ভারত ও চীনের কূটনীতিক তৎপরতায় রওশন এরশাদ ও হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের মধ্যকার রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক দ্বন্দ্বের সমাপ্তি ঘটেছে। এর ফলস্বরূপ, ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন জাতীয় পার্টির সংসদ-সদস্যরা। হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ দীর্ঘদিন ধরেই চাইছিলেন, জাতীয় পার্টি ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রীসভা থেকে বেরিয়ে আসুক। কিন্তু রওশন এরশাদ চাইছিলেন মন্ত্রীসভায় থাকতে।
এ নিয়ে রওশন এরশাদ ও হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের মধ্যে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বও বিরাজ করছিল। এছাড়া, দীর্ঘদিন ধরেই জাতীয় পার্টিকে মন্ত্রীসভা থেকে বের হয়ে আসার জন্য সম্মত করতে কূটনীতিক তৎপরতা চালিয়ে আসছিল ভারত।
দীর্ঘদিনের এই কূটনীতিক তৎপরতার ফল হিসেবেই, হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ও রওশন এরশাদ মন্ত্রীসভা থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্তে সম্মত হলেন। তবে, রওশন এরশাদ চাইছেন আরও চার থেকে পাঁচ মাস বর্তমান মন্ত্রীসভায় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা অবস্থান করুক। কিন্তু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ চাইছেন, চার-পাঁচ মাস নয়, এখনই মন্ত্রীসভা থেকে বেরিয়ে আসতে।
বর্তমান সরকারের জাতীয় পার্টির তিনজন মন্ত্রী রয়েছেন। এরমধ্যে মন্ত্রী একজন ও প্রতিমন্ত্রী দুইজন। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্বে রয়েছেন জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয় ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে রয়েছেন জাপার দুই প্রেসিডিয়াম সদস্য মশিউর রহমান রাঙা ও মুজিবুল হক চুন্নু।
জাতীয়-আন্তর্জাতিক বিরোধ সত্ত্বেও ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার গঠনে ভারত ও চীনের কূটনীতিক তৎপরতা বিশেষ ভূমিকা রেখেছিল। সরকার গঠিত হলেও এ নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দ্বন্দ্ব-অসন্তোষের সুরাহা হয়নি। সুরাহা-চেষ্টার অংশ হিসেবেই বর্তমান সরকারের মন্ত্রীসভা থেকে জাতীয় পার্টির সদস্যদের পদত্যাগের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।