আগামী দিনের আন্দোলনে সবাইকে শরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়াপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
মঙ্গলবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু কনভেনশন সেন্টারে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। এর আগে বেগম জিয়া কূটনৈতিক, বিশিষ্ট নাগরিক, দলের সিনিয়র নেতা, ২০ দলীয় জোট নেতা ও সর্বস্তরের জনগণের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছ বিনিময় করেন।
খালেদা জিয়া বলেন, ‘৫ জানুয়ারি দেশে কোনো নির্বাচন হয়নি, হয়েছে পাতানো নির্বাচন। দেশের মানুষ এখন কষ্টে আছে।’ তাই হিংসা বিদ্বেষ ভুলে দেশ ও জাতির স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা যারা দেশ ও দেশের মানুষকে ভালোবাসি তাদের উচিৎ হবে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা। দলমত নয় দেখতে হবে যোগ্যতা ও দক্ষতা। যাতে করে স্বল্প সময়ের মধ্যে দেশকে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়া যায়।’
খালেদা জিয়া বলেন, ‘দেশে কোনো নির্বাচিত সরকার নেই। তাই সত্যিকারের নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে প্রয়োজন সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন। আর এটা একমাত্র নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থার অধিনেই সম্ভব।’
তিনি বলেন, ‘যারা ক্ষমতায় আছে তারা জবর দখলকারী সরকার। তাই আগামীতে অতিদ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। জাতীয় নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধিনে হতে হবে। আর এতে যে সরকার ক্ষমতায় আসবে তারা পরবর্তী সব নির্বাচনের বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করবে।’
তিনি সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘দেশের মানুষ আজ খেতে পায় না। দারিদ্রতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সন্ত্রাসী চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজিতে দেশের প্রতিটি মানুষ অতিষ্ঠ। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ হচ্ছে না।’
বার বার সংলাপের বিষয়ে দাবি জানানোর পরও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ চায় শান্তি ও কল্যাণ। গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রমাণ করেছে জনগণ কার পাশে রয়েছে। তার কোন শতাংশ ভোটের অধিকার রাখে।’
এসময় খালেদা জিয়া অবিলম্বে ফিলিস্তিনিদের উপর হামলা বন্ধের জন্য স্থায়ী যুদ্ধবিরতির পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান।
ঈদের দিন সকালে বেগম জিয়া গুলশানের বাসায় আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এরপর দুপুর ১২টার দিকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (চীন মৈত্রী) এসে প্রথমে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। কূটনৈতিকরাও খালেদা জিয়াকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান। এরপর বিশিষ্ট নাগরিক, দলের সিনিয়র নেতা, ২০ দলের সিনিয়র নেতা এবং সর্বস্তরের জনগণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন খালেদা।
শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে বেগম জিয়া দলের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করেন। সেখানে দোয়া ও ফাতেহা পাঠ শেষে তিনি গুলশানের বাসায় ফিরেন।