সৌন্দর্যের ধারণাকে পাল্টে দিতে নতুন একটি বিজ্ঞাপন নিয়ে এসেছে মেরিল স্প্ল্যাশ। ‘সৌন্দর্য গায়ের রঙে নয়, ফ্রেশ মানেই সুন্দর’ এই স্লোগানে এগিয়ে যাওয়া বিজ্ঞাপনটি এরই মাঝে সারা ফেলেছে দর্শক শ্রোতার মাঝে। তবে একটি নতুন ভাবনাকে জনসাধারণের কাছে ছড়িয়ে দিতে গিয়ে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে বিজ্ঞাপনটি। তাই, প্রশংসা কুড়োনোর পাশাপাশি সমালোচনার শিকারও হয়েছে বিজ্ঞাপনটি।
গায়ের রঙ যে একজন মানুষের সৌন্দর্যের মাপকাঠি হতে পারে তা জন্ম থেকেই মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয় মেয়েদের। আর নিজের অজান্তেই সেই বিশ্বাসকেই যুগ যুগ ধরে লালন করে চলে মেয়েরা। এই সুযোগকে হাতড়ে নেবার জন্য সুযোগ সন্ধানীরও অভাব নেই। আর বাংলাদেশে জন্মে গায়ের রঙ কাল নিয়ে কথা শুনতে হয়নি এমন মেয়ের সংখ্যা খুবই কম। আর বাকিরা একে নিজের এক ধরনের অপ্রাপ্তি হিসেবে গন্য করে তাকে প্রাপ্তিতে পরিণত করার চেষ্টা চালায় নিরন্তর।
আবার সমাজ ব্যাবস্থাটাই এমন যে এই নিয়ে প্রতিবাদ করার মানুষ গুটিকয়েক। কজনেরই বা সাহস হয় প্রতিদিন শত শত সমালোচনারত মুখগুলোকে উপেক্ষা করে আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে যাবার! কিন্তু বিজ্ঞাপনটি প্রচারের পর থেকে এইবার যেন নিজেদের কথা বলার একটি জায়গা তৈরি হয়েছে সেসব কৃষ্ণকলিদের। সাহস জন্ম নিচ্ছে নিজেদের জমিয়ে রাখা দুঃখকে শক্তিতে পরিণত করার। নিজেকে মুখোশের আড়াল থেকে বের করে সেইসব শত শত সমালোচনারত মুখগুলোকে মুখোশ পড়িয়ে দেবার, আত্মবিশ্বাসের সাথে নিজেদের সৌন্দর্যকে প্রকাশ করবার।
এমন একটি ইতিবাচক ধারণার জন্য বেশ প্রশংসিত হয়েছে বিজ্ঞাপনটি। অনেকে আবার মেরিল স্প্ল্যাশের সাথে ফেয়ার এন্ড লাভলীকে নিয়ে মজা কুড়োতেও ছাড়ছেন না। মেরিলের বিজ্ঞাপনটি যেন অনেকটা ফেয়ার এন্ড লাভলীকে বাঁশ মারাই হয়েছে বলেও মন্তব্য করছেন তারা।
তবে সব প্রশংসা শেষেও সমালোচনা পিছু ছাড়েনি বিজ্ঞাপনটির। মেরিলের এই ইতিবাচক ভাবনাকে স্বাগত জানালেও বিজ্ঞাপনে তিশার ম্যাকআপ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে অনেকে। ‘যদি গায়ের রঙই সৌন্দর্যের মাপকাঠি না হয় তবে তিশা কেন নিজের গায়ের রঙে ক্যামেরার সামনে উপস্থিত না হয়ে এত ভারী ম্যাকআপ নিয়ে উপস্থিত হল?’ এমন প্রশ্ন অনেকেরই। অনেকে আবার ডিরেক্টরের অসন্তুষ্টির বিষয়টিকে এর উত্তর হিসেবে দেখাতে চাইলেও বিজ্ঞাপনের শেষের দিকে তিশা যখন কথাগুলো বলছিলেন, তখন কেন তিনি নিজ রঙে উপস্থিত হননি এই প্রশ্ন থেকেই গেছে। বিজ্ঞাপনটি তাই, তার নিজের অবস্থান থেকে সরে এসেছে বলে অনেকের অভিমত।
তবে সমস্ত বিতর্কের পরেও যুগ যুগ ধরে চলতে থাকা মেয়েদের অপদস্ত করার হাতিয়ারে একটু হলেও মরিচা পড়ার বন্দোবস্ত করেছে