নেপালে রোববার থেকে দুদিনের সফর শুরু করতে যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রাজনৈতিক ইস্যু ছাড়াও এই সফরটি ব্যক্তিগত কারণেই তার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা নেপালে তিনি তার দীর্ঘদিনের পালক পুত্র জিত বাহাদুরকে তার পরিবারের কাছে তুলে দেবেন বলে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে।
এ সম্পর্কে শনিবার এক টুইটার বার্তায় মোদি বলেছেন, ‘ব্যক্তিগত কারণে এই সফর আমার কাছে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। কেননা এর সঙ্গে আমার কিছু ব্যক্তিগত আবেগের বিষয় জড়িয়ে রয়েছে।’
১৯৯৮ সালে আমদাবাদ রেলস্টেশন থেকে নেপালের ওই অসহায় বালককে তিনি কুড়িয়ে পান। এরপর থেকে জিতের দেখভাল করছেন স্বয়ং মোদি। তার ভাষায়,‘ ‘বেশ কয়েক বছর আগে একটি বালককে উদ্ধার করেছিলাম আমি। তার নাম জিত বাহাদুর। সে ভারতীয় ভাষা জানত না। কোথায় যাবে, কী করবে তাও জানা ছিল না তার।’ তিনি জিতের পড়াশোনারও ব্যবস্থা করেছিলেন। সে গুজরাতি ভাষাও শিখে নিয়েছিল। পাশাপাশি তার পরিবারেরও খোঁজ চলছিল। শেষ পর্যন্ত নেপালেই জিতের পরিবারের খোঁজ পাওয়া যায়।
এ সম্পর্কে টুইটারে মোদি বলেছেন, ‘ঈশ্বরের নির্দেশেই জিতের ভার নিয়েছিলাম আমি।’ এখন জিতের বয়স ২৭। আমদাবাদে ম্যানেজমেন্ট পড়ছে সে। মোদি প্রধানমন্ত্রী হয়ে দিল্লিতে চলে আসার পর থেকে জিত বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলেই থাকে। অন্য এক সাক্ষাৎকারে জিত বলেছে, ‘মোদিজি আমার বড় ভাইয়ের মতো। তার সাহায্য ছাড়া আমি যা হয়েছি তা হতে পারতাম না। এ বার পরিবারের সঙ্গে যখন দেখা হবে তখন বড় ভাইও সঙ্গে থাকবেন। এটাই সবচেয়ে বড় সাফল্য।’
জিতকে কুড়িয়ে পরওয়ার পর থেকে তার পরিবারের অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। ২০১১ সালে গুজরাতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেন নেপালের ব্যবসায়ী বিনোদ চৌধুরি। তারই সহায়তায় নেপালে জিতের পরিবারের খোঁজ মেলে।
মোদির এক ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, নেপালের নওয়ালপরাসি জেলার কাওয়াসোতি পুরসভা এলাকার এক হতদরিদ্র পরিবারের ছেলে জিত বাহাদুর। পেটের দায়ে ১৯৯৮ সালে বড় ভাই দশরথের সঙ্গে ভারতে আসে সে। পরে সেখান থেকে সে হারিয়ে যায়।
প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে রোববার নেপাল যাচ্ছে জিত। সেখানে আনুষ্ঠানিতভাবে তাকে তার বাবা-মায়ের হাতে তুলে দিচ্ছেন মোদি। এ সম্পর্কে টুইটারে তিনি আরো জানান,‘ভগবানের কৃপায় আমরা তার বাবা-মাকে সনাক্ত করতে পেরেছি। এতে আমি ভীষণ আনন্দিত। আগামীকাল(রোববার) জিতের পরিবার তাদের হারিয়ে যাওয়া ছেলের সঙ্গে মিলিত হবে।’