ঈদ সামনে রেখে চাঁদাবাজি পুরনো ঘটনা। দুই ঈদের বাইরেও প্রতিদিন চাঁদাবাজি হচ্ছে। কোটি কোটি টাকা আদায় করা হচ্ছে মানুষের কাছ থেকে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রাকভর্তি পশু আসা শুরু হয়েছে রাজধানী ঢাকায়।এবারের ঈদে সরকার সমর্থকদের চাঁদাবাজী অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করবে বলে ভুক্তভোগীদের ধারনা।
এবার গরু আনতে পথে পথে দ্বিগুণ চাঁদা গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। ঢাকায় গরু এনে বেপারিরা পড়েছেন আরেক বিপাকে। ট্রাকভর্তি গরু হাটে প্রবেশের সময় অন্য হাটের লোকজন জোর করে গরু নামিয়ে নিচ্ছে বলে তারা অভিযোগ করছেন।
ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, কোরবানির পশু আনতে প্রতি বছর চাঁদা দিতে হয়। তবে এ বছর চাঁদার পরিমাণ দ্বিগুণ। আগে প্রতি গরুতে ২ হাজার ৫০০ টাকা খরচ পড়ত। এবার ৫ হাজার টাকা খরচ পড়ছে। এতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে পশু ব্যবসায়ীদের। তারা বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করেও প্রতিকার পাচ্ছেন না। চাঁদাবাজরা এতটাই বেপরোয়া যে, তারা কাউকে তোয়াক্কা করে না।
পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পথে পথে চাঁদাবাজি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্য জড়িত থাকলেও রেহাই পাবে না। কিন্তু বাস্তবে এ কথার কোনো কার্যকারিতা নেই।
চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটছে পুলিশের সামনেই। অনেক জায়গায় পুলিশ সদস্যরাও আদায় করছে চাঁদা। প্রতিকার চাওয়ার কোনো স্থান পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। মোড়ে মোড়ে ট্রাফিক পুলিশ, বিভিন্ন সমিতি ও বাজার ব্যবসার নামে পশু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হচ্ছে।
পশু ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্ডার থেকে ঢাকায় আসতে ১২ জায়গায় চাঁদা দিতে হয়। রাস্তার মোড়ে মোড়ে পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়ে প্রতিটি গাড়ি থেকে চাঁদা আদায় করছে। আমাদের প্রশ্ন, এসব দেখার কি কেউ নেই?
চাঁদাবাজি নিয়ে আলোচনা দেশজুড়ে। নীরবে আর সরবে প্রতিদিন চাঁদাবাজি চলছে। ঈদের মতো উৎসব এলে তাদের একবারে পোয়াবারো অবস্থা। রাজনীতিক, পুলিশ আর স্থানীয় সন্ত্রাসীরা মিলে দেশটাকে চাঁদাবাজির বেড়াজালে ঘিরে রেখেছে। এরা কাউকে ভয় পায় না। এদের খুঁটির জোর এত বেশি যে, গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রচারিত হলেও তাদের কিছু যায়-আসে না।
কিছুদিন আগে একটি দৈনিকে বলা হয়েছিল, শীর্ষ সন্ত্রাসীরা দেশের বাইরে থেকে চাঁদাবাজি করছে। এরা মোবাইলের মাধ্যমে তাদের লোকদের দিয়ে চাঁদাবাজি করছে। বিদেশে তারা বেশ আরাম-আয়েশে দিন কাটাচ্ছে। তাদের অনেকের অবস্থান পুলিশের কাছে পরিষ্কার। তারপরও সরকার কেন তাদের ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিচ্ছে না, তা রহস্যজনক।
সুযোগ কেউ হাতছাড়া করতে রাজি নয়। ক্ষমতাসীন দলের কেউ কেউ অনায়াসে চাঁদাবাজি করছেন। বিত্তশালী লোকদের ধরে নিয়ে আটকে রাখলেই টাকা। এ অবস্থা চলতে দিলে সবকিছু ধসে পড়বে। চাঁদাবাজি নামের এ দুর্বৃত্তপনা বন্ধ করতে দ্রুত কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।