২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় মোট ৫২ জন আসামির নাম ও পরিচয় সংসদে প্রকাশ করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
তবে আদালতে বিচারাধীন কোন মামলায় প্রমান সাপেক্ষে দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত এভাবে জাতীয় সংসদে অভিযুক্তদের নাম প্রকাশ করা আদৌ আইন সম্মত কিনা তা নিয়ে জনমনে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
মঙ্গলবার দশম জাতীয় সংসদের তৃতীয় অধিবেশনে বেগম ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী এই তালিকা প্রকাশ করেন। এই তালিকায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ মোট ১৯ জন আসামিকে পলাতক দেখানো হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, ‘২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট যে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা হয় তার পরিপ্রেক্ষিতে যে মামলা দায়ের করা হয়েছে তা বর্তমানে সাক্ষ্য গ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে। ওই মামলায় মোট সাক্ষীর সংখ্যা ৪৯১ জন। মোট আসামির সংখ্যা হত্যা মামলায় ৫২ জন এবং বিস্কোরক দ্রব্য আইনের মামলায় ৪১ জন।’
এই তালিকায় মোট ১৯ জন আসামিকে পলাতক দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে বিএনপির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট তারেক রহমানসহ বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, মাওলানা মো. তাজউদ্দিন, হানিফ পরিবহনের মালিক মো. হানিফ, সাবেক ডিজিএফআই’র কর্মকর্তা লে. কর্ণেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ারদার ও মেজর জেনারেল এ. টি. এম আমিন প্রমুখের নাম রয়েছে।
এছাড়া জামিনপ্রাপ্ত আসামির তালিকায় রয়েছে খালেদা জিয়ার বোনের ছেলে ও তার এ পি এস লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, পুলিশের সাবেক ৩ জন আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা, খোদা বক্স চৌধুরী, ও শহুদুল হকসহ মোট ৮ জনের নাম।
হাজতী ২৫ জন আসামির নামের তালিকায় রয়েছেন- মুফতি হান্নান মুন্সী, সাবেক উপমন্ত্রী মো. আবদুস সালাম পিন্টু, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক মন্ত্রী ও জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ উল্লেখযোগ্য।
আরেকটি প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে প্রেরিত টাকা আত্মসাতের দায়ে ছয় জনকে অভিযুক্ত করে মামলা করা হয়। ২০০৮ সালের ৩ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রমনা থানায় এ বিষয়ে একটি মামলা করে। যার মামলা নম্বর-৮। বর্তমানে মামলাটি বিশেষ জজ-৩ আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ১৭ সেপ্টেম্বর বুধবার নির্ধারণ করা আছে।’
সংসদে মন্ত্রীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার আসামিরা হলেন- বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, মমিনুর রহমান, কাজী সলিমুল হক ওরফে ইকোনো কামাল, শরফুদ্দিন আহম্মেদ এবং ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী।
মো. আয়েন উদ্দিনের এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী জানান, ‘সংবিধানের ১০০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতির অনুমোদন সাপেক্ষে রাজধানী ব্যতিত দেশের যেকোনো স্থানে হাইকোর্ট বিভাগের সার্কিট বেঞ্চ স্থাপন করতে পারেন। এ বিষয়ে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার দায়িত্ব একমাত্র বিচার বিভাগের উপর।