DMCA.com Protection Status
title="শোকাহত

কোবানি ইস্যুতে ‘সদয়’ হলো তুরস্কঃ আইএস এর বিরুদ্ধে যুদ্ধরত কুর্দীদের নিজভূমি ব্যবহারের অনুমতি

image_987_147882নিজস্ব সেনা, যুদ্ধাস্ত্র বা রসদ সরবরাহে রাজি না থাকলেও শেষ পর্যন্ত কোবানি ইস্যুতে কিছুটা সদয় হয়েছে তুরস্ক সরকার। রোববার তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইরাকি কুর্দি সেনারা চাইলে তুরস্কের সীমান্ত অতিক্রম করে কোবানির কুর্দি যোদ্ধাদের সঙ্গে যোগ দিতে পারে।

এদিকে, রোববার আমেরিকান বিমান থেকে কোবানির কুর্দি সেনাদের অস্ত্র ও রসদ সরবরাহ করেছে। এর মাধ্যমে আমেরিকা প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে সিরিয়ার আসাদবিরোধী কোনো বিদ্রোহীগোষ্ঠীর কাছে অস্ত্র সরবরাহ করল। এদিকে, কোবানির সবশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো তথ্য পাওয়া না গেলেও বার্তা সংস্থা সিএনএন একটি সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, বিমানের মাধ্যমে আইএস সিরিয়ার একটি হাসপাতালে তাদের ৭০ জন গুরুতর আহত যোদ্ধা পাঠিয়েছে।

এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে, গত কয়েকদিনের লড়াইয়ে বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সংগঠনটির। এছাড়া ইরাকের রাজধানী বাগদাদের একটি শিয়া মসজিদে রোববার আত্মঘাতী বোমা হামলায় ২১ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। সংবাদসূত্র: বিবিসি, আল-জাজিরা, সিএনএন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু জানান, 'আমরা ইরাকের কুর্দি সেনাবাহিনীর পেশমেরগার সদস্যদের আমাদের সীমান্ত পার হয়ে কোবানিতে চলমান যুদ্ধে যোগ দিতে সহযোগিতার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আইএসের হাতে কোবানির পতন দেখার কোনো ইচ্ছা তুরস্ক সরকারের নেই।'

সেপ্টেম্বর মাসে কোবানি সঙ্কট শুরু হওয়ার পর থেকেই তুরস্কে অবস্থানকারী পেশমেরগার অনেক সদস্যই সীমান্ত পেরিয়ে কোবানির যুদ্ধে যোগ দিতে চায়। কিন্তু তুরস্ক সরকার তাদের বাধা দেয়ায় দেশব্যাপী বিক্ষোভ-সংঘর্ষ শুরু করে কুর্দিরা, যাতে প্রায় ৩০ জনের মৃত্যু ঘটে। আল-জাজিরা তুরস্কের এই নতুন পদক্ষেপকে বিশ্লেষণ করে বলেছে, 'তুরস্কের পক্ষ থেকে এই ধরনের ঘোষণা অনেকটাই আকস্মিক। শনিবার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের ফোনালাপে এ নিয়ে কথা হয়ে থাকতে পারে।

তুরস্ক সীমান্তে অপেক্ষায় থাকা পেশমেরগার যোদ্ধারা কোবানির যোদ্ধাদের সঙ্গে যোগ দিলে তা অবশ্যই যুদ্ধে প্রভাব ফেলবে।' কুর্দি যোদ্ধাদের অস্ত্র দিল আমেরিকা সিরিয়ার কুর্দিপ্রধান শহর কোবানিতে আইএস জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াইরত কুর্দি যোদ্ধাদের আকাশপথে অস্ত্র সরবরাহ করেছে আমেরিকা। রোববার কোবানির কাছে এসব অস্ত্র সরবরাহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আমেরিকার সেনাবাহিনী। আমেরিকার সেন্ট্রাল কমান্ডের পক্ষ থেকে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়, 'কোবানিতে আইএস প্রতিরোধ করার উদ্দেশে ইরাকের কুর্দি কর্তৃপক্ষের অনুরোধে শর্তসাপেক্ষে এসব অস্ত্র পাঠানো হয়েছে।'

বিবিসি তার প্রতিবেদনে আমেরিকার এই পদক্ষেপ সম্পর্কে মন্তব্য করে বলেছে, কুর্দিদের অস্ত্র সরবরাহের এই পদক্ষেপ আমেরিকার মিত্র তুরস্ক কোনোভাবেই ভালো চোখে দেখবে না। এর আগে রোববার তুরস্কে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বলেছিলেন, তিনি কুর্দি যোদ্ধাদের জন্য কোনো ধরনের আমেরিকান সমরাস্ত্র সরবরাহের অনুমতি দেবেন না। শুধু তাই নয়, রোববার কুর্দিদের অস্ত্র দেয়ার মাধ্যমে আমেরিকার প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে সিরিয়ার আসাদবিরোধী কোনো বিদ্রোহীগোষ্ঠীর কাছে অস্ত্র সরবরাহ করল।

এর আগে অনেকবার সিরিয়ার ক্ষমতাসীন সরকারের পক্ষ থেকে আমেরিকা বিদ্রোহীদের মারণাস্ত্র সরবরাহ করছে বলে অভিযোগ করা হলেও ওয়াশিংটন বারবারই তা অস্বীকার করে এসেছে। তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলা সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে না পড়লেও এই প্রথম বিদ্রোহীদের কট্টর অংশের মোকাবেলায় অপর অংশকে সরাসরি অস্ত্র সরবরাহ করল আমেরিকা। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের ধারাবাহিকতায় ২০১২ সালে কোবানির ওপর কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণ শিথিল হয়ে পড়ে এবং শহরটিতে কুর্দি সংগঠন পিপলস প্রোটেকশন ইউনিটসের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়।

নিজ ভূখ-ের মাত্র এক মাইল দূরত্বে কোবানিতে একটি স্বায়ত্তশাসিত কুর্দি এলাকা প্রতিষ্ঠার ঘটনা আবারো কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদকে উস্কে দিতে পারে বলে তুরস্ক আশঙ্কা করে আসছিল। বাগদাদে আবারো বোমা হামলা এদিকে, ইরাকের রাজধানী বাগদাদের পশ্চিম?াংশের একটি শিয়া মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলায় কমপক্ষে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার রাতে এ ঘটনা ঘটলেও শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কেউ এ হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেনি।

যদিও বোমা হামলার দায় কেউ দায়িত্ব স্বীকার করেনি, তারপরও আইএস নেতৃত্বাধীন সুনি্ন কট্টরপন্থীরাই এর জন্য দায়ী বলে নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে। এর আগে শনিবার হারথাইয়া এলাকায় বোমা বিস্ফোরণে ৩০ জন আহত হয়। এছাড়া, গত কয়েকদিনে বোমা হামলায় রাজধানী বাগদাদে বহু প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!