বিএনপি নেতা ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল আলীম ইন্তেকাল করেছেন,ইন্না লিল্লাহে ওয়াইন্না ইলাইহে রাজেউন।মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮৩ বছর।
একাত্তরের মানবতা বিরোধী অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা আবদুল আলীম মারা যাওয়ায় তার সাজা শেষ হয়ে গেলো। একই সঙ্গে তার আপিল আবেদনের কার্যক্রমও আর থাকলো না।
এ ব্যাপারে আবদুল আলীমের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হুজ্জাতুল ইসলাম আল ফেসানি দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ কে বলেন, ‘ক্রিমিনাল মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি মারা গেলে তার বিরুদ্ধে আর কোনো সাজা থাকে না। এ মামলার অভিযোগ, সাজা সবকিছুই নিষ্পত্তি হয়ে যায়।’
রাষ্ট্রপক্ষের একজন আইনজীবী সুলতান মাহমুদ সিমন বলেন, ‘মানবতা বিরোধী অপরাধে আমৃত্যু সাজাপ্রাপ্ত আবদুল আলীমের মৃত্যুর মধ্যদিয়ে তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ ও সাজা এখানেই শেষ গেলো। আপিলের কার্যক্রমও আর থাকবে না।’
আবদুল আলীম তার সাজার বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করেছিলেন। এখন এ আপিল চলবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী কোনো আসামির মৃত্যু হলে তার বিরুদ্ধে চলমান মামলা আর থাকে না।’
রাষ্ট্রপক্ষ সাজার মেয়াদ বহাল রাখতে চাইলে সেক্ষেত্রে কি হবে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘ফৌজদারি কার্যবিধির বিধান অনুযায়ী সাজাপ্রাপ্ত কোনো আসামির মৃত্যু হলে তার মামলা সংক্রান্ত সব বিষয় এমনি এমনিই নিষ্পত্তি হয়ে যায় এবং এ মামলার বিষয়ে পক্ষ বিপক্ষের আর কোনো অভিযোগ থাকে না।’
উল্লেখ্য, একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে ২০১৩ সালের ৯ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ আবদুল আলীমকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন।
আলীমের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধের মোট ১৭টি অভিযোগ আনা হয়েছিল। এর মধ্যে নয়টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়। চারটি অভিযোগে তাকে মৃত্যু পর্যন্ত কারাদণ্ডের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
এসব অভিযোগের মধ্যে হত্যা, লুটতরাজ, দেশত্যাগে বাধ্য করা, অগ্নিসংযোগের মতো অপরাধ রয়েছে।
রায়ের সময় ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘আবদুল আলীম যে অপরাধ করেছেন, তাতে তার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড পাওনা হয়। কিন্তু তার বয়স ও পঙ্গুত্বের কথা বিবেচনায় নিয়ে তাকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।’
এর পর ৭ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করেন আলীম। তার আপিল কার্যক্রম নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ছিল।
৮৩ বছর বয়সী এই বিএনপি নেতা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলার সময় মুসলিম লীগের নেতা ছিলেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ২০১১ সালের মার্চ মাসে জয়পুরহাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আব্দুল আলিমকে। তবে বয়স ও অসুস্থতার কারণে পরে তাকে জামিন দেয়া হয়। মামলার রায় হওয়ার পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
শনিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি ফুসফুসের ক্যান্সারের ভুগছিলেন।