ঘুষ খেয়ে অ্যাডহক ভিত্তিক চিকিত্ক নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। চিকিত্সক নিয়োগে ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা ঘুষ নেয়া হচ্ছে বলে দুর্নীতিবিরোধী এ সংস্থাটি এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন ।
তবে এই প্রতিবেদনের তীব্র প্রতিবাদ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোঃ নাসিম বলেছেন,টিআইবির এই রিপোর্ট মিথ্যা,বানোয়াট এবং উদ্দ্যেশ্য প্রনোদিত।
টিআইবির রিপোর্টঃ
ঘুষ ছাড়া মিলছে না পদোন্নতি, বদলিও;
পদ ও এলাকার গুরুত্ব বিবেচনা করে নেয়া হচ্ছে ১ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ। রাজধানীর মহাখালীর হোটেল অবকাশে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলেনে ‘স্বাস্থ্য খাতে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার মান অনুযায়ী মাথাপিছু স্বাস্থ্যসেবা ব্যয় ২ হাজার ৬৫২ টাকা হলেও বাংলাদেশে তা মাত্র ৩৯০ টাকা।
চিকিত্সক-কর্মকর্তাসহ সব ধরনের নিয়োগ-বদলিতে দলীয়করণ ও অপর্যাপ্ত বরাদ্দের কারণে স্বাস্থ্য খাতে সুশাসনের ঘাটতি রয়েছে বলে জানিয়েছে টিআইবি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য খাতে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ ও বদলিতে ১ থেকে ৫ লাখ, ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকায় বদলিতে ৫ থেকে ১০ লাখ, সুবিধাজনক স্থানে দীর্ঘদিন অবস্থানের জন্য ২ থেকে ৫ লাখ টাকাসহ বিভিন্ন প্রকার ঘুষের লেনদেন হয়। আর এসব নিয়ন্ত্রণ করছে এ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দলীয় ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের সফলতা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রশংসিত হলেও এ খাতে সুশাসনের ঘাটতি রয়েছে অন্যান্য যে কোনো খাতের তুলনায় বেশি। হাসপাতালে ডাক্তার, কর্মকর্তাদের নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতিতে দলীয় প্রভাব বিরাজ করায় পদে পদে দুর্নীতি বাড়ছে। এ খাতে অপর্যাপ্ত বরাদ্দের কারণে এমনটি হয় বলেও মনে করছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা টিআইবি।
স্বাস্থ্য খাতে যন্ত্রপাতি ক্রয়, জনবল নিয়োগ, হাসপাতালের ভবন নির্মাণ, ওষুধ সরবরাহসহ সেবাগ্রহণের প্রতিটি ক্ষেত্রেই ঘটে ভয়াবহ দুর্নীতি।
তবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয় নিয়োগ ও বদলির ক্ষেত্রে। অপর্যাপ্ত অর্থবরাদ্দও চিকিত্সা খাতে দুর্নীতির অন্যতম কারণ বলে মনে করে টিআইবি।
টিআইবির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সরকারি হাসপাতালে অপর্যাপ্ত অর্থ ও সুশাসনের অভাবে চিকিত্সাসেবা কম হলেও এ ক্ষেত্রে ভিন্নতা বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহে। তারা বিভিন্ন কৌশলে রোগীদের নিকট থেকে অনেক বেশি অর্থ আদায় করে। ডাক্তারদের দিতে হয় অতিরিক্ত সুবিধা।
সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন টিআইবির প্রোগ্রাম ম্যানেজার তাসলিমা আক্তার। এ সময় সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানও উপস্থিত ছিলেন।