DMCA.com Protection Status
title="৭

অবিশ্বাস্য হলেও সত্যঃ ম্যানিলায় নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতের সম্মানে বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূতের নৈশভোজ

93180_1কোনো প্রকার রাষ্ট্রীয় সম্পর্ক না থাকলেও ফিলিপাইনে নিযুক্ত   বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) জন গমেজ পিএসসি ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ম্যানাসে বারের (Menashe Bar) সম্মানে তার বাসায় নৈশভোজের আয়োজন করেছেন। এটা সম্পূর্ন আইন বহির্ভূত কর্মকাণ্ড বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।



জানা গেছে, ফিলিপাইনের ম্যানিলায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) জন গমেজ পিএসসি তার বাসায় এ নৈশভোজের আয়োজন করেন।

দ্য রিপোর্টের অনুসন্ধানে এই তথ্য জানা গেছে।

রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) জন গমেজ পিএসসি বৃহস্পতিবার বিকেলে মুঠোফোনে দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘হ্যাঁ, ওনাকে নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। উনি আসলে মুরুব্বি শ্রেণীর এবং এখানে সকলের মধ্যে জ্যেষ্ঠ। সকল রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে তার খুব ভালো সম্পর্ক। আমার সঙ্গেও তার খুব ভালো সম্পর্ক। ম্যানাসে বার (Menashe Bar) খুব ভালো কূটনীতিক। তাই তাকে নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। আর ওই নৈশভোজের দাওয়াতে আরও ১৪-১৫ জন রাষ্ট্রদূত ছিলেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘নৈশভোজের আয়োজনটি আমার ব্যক্তিগত আয়োজন ছিল। আমার স্ত্রীও কানাডা থেকে এসে অংশ নেন। ওই ভোজের জন্য রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে কোনো অর্থ নেওয়া হয়নি।’

জন গমেজ বলেন, ‘ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে নৈশভোজে আমন্ত্রণ করা আইন বহির্ভূত কিনা- তা ওইভাবে ভেবে দেখিনি। সম্পর্ক ভালো রাখার তাগিদে আমন্ত্রণ করেছিলাম। তিনি খুব ভালো মানুষ। তার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তাই আমন্ত্রণ করেছিলাম।’

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বৃহস্পতিবার দুপুরে তার কার্যালয়ে দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘বিষয়টি আমি জানি না। অবশ্যই খতিয়ে দেখব। কেননা ইসরায়েলের কোনো রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশের কোনো অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা দ্য রিপোর্টকে জানিয়েছেন, রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) জন গমেজ পিএসসি ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ম্যানাসে বার (Menashe Bar) সম্মানে তার বাসায় নৈশভোজের আয়োজন করেন। এই নৈশভোজের খরচ সরকারি তহবিল থেকে মেটানো হয়।

তিনি আরও জানান, ওই রাষ্ট্রদূতের বিরুদ্ধে অনিয়মের অনেক অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি নববর্ষ, ঈদ উদযাপনসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দূতাবাসের কর্মকর্তাদের বাসা থেকে খাবার নিয়ে আসতে বাধ্য করেন। আবার ওই সকল অনুষ্ঠানের জন্য রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে অর্থও নেন।



রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) জন গমেজ নিয়মিত গলফ খেলেন। ফিলিপাইনে তিনি ‘বাংলাদেশ-ফিলিপাইন ফ্রেন্ডশিপ গলফ টুর্নামেন্ট’-এর আয়োজন করেন। ওই টুর্নামেন্টের জন্য তিনি ফিলিপাইনে বসবাস করা বাঙালী গোষ্ঠীসহ বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ফিলিপাইনের মুদ্রা পেসোর ৬ লাখ পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করেন। যার মধ্য থেকে ৫০ হাজার পেসো খ্রিষ্টীয়ান চ্যারিটিকে অনুদান হিসেবে দান করেন।



এ ছাড়াও দূতাবাসের নিয়োগ করা গাড়িচালকের বেতনের অর্থ আত্মসাৎসহ দুর্নীতির আরও অনেক অভিযোগ পাওয়া গেছে রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) জন গমেজের বিরুদ্ধে।



এ বিষয়ে রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) জন গমেজ দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘এ সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। এক শ্রেণীর ষড়যন্ত্রকারীরা ইচ্ছা করে আমার বিরুদ্ধে এ সব ষড়যন্ত্র করছে। এখানে এর আগে রাষ্ট্রদূত মাজেদা বেগম ছিলেন। তার বিরুদ্ধেও এমন ষড়যন্ত্র করা হয়।’



প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রদূত মাজেদা বেগমের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতিসহ অনেক অনিয়মের অভিযোগের প্রমাণ দুর্নীতি দমন কমিশনসহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সময়ে করা তদন্তে প্রমাণ মিলেছে।

জন গমেজ আরও বলেন, ‘আমার এখানে মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, তোফায়েল আহমেদ, ভূমিমন্ত্রীসহ সরকারের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের অনেকেই এসেছেন। তারাতো আমাকে দেখে গিয়েছেন, আমি কী করছি। আমি সেনাবাহিনী থেকে এসেছি এবং এখানে ভালো করছি।’

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!