DMCA.com Protection Status
title="শোকাহত

রেললাইন সংলগ্ন অবৈধ স্হাপনা উচ্ছেদঃ কে এই সিরাজ কমান্ডার?

1410534933ট্রেন দুর্ঘটনায় চারজন নিহত হওয়ার একদিন পর রাজধানীর কারওয়ানবাজারে রেললাইনের দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে রেল কর্তৃপক্ষ; কিন্তু আকস্মিক এই অভিযানে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রেললাইনের পাশের দোকানিরা। তাদের কথায় বেরিয়ে এসেছে ‘সিরাজ কমান্ডার’ নামে এক ব্যক্তির কথা, যিনি এসব অবৈধ স্থাপনা থেকে নিয়মিত ‘ভাড়া’ আদায় করেন।

 


শুক্রবার সকাল দশটা থেকে বেলা দুটা পর্যন্ত এ অভিযানে অংশ নেয় রেল পুলিশ ও রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর পাশাপাশি ঢাকা মহানগর পুলিশ। অভিযানের নেতৃত্বে থাকা রেলের ঢাকা বিভাগীয় এস্টেট কর্মকর্তা নুরুন্নবী কবীর গণমাধ্যমকে বলেন, প্রথম দিন কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই অভিযান শেষ হয়েছে। কারওয়ানবাজারে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (এফডিসি) ফটকসংলগ্ন  ক্রসিং থেকে তেজগাঁও রেল স্টেশন পর্যন্ত এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চলবে।




প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (এফডিসি) ফটক থেকে ২০০ গজ পর্যন্ত দুই পাশের দোকন ও অবৈধ ঘর উচ্ছেদ করা হয়েছে। সেখান থেকে আনুমানিক ৫০০ গজ দূরে তেজগাঁও ক্রসিংয়ের পশ্চিম অংশে থাকা কয়েকটি ঘরও উচ্ছেদ করা হয়েছে। তবে এফডিসি ফটকসংলগ্ন ক্রসিং এবং তেজগাঁও রেল স্টেশন এলাকার মাঝে রেললাইনের দুই পাশের কয়েকশ বস্তিঘর অক্ষতই রয়েছে।

আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় মাঝের ওই অংশের বস্তিগুলো উচ্ছেদ করা যায়নি বলে জানান নুরুন্নবী কবীর। হঠাত্ এই অভিযানের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার দুর্ঘটনার কারণে এদিকে আমাদের দৃষ্টি এসেছে। তাই এই অভিযান চালানো হচ্ছে।

 


আরো আগে কেন এই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়নি জানতে চাইলে রেলের এস্টেট কর্মকর্তা নুরুন্নবী কবীর বলেন, আগেও আমরা অনেককে ধরে নিয়েছি। দোকান করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পাওয়ার পর আবার এসে তারা এখানে দোকানদারি করতে বসে যায়। 




উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকালে কারওয়ানবাজার রেলক্রসিংয়ের পাশে দুই ট্রেনের মাঝে পড়ে ধাক্কায় চারজন নিহত এবং অন্তত ১৩ জন আহত হন। 


অভিযানে থাকা তেজগাঁও থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম বলেন, রেললাইনের পাশে এসব অবৈধ স্থাপনা থেকে নানা ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়ে আসছে। ট্রেন চলাচলের কারণে এদের প্রত্যেকের জীবন থাকে ঝুঁকিপূর্ণ। তিনি বলেন, এসব স্থাপনা উচ্ছেদ হলে এখনে মাদক ব্যবসা থাকবে না। আর দুর্ঘটনাও কমে আসবে। আরো আগে এসব স্থাপনা উচ্ছেদ না হওয়ার জন্য রেল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেন তেজগাঁওয়ের ওসি।

 


কারওয়ানবাজার রেলক্রসিংয়ের পূর্ব পাশে ‘বিল্লাল অটোমোবাইল’ নামের একটি গাড়ির গ্যারেজের মালিক বিল্লাল বলেন, আগে কিছু বলেনি। সকালে এসেই বুলডোজার দিয়ে আমাদের দোকান ভাঙা শুরু হয়। দুটো মাইক্রোবাসও ভেঙে দেয়া হয়েছে। রেলের জায়গায় অবৈধ দোকান করে ব্যবসা করেন কেন— এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা তো ভাড়া দিয়ে ব্যবসা করি। সিরাজ কমান্ডারকে নিয়মিত ভাড়া দিই।




স্থানীয় আরও অনেকেই এই সিরাজ কমান্ডারকে ‘ভাড়া’ দেয়ার কথা বললেও তার পরিচয় জানাতে পারেননি রেল কর্মকর্তারা। স্থানীয়রা জানান, এফডিসি ও তেজগাঁও রেল ক্রসিংয়ের মাঝামাঝি এলাকায় লাইনের পাশে একটি টিনের ছাউনি দেয়া ঘরে এই সিরাজ কমান্ডার থাকেন। তবে সেখানে গিয়ে ঘরটিতে তালা দেয়া দেখা যায়। আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে লাইনঘেঁষে তোলা ওই ঘরেও উচ্ছেদকারীদের হাত পড়েনি।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!