DMCA.com Protection Status
title=""

২৪শে অক্টোবরঃ জাতিসংঘ দিবস এবং বাংলাদেশ

 index8 (1)বিশ্বের প্রতি পঞ্চাশ জন মানুষের মধ্যে একজন বাংলাদেশী। আর প্রতি ত্রিশ জনের মধ্যে একজনের ভাষা বাংলা। একারণেই বাংলাদেশের শান্তি, স্থিতিশীলতা রক্ষার অর্থ দাঁড়ায় বিশ্বের প্রতি ৫০ জন মানুষের একজন শান্তিতে থাকা, স্থিতিশীল জীবন যাপন করা।

বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা হচ্ছে গনতন্ত্রের অভাব এবং গুরুতর মানবাধিকার পরিস্থিতি।যার ফলে উন্নয়নের অন্যান্য সূচক গুলোতে উল্লেখ যোগ্য অগ্রগতি হলেও শুধুমাত্র গনতন্ত্রের অভাবে অমিত সম্ভাবনার এই দেশ টি তার কাংখিত লক্ষ্য অর্জনে বার বার ব্যর্থ হচ্ছে।

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর নানান চেষ্টা ছাড়াও, বাংলাদেশ শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় কতগুলো আশাব্যঞ্জক নিজস্ব সফলতার দৃষ্টান্ত দেখিয়েছে। তবুও নির্দিষ্ট কিছু আন্তর্জাতিক সমস্যা বাংলাদেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে উঠছে। কিন্তু জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো তার সমাধানে উল্লেখযোগ্য কোন ভূমিকা রাখতে পারছে না।

উদীয়মান অর্থনীতির অঞ্চল এশিয়ার দেশ হিসেবে আগামী বিশ্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক গুরুত্ব দিনকে দিন বেড়েই চলছে। একারণেই ২০১৪ সালের ইউএন দিবসে নতুন করে আলোচনায় আনতে হয় বিশ্বশান্তিতে বাংলাদেশের প্রসঙ্গ।

বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠান হিসেবে কতটা গুরুত্ব বহন করতে পারছে তা নিয়ে বিতর্ক আছে। কেউ কেউ বলছে, ইউএন দিবসে উদযাপনের মতো কোন সফলতা নাই জাতিসংঘের। আবার কেউ কেউ উদযাপনের জন্য সফলতার তালিকাও তৈরী করে দিচ্ছে।

জাতিসংঘের সফলতার তালিকায় বিবেচনায় আসছে খাদ্য সহায়তা, উদ্বাস্তু সহায়তা, শিশু অধিকার সুরক্ষা, নারী অধিকার অর্জন, এইডস প্রতিরোধ ইত্যাদি। এই খাতগুলোতে জাতিসংঘ মডেলের বাইরে গিয়ে বাংলাদেশের স্বতন্ত্র্য অর্জনের উদাহরণ আছে।

বাংলাদেশের নারী ও শিশু অধিকার পরিস্থিতি বিশ্বের অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের চাইতেও আশাব্যঞ্জক। বিশেষ করে পার্শ্ববর্তী পাকিস্তান ও ভারতের চাইতে বাংলাদেশে নারী ও শিশু অধিকার পরিস্থিতি অনেক বেশি উন্নত। এছাড়া খাদ্য উৎপাদন, এইডস নিয়ন্ত্রণের মতো চ্যালেঞ্জগুলোও বাংলাদেশ মোকাবেলা করছে সফলতার সাথে। তবুও কতগুলো বৈশ্বিক ইস্যু বাংলাদেশের ধারাবাহিক উন্নতি ও কোটি কোটি বাংলাদেশীর স্থিতিশীল জীবন-যাপনকে অনিশ্চিত করে তুলছে। যেমন-মানবসৃষ্ট পরিবেশ বিপর্যয়, মায়ানমারের উদ্বাস্তু সমস্যা, আন্তঃদেশীয় নদীর পানি বন্টন ইত্যাদি।

এই সমস্যাগুলো সমাধানে বিশ্ব প্রতিষ্ঠান হিসেবে জাতিসংঘের উল্লেখযোগ্য কোন ভূমিকা নাই। ‘রোহিঙ্গা শরণার্থীরা’ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে নানান অস্থিরতা সৃষ্টির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘের কোন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নাই।

এছাড়া তিস্তা নদীর পানি বন্টন সমস্যাসহ বাংলাদেশ-ভারত ও চীনের মধ্যকার অভিন্ন নদীর পানি বন্টন সমস্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক কোন উদ্যোগ নাই। এই সমস্যা বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে।

বাংলাদেশে ২ কোটিরও বেশি মানুষ নিরাপদ খাবার পানির সংকটে পড়েছে। এই নিরাপদ খাবার পানির সংকট একটি মানব সৃষ্ট পরিবেশ বিপর্যয়। এই বিপর্যয়ের নেপথ্যে অনেক ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য। যেমন, ঢাকার পানির স্তর নেমে যাওয়ার পেছনে ভূমিকা পালন করছে রপ্তানীমুখী পোশাক শিল্প কারখানাগুলো। পোশাক শিল্পকারখানাগুলোর জন্য পানির চাহিদা মেটাতে ভূ’তে বেড়ে গেছে গর্ভস্থ পানির ব্যবহার। এতে করে নেমে যাচ্ছে পানির স্তর। ফলে বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে পোশাক শিল্পের এই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য হুমকির মুখে ফেলছে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষকে। অথচ,এই সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় গবেষণা কিংবা অবকাঠাম উন্নয়নে মনযোগ নাই আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোর।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!