বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আন্দোলনের হুমকির জবাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওনি নাকি সরকার উৎখাত করবেন। ওনার পায়ের তলার মাটিই তো সরে যাচ্ছে।’
শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ওনার পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে কিন্তু ওনি টের পাচ্ছেন না। আসলে দেশের মানুষ ভাল থাকলে ওনার মনে অশান্তি দেখা দেয়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ মানুষের সক্ষমতা বাড়ছে। মানুষ কোরবানি দিয়েছে, কেনাকাটা করেছে। এখন শতভাগ ছেলে-মেয়ে স্কুলে যায়। আমরা মানুষকে উন্নত চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি। আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আন্তর্জাতিকভাবে দেশ স্বীকৃতি পাচ্ছে। সিপিএ ও আইপিইউতে বিজয় হয়েছে। এটা গণতন্ত্রের বিজয়।’
তিনি বলেন, ‘আজকে দেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন হয়েছে। এটা তার (খালেদা জিয়া) সহ্য হয় না। বিএনপি-জামাতের আন্দোলন মানেই সন্ত্রাস আর জঙ্গিবাদ। অতীতে যারা এগুলো করেছে তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। আমরা কোনোভাবেই আর এগুলো হতে দেব না। যারা এগুলো করবে তাদের সহজে ছেড়ে দেব না।’
দেশের উন্নয়নে সবার সাহায্য চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। এজন্য দেশের মানুষের মধ্যে বিশ্বাস থাকতে হবে, আকাঙ্ক্ষা থাকতে হবে। একটা ভিশন থাকতে হবে। আমাদের ভিশন ২০২১।’
খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তিনি কোথায় পেলেন দেশের মধ্যবিত্ত মানুষ গরীব হচ্ছে আর গরীবরা আরো গরীব হচ্ছে। ওনার তো ছিল ভাঙ্গা সুটকেস আর ছেড়া গেঞ্জি। ওনি নিজের দিকটাই দেখুন না কত পরিবর্তন হয়েছে।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বিএনপি নেত্রীর শাড়ি, গহনা নিয়ে বিলাসিতার অভিযোগ তুলে বলেন, ‘এত টাকা ওনি কোথায় পেলেন। হয় ওই ভাঙ্গা সুটকেসে যাদু আছে না হয় চুরি করেছেন। আমাদের আগে থেকেই ছিল। কিন্তু ওনার তো ভাঙ্গা সুটকেট আর ছেড়া গেঞ্জি ছাড়া কিছু ছিল না, ওনি এগুলো কোথায় পেলেন?’
খালেদার মামলা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘ওনি আসলে মামলায় হাজিরা দিতে ভয় পান। কারণ হাজিরা দিলেই তো ধরা পরে যাবেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি মানুষকে কী দিয়েছে এটা দেশের মানুষকে ভাবতে হবে। বিএনপির নেতা-নেত্রীরা পেয়েছেন। কিন্তু দেশের মানুষ কী পেয়েছে? আসলে তারা দেশের মানুষকে জঙ্গিবাদ আর সন্ত্রাস দিয়েছে। আর আমরা দিয়েছি শান্তি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের মানুষ আমাদের ভোট দিয়েছে। আমরা আমাদের ইশতেহার অনুযায়ী দেশ চালাচ্ছি। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে বিশ্বে মর্যাদার আসন দিয়েছে। আর এটা সম্ভব হয়েছে দেশের জনগণের জন্য। কারণ তারাই আমাদের ভোট দিয়ে সেই সুযোগ করে দিয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী হুঁশিয়ারি উচ্চরণ করে বলেন, ‘কেউ যদি দেশের জনগণের ক্ষতি করতে চায় তাহলে অবশ্যই তার উপযুক্ত জবাব দেয়া হবে। আমরা দেশের মানুষের পাশে আছি।’
প্রধানমন্ত্রীর সূচনা বক্তব্যের পরে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে কমিটির সদস্যরা উপস্থিত আছেন। এ বৈঠকেই আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর পদ থেকে অব্যাহতি পাওয়া লতিফ সিদ্দিকীকে দল থেকে বহিষ্কারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়।