করতে পারছে?

 



আসলে ইসরাইলের অস্তিত্ব ও গায়ের জোর তৈরি করেছে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের নেতৃত্বাধীন ফ্যাসিবাদী বিশ্বব্যবস্থা। দখল, লুন্ঠন আর ধ্বংস ছাড়া যে ব্যবস্থা মুহূর্ত পার করতে পারে না। মধ্যপ্রাচ্যে তার প্রধান সহযোগী ইহুদীবাদী ইসরাইল, তার আরেক বড় সহযোগী মুসলমানদের তীর্থস্থানের সুযোগ গ্রহণকারী রাজতন্ত্রী সৌদী আরব।

 

আমরা মনে রাখবো যে, ইহুদীবাদী ইসরাইল আর ইহুদী ধর্মাবলম্বী মানুষ এক কথা নয়; যেমন এক নয় রাজতন্ত্রী সৌদী আর মুসলমান। ‘ইহুদী’ মানেই ইসরাইল-যুক্তরাষ্ট্রের এই খুনি ভূমিকার সমর্থক নয়, আবার ‘মুসলমান’ মানেই দখল আধিপত্য বিরোধী প্যালেস্টাইনের মানুষের প্রতিরোধ লড়াই এর সমর্থক নয়। সেজন্য বিশ্বব্যাপী ইসরাইলী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে অনেক ইহুদীকেও শরীক দেখি। আবার মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বব্যবস্থার অনুগত মুসলিম শাসকদের দেখি নীরবতা ও নিষ্ক্রিয়তার মধ্যে দিয়ে ইসরাইলী আগ্রাসনের পক্ষে ভূমিকা পালন করতে।



ইরাক, লিবিয়ায় মার্কিনী গণহত্যা- ধ্বংসযজ্ঞে একদিকে ইসরাইল অন্যদিকে সৌদী আরব ছিলো প্রধান সহযোগী। তাই ধর্মীয় পরিচয় নয়, মতাদর্শিক অবস্থানই গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং এই অবিরাম লড়াই ইহুদী বনাম মুসলমানের নয়, লড়াই মানুষ বনাম পুঁজির, জালেম বনাম মজলুমের, দখলদার বনাম দখলকৃতের, খুনি বনাম আক্রান্তের।

সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও শহরে গ্রামে প্রতিদিন ইসরাইলী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হচ্ছে। আমরা গাজায় গিয়ে হয়তো লড়াই করতে পারি না, কিন্তু এইদেশে দখল, লুন্ঠন আর নিপীড়ন-বৈষম্যবাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে মানুষের চিন্তা ও শক্তি সংগঠিত করলে তা শেষ বিচারে সেই ফ্যাসিবাদী বিশ্বব্যবস্থার শরীরকেই আঘাত করে যার কারণে গাজাসহ বিশ্বের বহু প্রান্তে রক্ত ঝরে।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!