পুত্রবধূ শামারুখ মাহজাবিন সুমির (২৬) রহস্যজনক মৃত্যুর কিছু সময় পর থেকেই ধানমণ্ডি ৬ নম্বরের ফ্ল্যাটে নেই সাবেক সংসদ সদস্য টিপু সুলতান ও তার স্ত্রী ডা. জেসমিন আরা বেগম। পুলিশ বলছে, মামলার সংবাদ পেয়েই ফ্ল্যাট থেকে সটকে পড়েন তারা। তবে আত্মগোপনে থাকলেও পুলিশের নজরদারিতেই রয়েছেন এ দু’জন। শনিবার সন্ধ্যায় নিহতের ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া যাবে। সেই প্রতিবেদনের ওপরই নির্ভর করছে তাদের ভাগ্য।
মামলার অগ্রগতি নিয়ে শনিবার সকালে ধানমণ্ডি থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিকের সঙ্গে কথা হলে তিনি এমনটাই জানান। মামলাটি করেন সুমির বাবা প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম। যেখানে তিনি সুমির স্বামী হুমায়ুন সুলতান সাদাফ, শ্বশুর টিপু সুলতান ও শাশুড়ি ডা. জেসমিন আরা বেগমকে আসামি করেন।
এদিকে মামলার পরপরই সুমির স্বামী সাদাফকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার মহানগর হাকিম ইরফান উল্লাহর আদালতে সাদাফের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। পরে আদালত এ রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে রোববার শুনানির জন্য পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
চাঞ্চল্যকর এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শরিফুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি দৈনিক প্রথম বাংলাদেশকে বলেন, ‘শুক্রবার রাত থেকেই আমরা টিপু সুলতানের ধানমণ্ডির ৬ নম্বর রোডের ১৪ নম্বর বাসায় নজরদারি রেখেছি। কিন্তু মামলার সংবাদ পাওয়া মাত্রই স্ত্রীসহ তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন। তবে আমরা তাকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টায় আছি। আশা করা যায় শিগগিরই তাকে গ্রেপ্তার করতে পারবো।’
তবে ওসি আবু বকর সিদ্দীক বলেন, ‘সাবেক সংসদ সদস্য টিপু সুলতান ও তার স্ত্রী ডা. জেসমিন আরা বেগম আমাদের নজরদারিতেই রয়েছেন। আদালতের নির্দেশনা পেলেই যে কোনো সময় তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।’
এমপি খান টিপু সুলতানের বিরুদ্ধে আরো বেশকিছু অভিযোগ রয়েছে। এর আগে গত জানুয়ারিতে বিস্ফোরক দ্রব্যসহ একাধিক মামলার আসামি মনিরামপুর পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক ও পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আদম আলীর মুক্তি দাবিতে অনশন করেন স্থানীয় এমপি খান টিপু সুলতান।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর ধানমণ্ডির ৬নং রোডের ১৪ নম্বর বাসা থেকে সুমির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় যশোর-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য খান টিপু সুলতান ও তার স্ত্রী ডাক্তার জেসমিন আরার বিরুদ্ধে পুত্রবধূ শামারুখ মেহজাবিন সুমিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেন খান টিপু সুলতান। তিনি দাবি করেন, পুত্রবধূ সুমি আত্মহত্যা করেছেন।
নিহত সুমি যশোর শহরের পুরাতন কসবা এলাকার প্রকৌশলী নুরুল ইসলামের মেয়ে। তিনি রাজধানীর হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। ২০১২ সালের ২৬ ডিসেম্বর যশোরের সাবেক এমপি খান টিপু সুলতানের ছেলে হুমায়ুন সুলতান সাদাফের সঙ্গে শামারুখ মেহজাবিন সুমির বিয়ে হয়।