DMCA.com Protection Status
title=""

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সচিবকে রক্ষায় মন্ত্রী-এমপি-উপদেষ্টা!

health-secretary-neazuddinপাঁচ সচিবের মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল ও স্থগিত হওয়ার পরও এ বিষয়ে নানা নাটক শুরু হয়েছে। বাতিল হওয়া এক সচিবের মুক্তিযোদ্ধা সনদ ফিরিয়ে দিতে মন্ত্রণালয়ের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে প্রভাবশালীরা। এই সচিব যুক্তরাষ্ট্রে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গীও হয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্বাস্থ্য সচিবের পক্ষে সাফাই গেয়ে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে লবিং করছেন বেশক’জন প্রভাবশালী। লবিস্ট তালিকায় রয়েছেন সরকারের উপদেষ্টা, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। তাদের সবার দাবি, স্বাস্থ্য সচিব লোকটি খুব ভালো। তিনি অনেক স্কুল-কলেজ নির্মাণ করেছেন। এলাকায় দানখয়রাত করার ক্ষেত্রে তার সুনাম আছে। এমন ছোটখাটো ভুলের জন্য তাকে হেনস্থা করার কোনো মানে হয় না। যা হওয়ার হয়েছে, এ বিষয়টি এখানেই শেষ করা উচিৎ।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করে এসব বিষয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।

তবে চার সচিবের মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল এবং এক জনের স্থগিত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবের বিরুদ্ধে দীর্ঘসূত্রিতার অভিযোগ উঠেছে। মন্ত্রী বারবার তাগাদা দেয়ার পরও এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন দিতে তালবাহানা করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এমএ হান্নান।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার অফিসে এসেই মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক পাঁচ সচিবের মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করতে বলেন। মন্ত্রীর আদেশ শোনার পর থেকেই এ নিয়ে শুরু হয় নানা তালবাহানা। এরপর কয়েক দফা তাগাদা দিলেও মন্ত্রীর নির্দেশ কাজে আসেনি। বিভিন্ন অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

এদিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সচিবকে উদ্দেশ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি আসছি। আপনি থাকেন। এসেই সনদ বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি করবো।’

একথা বলে মন্ত্রী চলে যাওয়ার পর পরই সচিব তার কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ক্ষোভের সঙ্গে বলতে থাকেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিলের আদেশ জারি করতে তোমাদের এত আগ্রহ কেন? তোমরা বাসায় চলে যাও। মন্ত্রী অফিসে ফেরার আগে পর্যন্ত আমি থাকছি।’

বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মন্ত্রী ফিরে আসার পর সচিবকে তার কক্ষে ডেকে পাঠান। সচিব আসা মাত্রই সনদ বাতিলের ফাইলের বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চান তিনি। তখন সচিব ডেস্ক অফিসার সলিমুল্লাহকে খুঁজতে থাকেন (যদিও সচিবের নির্দেশে আগেই অফিস ত্যাগ করেন ডেস্ক অফিসার)। কয়েকবার খোঁজার পর না পেয়ে মন্ত্রীকে উদ্দেশ করে সচিব বলেন, ‘স্যার আজকে অফিসের সবাই চলে গেছেন। কাল সকালে এসেই প্রজ্ঞাপন জারি করবো।’

পরদিন সোমবার নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই অফিসে আসেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী। তবে সচিব বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে দুপুরে কার্যালয়ে আসেন। এরই মধ্যে মন্ত্রী তাকে কয়েকবার খোঁজাখুঁজি করেও পাননি। মন্ত্রীর পীড়াপীড়িতে বিকেলে চার সচিবের মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল এবং একজনের সনদ স্থগিত করার আদেশ জারি করেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যার কিছু পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে দেশ ছাড়েন। সনদ বাতিলের আদেশটি প্রধানমন্ত্রীকে দেখিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় যাতে তৎক্ষণাৎ কোনো সিদ্ধান্ত না নেয় এজন্যই সোমবার দিনের শেষ সময়ে আদেশ জারি করা হয়। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে স্বাস্থ্য সচিব নিয়াজ উদ্দিন মিয়ার যাওয়ার বিষয়টি মসৃণ করার জন্যও এই কৌশল নেয়া হয় বলে সূত্রে জানা যায়।

উল্লেখ্য, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তে মুক্তিযোদ্ধা সনদ নেয়ার প্রক্রিয়ায় অনিয়ম প্রমাণিত হওয়ায় চারজন সচিবের মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল করা হয়। একই অভিযোগে অপরজনের সনদ স্থগিত করা হয়।

মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল হওয়া চার সচিব হলেন- স্বাস্থ্য সচিব এম নিয়াজ উদ্দিন মিয়া, সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সচিব একেএম আমির হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব কে এইচ মাসুদ সিদ্দিকী (বর্তমানে ওএসডি) এবং একই মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (ওএসডি) আবুল কাসেম তালুকদার।

অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামান বর্তমানে প্রতিমন্ত্রী মর্যাদায় বেসরকারিকরণ কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন। তার 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!