জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) গোয়েন্দা শাখা স্বপ্রণোদিত হয়ে নয় বরং বোর্ড চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন নিজেই তার ব্যাংক হিসাব তলব করতে গোপনে নির্দেশ দিয়েছেন।
এই নির্দেশনার পেছনে চেয়ারম্যানের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর একটি চাতুরি আছে বলে এনবিআরের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক প্রথম বাংলাদেশকে জানিয়েছেন।
তিনি জানান, আগামী ৭ জানুয়ারি এনবিআর চেয়ারম্যান গোলাম হোসেনের চাকরির মেয়াদ শেষ হবে। এর আগে অবশ্য তার চাকরির মেয়াদ এক বছর বাড়ানো হয়েছিল। এখন দ্বিতীয় দফায় বাড়ানোর জন্য একটি ‘ক্লিন সার্টিফিকেট’ দেখানোর কৌশল হিসেবে তিনি বোর্ডের গোয়েন্দা শাখাকে তার ব্যাংক হিসাবের তথ্য চাওয়ার গোপন নির্দেশ দিয়েছেন।
গোয়েন্দা শাখা কর্তৃক এনবিআরের কোনো শীর্ষ কর্মকর্তার সম্পদের হিসাব চাওয়ার ঘটনা অভূতপূর্ব। তবে গোলাম হোসেন বোকার মতো কাজ করেছেন বলে মনে করছেন বোর্ডের কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) চিঠি দিয়ে ১৭টি ব্যাংকের কাছে গোলাম হোসেনের যাবতীয় ব্যাংক হিসাব চেয়েছে। এর পাশাপাশি তার স্ত্রী জাকিয়া মনসুর হোসেনের যাবতীয় ব্যাংক হিসাবও চাওয়া হয়েছে।
২০০৭ সালের জুলাই থেকে হালনাগাদ পর্যন্ত তাদের নামে থাকা যেকোনো ধরনের মেয়াদি আমানত ও সঞ্চয়ী হিসাবের তথ্য ২৪ নভেম্বরের মধ্যে সিআইসিতে সরাসরি পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তথ্য না দিলে এককালীন ২৫ হাজার টাকা ও পরবর্তী প্রতিদিনের জন্য ৫০০ টাকা হারে জরিমানা করা হবে বলে সিআইসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
সাধারণত কর ফাঁকির সন্দেহ হলে ১৯৮৪ সালের আয়কর অধ্যাদেশের ১১৩(এফ) ধারা অনুযায়ী যেকোনো করদাতার ব্যাংক হিসাব চাইতে পারে সিআইসি। পরে ব্যাংক হিসাবের সঙ্গে ওই করদাতার বার্ষিক আয়কর বিবরণীর সঙ্গে খতিয়ে দেখা হয়।
তবে এনবিআরের এক শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা দাবি করেন, গোলাম হোসেন নিজেই ১৭টি ব্যাংকের চিঠি পাঠানোর জন্য সিআইসিকে গোপনে নির্দেশ দিয়েছেন।