একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন না বলে জানিয়েছেন তার বড় ছেলে হাসান ইকবাল ওয়ামী।
তিনি মঙ্গলবার সাংবাদিকদের একথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘সরকার যেখানে রায়ের রিভিউ আবেদনের সুযোগ দিচ্ছে না, পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি প্রকাশ করার অপেক্ষা রাখছে না। সেখানে কীভাবে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন তিনি?’হাসান ইকবাল বলেন, ‘সরকার আমাদের প্রতি ভদ্র আচরণ করলে, হয়তো প্রাণভিক্ষার ব্যাপারে আবেদন করার একটা রাস্তা থাকত। কিন্তু সে পথ আর খোলা নেই। বাবা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন না।’
হাসান ইকবাল জানান, ‘মঙ্গলবার সকালে বাবার সঙ্গে দেখা করার জন্য গাজীপুর কারা কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়। কারা কর্তৃপক্ষ বলেছে- আজ ছুটির দিন, তাই দেখা করার কোনো সুযোগ বিধান নেই।’
তিনি বলেন, অথচ এর কিছুক্ষণ পর জানতে পারি, বাবাকে গাজীপুর কারাগার থেকে ঢাকায় নেয়া হয়েছে। সরকার তড়িঘড়ি করে আমার বাবাকে হত্যা করতে চাইছে বলেও অভিযোগ করেন হাসান ইকবাল ওয়ামী।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কেন তড়িঘড়ি বলব না। সংবিধানে রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশ করার কথা বলা হয়েছে। শ্রদ্ধেয় আব্দুল কাদের মোল্লার ক্ষেত্রেও রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশ হতে ৭৮ দিন সময় লেগেছিল। তারপর রিভিউ করা হয়েছিল। কিন্তু কামারুজ্জামানের ক্ষেত্রে কেন এ সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না? এজন্যই বলছি- সরকার তড়িঘড়ি করে আমার বাবাকে হত্যা করতে চাইছে।’
উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।
আসামিপক্ষের আইনজীবীরা সংবিধানের ১০৫ অনুচ্ছেদ বলে আসামি রায় নিয়ে রিভিউ আবেদন করার সুযোগ পাবেন বললেও রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইন কর্মকর্তা এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, ট্রাইব্যুনাল সংবিধান সংরক্ষিত আইন। এখানে রিভিউ করার কোনো সুযোগ নেই।
অবশ্য সোমবারই আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিভিউ আবেদনের জন্য রায়ের পূর্ণাঙ্গ পেতে আবেদন দাখিল করেছেন। আর রাষ্ট্রপক্ষ রায়ে শর্ট কপি চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে।
এর আগে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার ক্ষেত্রে রিভিউয়ের শর্ট কপি দিয়েই রায় কার্যকর করা হয়েছিল।