ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদের সদ্য প্রকাশিত বই এ বিভিন্ন বিতর্কিত এবং অসত্য তথ্য প্রদান করেছেন তিনি ,মন্তব্য করেছেন বিএনপির দপ্তর সম্পাদক রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ।আজ বিএনপি কেন্দ্রীয় অফিসে এক সংবাদ সম্বেলনে তিনি একথা বলেন।তিনি আরও বলেন ,দলের গুরুত্বপূর্ন পদে থেকেও জনাব মওদুদ এ বইয়ে দেশনেত্রীর বিভিন্ন সময়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন যা অনঅভিপ্রেত এবং অবিবেচনা সূলভ।
এদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এর প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘আমার বইটি বিস্তারিত না পড়ে কোনো মন্তব্য করা ঠিক নয়।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বে থাকা যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী যে মন্তব্য করেছেন তা সঠিক নয়। বইটি বিস্তারিত পড়ে মন্তব্য করা উচিত ছিল।’
সোমবার বেলা দেড়টার দিকে সুপ্রিম কোর্টের অ্যানেক্স ভবনের সামনে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন।
এ সময় মওদুদ জানান, তার বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মাহবুব উল্লাহ কোনো বক্তব্য দেননি। তার ওপর কেন হামলা করা হলো, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ড. মাহবুবউল্লাহ বিভিন্ন আলোচনা সভায়, টকশোতে সরকারবিরোধী কথা বলেন। এজন্য তার ওপর এ হামলা হতে পারে।’
উল্লেখ্য, সোমবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, ‘বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ব্যক্তি স্বার্থের প্রশ্নে সময় সময় রঙ বদলান।’
তিনি বলেন, ‘মওদুদ আহমদ নিজের বাড়ি রক্ষার জন্য ক্ষমতাসীনদের সন্তুষ্ট করতে তার সদ্য প্রকাশিত বইয়ে নানা বিতর্কিত কথা লিখেছেন। তার মতো একজন দলছুট, নীতিছুট, আদর্শছুট মানুষের ছাপানো বইয়ের বক্তব্যে আমাদের কিছু আসে যায় না।’
‘বাংলাদেশ: ইমারজেন্সি অ্যান্ড দি আফটারম্যাথ: ২০০৭-২০০৮’ বইটি না পড়লেও বিদেশ থেকে গণমাধ্যমে বইটি সম্পর্কে জেনেছেন বলে জানান রিজভী।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে জঙ্গিবাদ, ওয়ান ইলেভেনের প্রেক্ষাপটের বিষয়ে মওদুদ আহমদ যা লিখেছেন, তার প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘২০০৬ সাল পর্যন্ত মওদুদ আহমদ কোন সরকারের মন্ত্রী ছিলেন? যদি জঙ্গিবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থেকে থাকে তাহলে এর প্রতি বাদে তিনি পদত্যাগ করেননি কেন অথবা এই বিষয়ে তখন কোন রা করেননি কেনো ?’
রিজভী বলেন, ‘তিনি (মওদুদ) লিখেছেন, ১/১১ পরবর্বেতি সংকটের সময় বেগম জিয়া দলের চেয়ে তার দুই সন্তানের বিষয়ে বিষয়ে বেশী চিন্তিত ছিলেন এবং খালেদা জিয়া তার সন্তানদের মুক্তির জন্য চেষ্টা করেছেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া যে সময় মুক্তি পেয়েছিলেন সে সময় তো দেখা গেলো ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সাহেবও মুক্তি পেয়েছিলেন। এর ২/৩ মাস পর বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও মুক্তি পেয়েছিলেন।’
রিজভী বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার ওপর অনেক চাপ ছিল। তিনি তাদের কথা শোনেননি বলে তার ছেলেদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। তার বড় ছেলে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান লন্ডনে চিকিৎসাধীন। তিনি এখনও খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটেন।’
প্রসঙ্গত, ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড (ইউপিএল) থেকে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ: ইমারজেন্সি অ্যান্ড দি আফটারম্যাথ: ২০০৭-২০০৮’ বইটি মওদুদ লিখেছেন কারাবন্দী থাকা অবস্থায়। ইংরেজিতে লেখা বইটিতে মওদুদ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্মকাণ্ড, রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযান, দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের নামে সেনা কর্মকর্তাদের কর্মকাণ্ড, দুর্নীতি দমন কমিশনের অবস্থা, বিচার বিভাগ, অর্থনীতি, রাজনৈতিক সমঝোতা, সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদের ভূমিকা এবং ২০০৮-এর জাতীয় নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেছেন।