দ্রুত বিচার আইনের একটি মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীসহ দলটির ১৪৭ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেছে আদালত। সোমবার ঢাকা মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট ও ৬ নম্বর দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক তারেক মঈনুল ইসলাম ভূইয়া চার্জ গঠনের এই আদেশ দেন। আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে আদালত চার্জ গঠনের পর আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ঠিক করা হয়।
এই মামলায় সকল আসামি জামিনে আছেন। তাদের মধ্যে সোমবার ৪৭ জন অনুপস্থিত থাকায় তাদের পক্ষে সময়ের আবেদন করা হয়। কিন্তু আদালত তাদের সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে চার্জ গঠনের আদেশ দেয়।
শুনানিকালে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী, জয়নুল আবদিন ফারুক, আমান উল্লাহ আমান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মো. শাহজাহান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধানসহ ১০০ জন আসামি উপস্থিত ছিলেন।
২০১৩ সালের ১১ মার্চ বেলা ৩টার দিকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে এসব আসামি হঠাত্ করেই ইটপাটকেল, লোহার রড, শাবল, লাঠি, হকিস্টিক ইত্যাদি হাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তার ওপর, টপ কালেকশনের গলি ও নয়াপল্টন মসজিদ গলির সামনের রাস্তায় যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে, সরকারি-বেসরকারি অফিস ও যানবাহন ভাঙচুর করে, পরপর ১৮/২০টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ও রাস্তার ওপর ৭টি স্থানে টায়ার, চট, কাগজ দিয়া আগুন ধরিয়ে জনমনে অতঙ্কের সৃষ্টি করে।
আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইনের ৪ ও ৫ ধারায় পল্টন থানার এ মামলায় ২০১৩ সালের ২৪ মার্চ আদালতে ১৪৮ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। চার্জশিট দাখিলের পর এক জন আসামি মারা যান। তাই আদালত মৃত আসামিকে অব্যাহতি দিয়ে ১৪৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন।
আমানসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জগঠন
এদিকে অপর এক মামলায় বিএনপিদলীয় সাবেক প্রতিমন্ত্রী যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ আমানসহ দলটির ১৪ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেছে ঢাকা সিএমএম আদালত। ঢাকা মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুল হক সোমবার শুনানি শেষে চার্জ গঠনের এই আদেশ দেন। একই সঙ্গে আসামিরা অভিযোগ অস্বীকার করায় আগামী ২০ নভেম্বর সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ঠিক করেন।
এর আগে ২১ বার চার্জ গঠনের জন্য সময় মঞ্জুর করে আদালত। সোমবার দুই জন আসামির পক্ষে সময় চাওয়া হলে আদালত তা নামঞ্জুর করে চার্জ গঠনের আদেশ দেয়।
শুনানিকালে আমানসহ ১২ জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অপর ২ আসামি আদালতে না আসায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। উপস্থিত অপর ১১ আসামি হলেন মোস্তাফিজুর রহমান, রাসেল, মোকসেদ আলম, লোকমান হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, নাসির উদ্দিন, চান মিয়া, আবদুল জব্বার, বাবুল ওরফে রিক্সা বাবুল, জুলহাস, মো. ফজলু মিয়া। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিকৃত দুই জন হলেন আমিনুল হক, রানা কাশেম। ২০০৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় এসআই তৌহিদ আহমেদ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০০৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর আমানউল্লাহ আমান বিদেশ থেকে বিমানযোগে বিমানবন্দরে নামলে মোহাম্মাদপুর থানার একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। ওই সময় নেতাকর্মীরা তাকে ছাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনায় মামলাটি দায়ের করা হয়। ২০১১ সালের ২০ আগস্ট এই মামলায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন বিমানবন্দর থানার এসআই মারুফ আহমেদ।