আর্থ সামাজিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা অপরিহার্য বলে মনে করে জাপান। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে আশা প্রকাশ করেছেন, বাংলাদেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলো আলাপ আলোচনার মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁঁছাতে পারবে, যা বাংলাদেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক মহলের গ্রহণযোগ্যতা পাবে।
শনিবার সন্ধ্যায় হোটেল সোনারগাঁওয়ে জাপান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বৈঠক শেষে শমসের মবিন চৌধুরী এ কথা বলেন। গত ১৪ বছরের মধ্যে এটাই জাপানের কোনো প্রধানমন্ত্রীর প্রথম ঢাকা সফর। শেখ হাসিনা সরকারের প্রথম মেয়াদে ২০০০ সালের আগস্টে বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন জাপানের সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিরো মোরি।
বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রধান বেগম খালেদা জিয়ার সাথে জাপানী প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সাক্ষাতকার প্রমান করলো জাপান সহ বিশ্বের উন্নত দেশগুলো বাংলাদেশের পরিস্থিতির উপর তীখ্ন দৃষ্টি রাখে চলেছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ও খালেদা জিয়া একমত পোষণ করেছেন, বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হলে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা, মানবাধিকার ও আইনের শাসন অপরিহার্য।
গত ৫ জানুয়ারির ‘এক তরফা’ নির্বাচনের বিষয়ে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ওয়াকিবহাল রয়েছেন বলে জানান জনাব শমসের।
তিনি বলেন, জাপানের সরকার অবগত রয়েছে যে, গত ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে বাংলাদেশের বড় বড় রাজনৈতিক দল অংশ নেয়নি। তিনি আশা প্রকাশ করেন তারা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছাতে পারবে, যা বাংলদেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক মহলের গ্রহণযোগ্যতা পাবে।
সন্ধ্যা ৭টা থেকে ত্রিশ মিনিট স্থায়ী এই বৈঠকে দুই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ দ্বি-পাক্ষিক নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকের শুরুতে বিএনপি চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ১৪ বছর পর বাংলাদেশ সফরে আসায় নিজের ও দলের পক্ষ থেকে জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান। তিনি তার দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করেন।
বৈঠকে শিনজে আবে দুইদেশের দ্বিপাক্ষিক সর্ম্পক গভীর ও বহুমুখী বলে উল্লেখ করেছেন। দুই দেশের মধ্যকার দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা বৈঠকে স্মরণ করেন খালেদা জিয়া।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য পদে বাংলাদেশের প্রার্থিতা প্রত্যাহার সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, ‘গণমাধ্যমের সংবাদে আমরা শুনতে পেরেছি, বাংলাদেশ প্রথম বারের মতো তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। ১৯৭৮ সালের রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাসনের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য পদের জন্য জাপানের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বাংলাদেশ বিজয়ী হয়েছিল। তিনবার এই পদে বাংলাদেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। এবারই প্রথম বাংলাদেশ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করল।’
বৈঠকে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোরশেদ খান, শমসের মবিন চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান ও সাবিহ উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।