DMCA.com Protection Status
title="শোকাহত

কিবরিয়া হত্যা মামলা:তৃতীয় দফা চার্জশিট পরিবর্তনঃহারিস চৌধুরী,আরিফুল হক ও জিকে গউস নতুন অভিযুক্ত

kibriyaসাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার হত্যা মামলায় সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরীসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে  সম্পূরক চার্জশিট(সর্বমোট ৩)  দাখিল করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এভাবে একই মামলায় বারবার চার্জ শিট পরিবর্তন এবং পরিবর্ধন করা কতটুকু আইন সম্মত তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের যথেস্ট সন্দেহ রয়েছে।

বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় হবিগঞ্জ কগনিজেন্স আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রোকেয়া আক্তারের আদালতে তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মেহেরুন নেছা খানম এ চার্জশিট দাখিল করেন।

নতুন এ চার্জশিটে বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী, মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র জি কে গউছ, মাওলানা তাজউদ্দিন আহমেদ, মুফতি সফিকুর রহমান, আব্দুল হাই, মোহাম্মদ আলী, বদরুল ইসলাম, মহিবুর রহমান, কাজল মিয়া ও এহিয়া চৌধুরীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মেহেরেুন নেছা দৈনিক প্রথম বাংলাদেশকে জানান, বেলা ৩টার দিকে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।

২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি নিহত শাহ এএমএস কিবরিয়ার স্ত্রী আসমা কিবরিয়ার নারাজি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক দিলীপ কুমার বণিক একজন সিনিয়র পুলিশ অফিসারের মাধ্যমে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য নির্দেশ দেন। এরপর মামলাটি তদন্ত করেন সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মেহেরুন নেছা। তিনি দায়িত্ব পাওয়ায় পর দীর্ঘ ২৩ মাস পর বৃহস্পতিবার আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে ঈদ পরবর্তী এক জনসভা শেষে বের হওয়ার পথে গ্রেনেড হামলায় শিকার হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া। গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকায় নেয়ার পথে মারা যান তিনি।

এ ঘটনায় বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও হবিগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল মজিদ খান বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করেন।

প্রথমে সিআইডির এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান মামলাটি তদন্ত করে ১০ জনের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালের ২০ মার্চ অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এই অভিযোগপত্রে জিয়া স্মৃতি ও গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আবদুল কাইয়ুম ও ব্যাংক কর্মকর্তা আয়াত আলী, কাজল মিয়া, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-দপ্তর সম্পাদক সেলিম আহমেদ, জিয়া স্মৃতি গবেষণা পরিষদ জেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী, বিএনপি কর্মী তাজুল ইসলাম, জয়নাল আবেদীন জালাল, ইউনিয়ন বিএনপি নেতা জমির আলী, জয়নাল আবেদীন মোমিন ও মহিবুর রহমানকে অভিযুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে তারা জামিনে মুক্তি পান। বর্ধিত তদন্তকালেও তাদের চার্জশিটভূক্ত করা হয়।

অভিযোগপত্র দেয়ার পর মামলার বাদী অ্যাডভোকেট আবদুল মজিদ খান ২০০৬ সালের ৩ মে সিলেট দ্রুত বিচার আদালতে নারাজি আবেদন করলে আদালত তার আবেদন খারিজ করেন। পরে ১৪ মে তিনি হাইকোর্টে আপিল করেন। আপিলের প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ তখনকার সরকারের প্রতি ‘কেন অধিকতর তদন্ত করা যাবে না’ মর্মে রুল জারি করেন। এই রুলের বিরুদ্ধে ২০০৬ সালের ১৮ মে লিভ টু আপিল করে সরকার। কিন্তু আপিল বিভাগ সেটি খারিজ করে দেয়।

এরপর ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এ মামলার অধিকতর তদন্ত শুরু হয়। দায়িত্ব দেয়া হয় সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলামকে। দীর্ঘ তদন্ত শেষে তিনি ২০১১ সালের ২০ জুন আরও ১৪ জনকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করেন। হত্যাকাণ্ডের সাড়ে ছয় বছর পর সাবেক স্বারাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও মুফতি হান্নানসহ ২৪ জনকে আসামি করে অধিকতর তদন্তের চার্জশিট দাখিল করা হয়।

এই ২য়   সম্পুরক চার্জশিটে অভিযুক্তরা ছিলেন- লুৎফুজ্জামান বাবর ছাড়াও হরকাতুল জিহাদের নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান, লস্করই তৈয়বার সদস্য আব্দুল মজিদ কাশ্মীরি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজ উদ্দিন, মহিউদ্দিন অভি, শাহেদুল আলম দিলু, সৈয়দ নাঈম আহমেদ আরিফ, ফজলূল আলম মিজান, মিজানুর রহমান মিঠু, মোহাম্মদ আব্দুল হাই, মোহাম্মদ আলী, মুফতি সফিকুর রহমান, বদরুল এনায়েত মো. বদরুল, বদরুল আলম মিজান, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আবদুল কাইউম, জেলা বিএনপির কর্মী ও ব্যাংক কর্মকর্তা আয়াত আলী, কাজল মিয়া, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-দপ্তর সম্পাদক সেলিম আহমেদ, জিয়া স্মৃতি গবেষণা পরিষদ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী, বিএনপি কর্মী তাজুল ইসলাম, বিএনপির কর্মী জয়নাল আবেদীন, জমির আলী, জয়নাল আবেদীন মোমিন ও মহিবুর রহমান।

চার্জশিটের ওপর ২০১১ সালের ২৮ জুন কিবরিয়ার স্ত্রী আসমা কিবরিয়া হবিগঞ্জের জুডিসিয়াল কোর্টে আবারও নারাজির আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে মামলার মূল নথি সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে থাকায় বিচারক রাজিব কুমার বিশ্বাস উপ-নথির মাধ্যমে আবেদনটি সিলেটে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি অধিকতর তদন্তের চার্জশিটে নারাজির আবেদন গ্রহণ করেন সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক দিলীপ কুমার বণিক। এ সময় তিনি সিনিয়র পুলিশ অফিসারের মাধ্যমে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য নির্দেশ দেন।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!