আমদানি পণ্য তালিকাভুক্ত করার কার্গো শাখার ঘর বিজিবি বুধবার রাতে উঠিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বেনাপোল চেকপোস্টে আমদানি-রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে শুল্ক বিভাগ। সেইসাথে বন্দর থেকে সব ধরনের মালামাল খালাস প্রক্রিয়া বন্ধ রাখা হয়েছে।
ঈদের ৩ দিনের ছুটি শেষে বৃহস্পতিবার থেকে কাস্টমস ও বন্দর খোলা থাকলেও বন্দর দিয়ে কোন ধরনের মালামাল আমদানি-রফতানি হয়নি। বিষয়টি সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত আমদানি-রফতানি সংক্রান্ত কোন কাজ করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
বেনাপোল কাস্টম হাউজের সহকারি কমিশনার অনুপম চাকমা জানান, বেনাপোল চেকপোস্টে কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃপক্ষের একটি অস্থায়ী কার্গো (টোং ঘর) অফিস ঘর রয়েছে। রাজস্ব ফাঁকি রোধে এখানে ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যের কাগজ পত্র যাচাই করে এন্ট্রিসহ কারপাস ইস্যু করা হয়ে থাকে। বিজিবি কাউকে কিছু না জানিয়ে এই ঘরটি বুধবার রাতে উঠিয়ে দেয়ার প্রতিবাদে আমদানি রফতানি বন্ধ রাখা হয়েছে। বিষয়টি কাস্টমস এবং বন্দর কর্তৃপক্ষের জন্য অবমাননাকর। এ জন্য তারা সকাল থেকে আমদানি রফতানি কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছেন। উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) আব্দুল জলিল জানান, ভারত থেকে আমদানি পণ্যবাহী ট্রাকগুলো বাংলাদেশে ঢোকার পর পণ্যের তালিকা, ট্রাক নম্বর, চালক ও সহকারির নাম এন্টি করা হয় এখানে। টোং ঘর উচ্ছেদের কারনে আমাদের বসায় জায়গা না থাকায় আমদানি-রফতানি সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
যশোর ২৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মতিউর রহমান জানান, একটি আন্তর্জাতিক চেকপোষ্টে রাস্তার উপর অস্থায়ীভাবে একটি কাঠের ঘর তৈরি করে কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃপক্ষ কার্গো শাখার কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। আন্তর্জাতিক চেকপোষ্টের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি চেকপোস্টে ঐ ঘরটি থাকায় চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবির সমস্যা হচ্ছিলো। ঘরটি দ্রুত সরিয়ে নিতে জেলা আইন-শৃংখলা কমিটির সভাতেও সিদ্ধান্ত হয়। বিষয়টি বারবার কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা সত্বেও তারা এ ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় বাধ্য হয়েই আমরা তা সরিয়ে দিয়েছি।
তিনি আরো জানান, সীমান্তে কাষ্টম ও বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব জায়গা থাকা সত্বেও সেখানে না যেয়ে ঢাকা-কলকাতা প্রধান সড়কের উপর কার্গো শাখার নামে টোং ঘর তৈরি করে সব সময় রাস্তায় যানজট লাগিয়ে রাখে।
এদিকে ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদের ছুটির কারণে বেনাপোলের ওপারে বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় শত শত ট্রাকের লাইন পড়ে গেছে। ভারতীয়রা ব্যবসায়ীরা বৃহস্কতিবার সকালে এক ঘন্টা আগ থেকে কাজ করার জন্য বুধবারই তাদের কাছে অনুরোধ করেছিল। কিন্তু উল্টো আজ কোন কাজই হচ্ছে না। এতে যানজট ও পণ্যজট আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে।