যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিলের রায় ঘিরে আবার রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান নিয়েছেন গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বুধবার এই আপিলের রায় ঘোষণার সময় জানালে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই মঞ্চের কর্মীরা শাহবাগে জড়ো হতে থাকেন।
সন্ধ্যা ৬টায় শাহবাগ থেকে মঞ্চের কর্মীদের একটি মিছিল টিএসসি ঘুরে আবার শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।
মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার বলেন, “আপিল বিভাগেও রাজাকার সাঈদীর সর্বোচ্চ সাজার রায় বহাল থাকবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।”
ইমরান বলেন, “সাঈদী চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। অন্য কোনো রায় হলে তাতে গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে না, ন্যায়বিচার ভূলুণ্ঠিত হবে।”
এর আগে যুদ্ধাপরাধ মামলার রায়ের পর দেশজুড়ে জামায়াতকর্মীদের তাণ্ডবের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে মঞ্চের মুখপাত্র বলেন, “ওই তাণ্ডব মোকাবেলায় সবাইকে দল-মত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”
ইমরান জানান, শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরে মধ্যরাত পর্যন্ত এই অবস্থান চলবে। রায়ের আগে বুধবার সকাল ৮টা থেকে আবার শাহবাগে অবস্থান নেবেন মঞ্চের কর্মীরা।
বুধবার সকাল ৯টার পর আপিল বিভাগ থেকে সাঈদীর মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণার কথা রয়েছে, যিনি একাত্তরে পরিচিত ছিলেন ‘দেইল্যা রাজাকার’ হিসাবে।
প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করবে।
যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রথম অভিযুক্ত ব্যক্তি হিসাবে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সাঈদীর বিচার শুরু হয়েছিল ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর, রায় হয় ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি।
যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে দণ্ডিতদের মধ্যে সাঈদী দ্বিতীয় ব্যক্তি যার মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হতে যাচ্ছে। এর আগে তার দলেরই নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার আপিল নিষ্পত্তির পর গত বছরের ডিসেম্বর তার মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর হয়।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ট্রাইব্যুনালে কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন দেয়ার পর তার ফাঁসির দাবিতে ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণে গড়ে উঠে শাহবাগের এই আন্দোলন।
তবে কিছুদিন আগে এই মঞ্চ পরিচালনায় নেতৃবৃন্দের মধ্যে বিভক্তির সৃষ্টি হয়।