বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভার কোনো কোনো সদস্যের সমালোচনা করে আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী বলেছেন, ১৫ আগস্ট যে লক্ষ্য নিয়ে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল, তা বাস্তবায়নে এখনও ষড়যন্ত্র চলছে।
বর্তমান মন্ত্রিপরিষদের মধ্যেও এই ষড়যন্ত্রকারীরা রয়েছে। রবিবার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। ১১ নভেম্বর যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সফল করার লক্ষ্যে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আইনমন্ত্রীর অপসারণ দাবি করেন উপস্থিত নেতারা।
ওমর ফারুক বলেন, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের চেহারা আস্তে আস্তে জনগণের কাছে স্পষ্ট হতে চলেছে। লতিফ সিদ্দিকী ও এ কে খন্দকারের পর পিয়াস করিমের পক্ষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সাফাই গেয়ে বিবৃতি দেয়ার ঘটনা ষড়যন্ত্রের অংশ হতে পারে।
সম্প্র্রতি নিউইয়র্কে হজ নিয়ে করা এক মন্তব্যের জন্য মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেয়া হয় লতিফ সিদ্দিকীকে। এর আগে গত সরকারের মন্ত্রী এ কে খন্দকার এক বইয়ে বিতর্কিত কিছু তথ্য দেন, যার সমালোচনায় মুখর আওয়ামী লীগ নেতারা।
এরপর গত রবিবার পিয়াস করিমকে নিয়ে বক্তব্য দেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, পিয়াস করিম একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রচারপত্র বিলি করতে গিয়ে আটক হয়েছিলেন। আর তাকে ছাড়াতেই কুমিল্লায় শান্তি কমিটিতে যোগ দিতে ‘বাধ্য’ হন তার বাবা এম এ করিম। এছাড়া ৮৬ বছর বয়সী ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে ড. পিয়াস করিমের বাবা অ্যাডভোকেট এমএ করিম তুলে দিয়েছিলেন এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন আইনমন্ত্রী।
মন্ত্রীর বক্তব্যের জবাবে ওমর ফারুক বলেন, পিয়াস করিম ছিলেন শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবদুল করিমের ছেলে। পিয়াস করিম একাধিকবার বিভিন্ন টকশোতে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি শহীদ মিনারে বিশ্বাসী নন। এ ছাড়া ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত ছিলেন রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই আন্দোলনের প্রথম প্রস্তাবক। সে কারণে আবদুল করিম ধীরেন্দ্র নাথ দত্তকে ২ মাস ক্যান্টনমেন্টে বন্দি অবস্থায় আটকে রেখে হাত-পা ভেঙে, নির্যাতন করে হত্যা করেছিল।
আইনমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে ষড়যন্ত্রের আভাস পাচ্ছেন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের চেয়ারম্যান। আইনমন্ত্রীর বক্তব্যকে ‘ষড়যন্ত্রের অংশ’ উল্লেখ করে সংগঠনের নেতাকর্মীদের তা মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
লতিফ সিদ্দিকীকে মন্ত্রিপরিষদ থেকে অব্যাহতি দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেছেন ওমর ফারুক। অন্যদিকে অনেকে দাবি জানালেও এ কে খন্দকারের বিতর্কিত বইটি বাজেয়াপ্ত না করার সিদ্ধান্তকেও ‘সঠিক’ মনে করছেন তিনি।