গাজার একটি স্কুলে ইসরায়েলি বর্বর হামলার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন ক্রিস্টোফার গানেস নামে জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা। গত বুধবার আল জাজিরার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি ওই প্রসঙ্গে কথা বলার সময় ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠেন। তার কান্না এতোটাই বাঁধভাঙা ছিল যে কিছুক্ষণের জন্য ক্যামেরা অন্যদিকে ঘুরিয়ে রাখা হয়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত বুধবার সকালে জাতিসংঘ পরিচালিত জাবালিয়া এলিমেন্টারি গার্লস স্কুল ইসরায়েলের শেলে বিধ্বস্ত হয়। এতে কমপক্ষে ১৭ জন নিহত এবং ৯০ জন আহত হয়।
সাক্ষাৎকারে গানেস বলেন, ‘ফিলিস্তিনী মানুষ এমনকি শিশুদের অধিকারও সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে এবং এটা আতঙ্কিত হওয়ার পর্যায়ে চলে যাচ্ছে।’
জাতিসংঘের রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্ক এজেন্সির এ মুখপাত্র এই কথা বলে ঠোঁট কামড়ে গলা পরিষ্কার করে নিজেকে একটু ধাতস্থ করার চেষ্টা করেন।
এসময় সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী তাকে ধন্যবাদ দেন এবং গানেস বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে বলেন, ‘My pleasure’। এসময়ই তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকেন।
তাকে স্বাভাবিক হওয়ার সুযোগ দিতে ক্যামেরা অন্য দিকে সরিয়ে নিলেও তার কান্নার শব্দ পাওয়া যায়।
এরপর তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ রিলিফ সংস্থাকে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। গাজা সংঘর্ষে পাঁচ কর্মীকে আমরা হারিয়েছি।’
তবে তিনি সেখানে কাজ করে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তার ইংরেজ দাদী নাকি তাকে ‘শক্ত যষ্ঠি’ বলে ডাকতেন- এ কথাও বলেন তিনি।
এ সাক্ষাৎকারের পরে গানেস টুইটারে লেখেন, ওই স্কুলটির প্রকৃত অবস্থান এবং সেখানে যে বাস্তুচ্যুত তিন হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে সে বিষয়টি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে ১৭ বার জানানো হয়েছিল এবং এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছিল।
বাস্তব পরিস্থিতি অবশ্য এরকমই। ইসরায়েল এমন এক ক্ষমতাবান রাষ্ট্র যে মার্কিন কংগ্রেসকে নিয়ন্ত্রণ করে! আর জাতিসংঘের মতো অভিভাবক সংগঠনও যেন গানেসের মতোই অসহায়: গাজায় বিপন্ন মানবতা দেখে মুখ লুকিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে!!