জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুকে সংসদে লাঞ্ছিত করেছেন দলের কমিটি থেকে সদ্য অব্যাহতি পাওয়া স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা এবং বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী।
সংসদ ভবনের লবি-১ এর সামনে এ তিনজনের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তাজুল ইসলাম চৌধুরী জাপা মহাসচিবের দিকে তেড়ে যান।
বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনের লবির সামনে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় পাশে থাকা জাতীয় পার্টির আরেক নেতা ও ঢাকা-৬ আসনের কাজী ফিরোজ রশীদ বারবার তাদের নিবৃত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এর আগে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ লবি থেকে বের হয়ে যান।
জানা যায়, রাঙ্গা সংসদের লবিতে বাবলুকে দেখেই ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। রাঙ্গা বলেন, আপনি তো এখন অনেক বড় নেতা হয়ে গেছেন, উড়ে এসে জুড়ে বসেছেন। যখন তখন যে কাউকে দল থেকে বের করে দিচ্ছেন, অব্যাহতি দিচ্ছেন। আপনি আমার এলাকার কমিটি ভেঙে দিলেন, এগুলো কেন করছেন? জবাবে বাবলু বলেন ‘আমি কিছু জানি না’। পাল্টা রাঙ্গা বলেন ‘আপনিই তো সবকিছুু করছেন’।
এসময় উত্তেজিত কণ্ঠে বাবলুকে রাঙ্গা গালাগাল করেন বলেও জানা যায়। এমনকি রাঙ্গা চিত্কার করে বলেন, ‘রংপুরে আমি দল চালাই, আমার টাকায় দল চলে, আর সেখানে নাকি আমার ছবি পোড়ানো হচ্ছে, আমিও এরশাদের একশ ছবি পোড়াবো।’
তার সঙ্গে যোগ দেন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী। রাঙ্গার সমর্থনে তখন উচ্চস্বরে তাজুলও কথা বলেন। বাবলুকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন ‘আপনি আজ প্রেস কনফারেন্সে আমাকে যুদ্ধাপরাধী বলেছেন। আমি সাতবার নির্বাচিত এমপি, কেউ কখনও কোনো অভিযোগ করতে পারেনি, আপনি এসব মিথ্যা কথা ছড়াচ্ছেন কেন?
বিরোধী দলের উপনেতা হতে না পেরে আপনি এসব করছেন, উপনেতা হতে চাইলে আপনি আমাদের বলতেন, আপনি তো বলেননি।’ তিনিও তেড়ে যান বাবলুর দিকে। এসময় তাদের মধ্যে বাক্য বিনিময় এবং হাতাহাতির উপক্রম হয়। পরে দলের কয়েকজন সংসদ সদস্যের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এ ঘটনার পর সংসদ ভবন এলাকায় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাপার এক সংসদ সদস্য জানান, ‘পরিস্থিতি মিটমাট করার চেষ্টা করা হচ্ছে’।
বুধবার বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী এবং এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গাকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এ নিয়ে দলটির মধ্যে আরেক দফা ভাঙনের মুখে পড়েছে।
সম্প্রতি কিছু গণমাধ্যামকে তাজুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘এরশাদ মন্ত্রী পদমর্যাদার বিশেষ দূতের পদ থেকে পদত্যাগ করুক। তারপর মন্ত্রিপরিষদে থাকা জাপার মন্ত্রীরাও পদত্যাগ করবেন।’ তাজুলের এই বক্তব্যে বেশ ক্ষুব্ধ হন এরশাদ।