দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ প্রতিবেদনঃ বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে তোবা গ্রুপের পাঁচটি কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ সমাবেশ করছেন। আজ শনিবার বেলা ১১টা থেকে রাজধানীর মধ্য বাড্ডার হোসেন মার্কেটের সামনে তারা এই বিক্ষোভ শুরু করেন। ‘আমরা তোবা গ্রুপ শ্রমিক সংগ্রাম কমিটির’ ব্যানারে ওই বিক্ষোভ চলছে।
বিক্ষোভ স্থানে, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, শ্রমিকনেতা রাজিকুজ্জামান রতন, মন্টু ঘোষ প্রমুখ উপস্থিত রয়েছেন।
শ্রমিকনেতা মন্টু ঘোষ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায়ই বলেন তিনি শ্রমিকদের অনেক সুযোগ-সুবিধা দিয়েছেন। আজ ছয় দিন ধরে শ্রমিকেরা অনশন করছেন, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী চুপ রয়েছেন। এটা দুঃখজনক।
শ্রমিকনেতা রাজিকুজ্জামান রতন বলেন, বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে অনশন করতে গিয়ে শ্রমিকেরা মানসিক ও শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাঁদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তিনি তাজরীন ফ্যাশনসের শ্রমিক মৃত্যুর মামলার প্রধান আসামি দেলোয়ার হোসেনের জামিন বাতিল করার দাবি জানান।
গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ তৈরি পোশাকশিল্প মালিক সমিতি (বিজিএমইএ) সাত দিনের মধ্যে আংশিক বেতন-ভাতা পরিশোধের যে আশ্বাস দিয়েছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছেন শ্রমিকেরা।রাজধানীর মধ্য বাড্ডায় হোসেন মার্কেট ভবনে অবস্থিত কারখানায় শ্রমিকদের সঙ্গে গত সোমবার থেকে অনশন করছেন গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু।
গতকাল শুক্রবার সকালে তিনিই এ বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এ সময় মোশরেফা মিশু বলেন, ‘আমরা “তোবা গ্রুপ শ্রমিক সংগ্রাম কমিটি” গঠন করেছি। এ কমিটি শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে আশুলিয়া, গাজীপুর, সাভার, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রামসহ সারা দেশে সমাবেশ করবে।’ তিনি বলেন, শ্রমিকেরা পাঁচ দিন ধরে অনশন করছেন। আর বিজিএমইএ আরও সাত দিন সময় লাগবে বলে পরিহাস করছে। বিজিএমইএর নেতারা তোবার মালিক দেলোয়ারকে জামিনে মুক্ত করতেন তত্পরতা চালাচ্ছেন। অথচ শ্রমিকদের দিকে তাকাচ্ছেন না।
প্রসঙ্গত,ঈদের আগের দিন থেকে বকেয়া ভাতা আদায়ের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছে তোবা গ্রুপের পাঁচটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। এ প্রেক্ষিতে বিজিএমইএ এক সপ্তাহের মধ্যে বেতন পরিশোধের আশ্বাস দেয়। এ আশ্বাস প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের ঘোষণা করেছে আন্দোলনকারী শ্রমিকরা। শ্রমিকরা বলছে, বিজিএমইএ এর আগে এমন আশ্বাস দিলেও রাখেনি। বেতন-ভাতা না পেয়ে কষ্টে আছেন তারা।
অনশনরত শ্রমিকদের মধ্যে গতকাল পর্যন্ত ৮৬ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। কারখানার ভেতরে অনশনরত অন্য শ্রমিকদের সঙ্গে মোশরেফা মিশুকেও স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে। হোসেন মার্কেট ভবনে তিনটি তলায় রয়েছে তোবা টেক্সটাইল, তায়েব ডিজাইন ও মিতা ডিজাইনের কারখানা। পাশের ফুজি ভবনে রয়েছে বুকশান ও তোবা ফ্যাশনস।