হাটহাজারী উপজেলার পরিত্যক্ত আদালত ভবনে পুলিশের ব্যারাকে অভিযান চালিয়ে ফের বিতর্কে জড়িয়েছেন ইউএনও ইশরাত জাহান পান্না।
উচ্ছেদ অভিযানের সময় অব্যবহৃত আদালত ভবনে ট্রাফিক পুলিশের ব্যারাক তছনছ এবং ব্যারাকে পুলিশ সদস্যদের রান্নার কাজে নিয়োজিত দিলুয়ারা বেগমকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় হাটহাজারী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে পুলিশ।
তবে ইশরাত জাহান পান্না বলছেন, উচ্ছেদ অভিযান নয় পানি সম্পদ মন্ত্রীর নির্দেশে ব্যারাক খালি করে দেওয়ার বিষয়টি জানাতে গিয়েছিলেন তিনি।
পুলিশের অভিযোগ, কোন ধরণের নোটিশ ছাড়াই সোমবার হাটহাজারী থানার ট্রাফিক পুলিশ ব্যারাকে উচ্ছেদ অভিযানে যান ইউএনও। হাটহাজারী উপজেলা আদালতের পরিত্যক্ত এই ভবনে দীর্ঘদিন ধরে পুলিশ সদস্যরা থাকছেন।
জেলা ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ মীর গোলাম ফারুক বলেন, কোন প্রকার নোটিশ না দিয়ে পুলিশ ব্যারাকে অভিযান শুরু করেন ইউএনও। এসময় ব্যারাকের ভেতর থেকে পুলিশের ইউনিফর্মসহ অন্যান্য মালামাল তছনছ করে দেওয়া হয়। এমনকি ঘরের আসবাপত্র ভবনের বাইরে ফেলে দেওয়া হয়।
হাটহাজারী থানার অফিসার ইনচার্জ মো.ইসমাইল দৈনিক প্রথম বাংলাদেশকে বলেন , দীর্ঘদিন ধরে সরকারী অব্যবহৃত এই ভবনের কিছু অংশে ট্রাফিক এবং রিজার্ভ পুলিশের সদস্যরা বসবাস করে আসছে। হঠাৎ করে ইউএনও সেখানে অভিযান চালিয়ে পুলিশের ইউনিফর্ম ও মালামাল ফেলে দেন।
এই ঘটনায় থানায় জিডি করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য যোগাযোগ করা হলে ইউএনও ইসরাত জাহান পান্না দৈনিক প্রথম বাংলাদেশকে বলেন, মন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশে তাদের উঠে যেতে বলা হয়েছে।
মারধর ও উচ্ছেদ অভিযানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারবো না। মন্ত্রী মহোদয়ের নাম্বার দিচ্ছি। ওনার সঙ্গে কথা বলেন। এরপরই মোবাইলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন তিনি।
উল্লেখ্য শিক্ষক পেঠানো, অভিযানে গিয়ে মারধর, হুমকি ধমকি দিয়ে বেশ কয়েকবার সমালোচিত হন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান পান্না।
থানা সূত্রে জানা গেছে, নব্বই দশকের পরে হাটহাজারী পৌরএলাকার কাচারী সড়ক সংলগ্ন আদালত ভবনটির কার্যক্রম বন্ধ হয়। এরপর থেকে ওই ভবন দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। গত দুই দশকের অধিক সময় ধরে ভবনটির কিছু অংশে হাটহাজারী সার্কেল অফিস ও অস্থায়ী পুলিশ ব্যারাক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
হাটহাজারী মডেল থানায় সার্কেল অফিস স্থানান্তরিত হলে পরবর্তীতে ফাঁকা ভবনটিতে ট্রাফিক পুলিশ ও থানার রিজার্ভ পুলিশ থাকার জন্য ব্যারাক হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশ সদস্যরা জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান পান্না সোমবার পুলিশ ব্যারাকে উচ্ছেদ অভিযানে আসেন। এসময় তিনি ওই ভবনের বিভিন্ন কক্ষে ঢুকে পুলিশ সদস্যদের ইউনিফর্ম, জুতো, বিচানাপত্রসহ যাবতীয় মালামাল বাইরে ছুড়ে ফেলার নির্দেশ দেন। দুপুর দেড়টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত এ অভিযানে রান্নাঘরসহ ৩টি কক্ষ তছনছ করে দেওয়া হয়।
এ সময় পুলিশ সদস্যদের জন্য রান্না করা দুপুরের খাবার মেঝেতে ফেলে দেন। ফলে ডিউটি শেষে দুপুরে ব্যারাকে ফিরে পুলিশ সদস্যরা খেতে পারেননি।