DMCA.com Protection Status
title="৭

শেষ পর্যন্ত সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম ছাড়লেন মুক্তিযুদ্ধের উপ-সর্বাধীনায়ক এ কে খন্দকার,’বীর উত্তম

index5 (1)নিজের সদ্য প্রকাশিত বই নিয়ে তুমুল বিতর্ক,তার নিজ দলের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য এবং অপমানের মধ্যে সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম থেকে পদত্যাগ করেছেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান এ কে খন্দকার।



ফোরামের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হারুন হাবীব বুধবার সন্ধ্যায় জানান,এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে বয়সজনিত কারণ দেখিয়েছেন এ কে খন্দকার। ‘আমরা মাত্র তার একটি চিঠি পেয়েছি। সেখানে তিনি বয়সজনিত কারণে সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগের কথা জানিয়েছেন।’

মুক্তিবাহিনীর উপপ্রধান ৮৪ বছর বয়সী এ কে খন্দকারের লেখা ‘১৯৭১: ভেতরে বাইরে’ গত ৩ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে তা নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা চলছে। বইয়ে তিনি লিখেছেন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু তার ভাষণ শেষ করেছিলেন ‘জয় পাকিস্তান’ বলে। আর সশস্ত্র যুদ্ধের কোনো প্রস্তুতি ছিল না রাজনৈতিক নেতৃত্বের।

তারপর থেকে এই নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। সং সদে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরা শেখ হাসিনার গত সরকারের মন্ত্রী খন্দকারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনার দাবিও তোলেন। ‘তবে যে বই নিয়ে এত বিতর্ক, সেই বই সম্পর্কে তিনি চিঠিতে একটা শব্দও বলেননি,’ বলেন হারুন হাবীব।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিকে সামনে এনে সাত বছর আগে মুক্তিযুদ্ধের সমর নায়কদের নিয়ে এ কে খন্দকারের নেতৃত্বে গঠিত হয় সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম, শুরু থেকে এর চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়ায় জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিলের রায়ে মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে আমৃত্যু সাজা ঘোষণার দিনই ওই দায়িত্ব ছাড়লেন খন্দকার।

বই নিয়ে বিতর্কের মধ্যে সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম জানিয়েছিল, তারা সংগঠনের প্রধানের বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন এবং এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।



শুক্রবার ফোরামের নির্বাহী কমিটির নির্ধারিত সভা রয়েছে, তার আগেই চেয়ারম্যানের পদত্যাগপত্র এল। হারুন হাবীব বলেন, “ওই সভায় তার চেয়ারম্যান পদ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা রয়েছে। এ বিষয়টি জেনেই হয়ত তিনি এই চিঠি দিয়ে থাকতে পারেন।”

‘তার চিঠি তো এখন পেয়েছি। আর মিটিংয়ের সিদ্ধান্তটি আমাদের অনেক আগের,’ বলেন তিনি।

সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম গঠনের সময় এর মহাসচিব ছিলেন সাবেক সেনাপ্রধান হারুনুর রশীদ। তিনি ডেসটিনি গ্রুপের চেয়ারম্যানও ছিলেন। ডেসটিনির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ ওঠার প্রেক্ষাপটে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম ছাড়েন হারুন। এখন চেয়ারম্যানও পদত্যাগ করলেন।

বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রথম প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল এ কে খন্দকার সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের আমলে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। পরে এইচ এম এরশাদের সামরিক শাসনামলে পরিকল্পনামন্ত্রী ছিলেন খন্দকার।

এরপর ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের টিকিটে পাবনা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর পাঁচ বছর শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভায় পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা এ কে খন্দকারের বইটি নিষিদ্ধের দাবি তুলেছেন আওয়ামী লীগের কয়েকজন সংসদ সদস্য। কোনো মহলের প্ররোচনায় তিনি এই বই লিখেছেন বলেও সন্দেহ প্রকাশ করেন তারা।

অন্যদিকে বিএনপি নেতারা বলছেন, এ কে খন্দকারের বইয়ের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন বক্তব্যের অসারতা প্রমাণিত হয়েছে। তবে নিজের বই প্রকাশের পর এই বিতর্কের মধ্যে নীরবই রয়েছেন বীরউত্তম খেতাবধারী এই মুক্তিযোদ্ধা।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!