বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সাথে সম্প্রসারিত বন্ধুত্ব ও বেসামরিক ইস্যুতে দীর্ঘকালীন সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর এশিয়া-প্যাসিফিক অংশ। এ লক্ষ্যে স্বল্পমেয়াদী কার্যসূচী নয়, দীর্ঘমেয়াদী কৌশল ও কর্মপদ্ধতি নিয়ে এগুচ্ছে ইউএস আর্মি এশিয়া প্যাসিফিক।
এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে ইউএস আর্মি এশিয়া প্যাসিফিক। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক নীতিতে বাংলাদেশের বর্ধিত গুরুত্বের প্রতিফলন হিসেবেই এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোর সেনা কর্মকর্তাদের নিয়ে বিশেষ সম্মেলন ‘প্যামস’ শুরু হচ্ছে বাংলাদেশে।
সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর এশিয়া-প্যাসিফিক অংশের ক্ষমতা ও কাজের পরিধি বাড়িয়েছে দেশটির সরকার। এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে সামরিক অপারেশন পরিচালনার পাশাপাশি নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীকে উপযোগী করে তোলা হয়েছে। বর্তমানে একজন চার তারকা জেনারেলের অধীনে কাজ করছে ইউএস আর্মি এশিয়া প্যাসিফিক।
রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক গতিশীলতার কারণে এই অঞ্চলের রাষ্ট্রগুলোকে নিয়ে সদাসতর্ক থাকতে হয় যুক্তরাষ্ট্রকে। প্রায়ই পরিবর্তন আনতে হয় সামরিক নীতিতেও। ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলকে নিয়ে নতুন করে নীতি-নির্ধারণ করা হয়। ওই নীতিটি হচ্ছে, শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রেখে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি ও তাৎপর্য বাড়ান। এই নীতির অংশ হিসেবে বাংলাদেশসহ এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশসমূহে প্রত্যক্ষ নয়, পরোক্ষ সামরিক প্রভাব বাড়াতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
বাংলাদেশসহ এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অন্যতম লক্ষ্যগুলো হচ্ছে, দেশগুলোর সেনাবাহিনীর সাথে সহযোগিতা বাড়ান, এয়ার ও মিসাইল ডিফেন্স ক্ষমতা বাড়ান, দেশগুলোর নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বাড়ান, যে কোন সময়ে সামরিক অপারেশন চালানর মতো উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত রাখা ইত্যাদি।
কি এই প্যামস সম্মেলন?
প্যামসের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক মার্কিন সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল হার্বার্ট ওলফ। ঢাকায় শুরু হচ্ছে ৩৮তম প্যাসিফিক সেনা ব্যবস্থাপনা সভা (প্যাসিফিক আর্মি ম্যানেজমেন্ট সেমিনার-প্যামস)। মার্কিন সামরিক বাহিনী আমেরিকার বাইরে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলকে। এশিয়া-প্যাসিফিক ও ভারত মহাসাগর অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তারা বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত প্যামস এ যোগ দেবেন। এ উপলক্ষে এসব অঞ্চলের ২৩টি দেশের সেনা ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা ঢাকায় আসবেন।
এবার প্যামস-এর মূল বক্তব্য ‘এশিয়া-প্রশান্ত অঞ্চলে নতুন মেরুকরণ: সেনাবাহিনীর জন্য সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ’। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখবেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূইয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের কমান্ডার, আর্মি, প্যাসিফিক জেনারেল ভিনসেন্ট ব্রুকস।
কি নিয়ে আলোচনা হবে প্যামস সম্মেলনে
এবারের সভার আলোচনার বিষয়বস্তু হলো- সহযোগিতা চর্চা, অপ্রচলিত নিরাপত্তাজনিত অভ্যন্তরীণ কর্মসূচি উন্নয়ন, প্রচলিত ও অপ্রচলিত হুমকি মোকাবেলায় ভারসাম্য রক্ষায় করণীয়, সামরিক, বে-সামরিক ও বহুজাতিক কর্পোরেশনের ভবিষ্যতের স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য অংশ এবং পরিবেশজনিত নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনীর সাড়া দেওয়ার দক্ষতা বৃদ্ধি।