আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রে এক-এগারোর মইন উদ্দিন-ফখরুদ্দিনের সরকার তারেক রহমানকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রে এক-এগারোর অবৈধ সরকারের রোষানলে পড়ে প্রায় ৮ বছর যাবত তারেক রহমান নির্বাসিত জীবন যাপন করছেন। সে সময়ের মইন উদ্দিন-ফখরুদ্দিনের সরকার তারেক রহমানকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল।’
শুক্রবার বিকেলে স্থানীয় আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে তারেক রহমানের ৫০তম জন্মবার্ষিকীর এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বগুড়া জেলা বিএনপি আয়োজিত ‘অকুতোভয় দেশনায়ক উৎসবে’ ভিপি সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে মির্জা ফখরুল রঙ বে রঙ এর বেলুন উড়িয়ে এবং বিশাল আকারের কেক কেটে তারেক রহমানের জন্মোৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
তিনি বলেন, ‘শুধু তারেক রহমান নয়, দেশের স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি শহীদ জিয়াউর রহমানকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে এদেশের মানুষকে তাঁবেদার বানাতে চেয়েছিল। তাদের ষড়যন্ত্রেই বেগম জিয়াকে কারাগারে বন্দী রেখে তারেক রহমানকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল।’
এ সময় তারেক রহমান বর্তমান বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষী প্রতিটি মানুষের প্রিয় মানুষ বলেও দাবি করেন মির্জা ফখরুল।
৫ জানুয়ারি নির্বাচনের নামে তামাশা হয়েছে দাবি করে ফখরুল আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ গত ৫ বছর জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছিল বলেই দেশের মানুষ তাদের আর ক্ষমতায় দেখতে চায়নি। এজন্য বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট কেয়ারকেটার সরকারের অধীনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানিয়েছিল। বেগম জিয়া বারবার আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবি করেছিলেন। কিন্তু শেখ হাসিনা সে দাবি না মেনে ৫ জানুয়ারি একদলীয় নির্বাচনের তামাশা করেছেন।’
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমামের বক্তব্যে সব ফাঁস হয়েছে দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘তিনি (প্রধানমন্ত্রী) ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের নামে কি করেছেন তারই উপদেষ্টা এইচটি ইমাম তা ফাঁস করেছেন। র্যাব-পুলিশ আর প্রশাসনের দলীয় ক্যাডারদের দিয়ে কিভাবে নির্বাচনের নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছিল এইচটি ইমাম তা পরিষ্কার করে জাতিকে জানিয়ে দিয়েছেন।’
সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সামালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করেছে। সংবিধানকে তছনছ করেছে। অর্থনীতিকে ধবংস করেছে। ব্যাংকগুলো লুট করেছে। দেশের নির্বাচন পদ্ধতিকে ধবংশ করেছে। দেশর সব অর্জন ধবংস করে তারা আবারও একদলীয় বাকশালের পথে অগ্রসর হয়েছে।’
ফখরুল বলেন, ‘ছাত্রলীগ সারদেশের শিক্ষাঙ্গনে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। তাদের নিজেদের কোন্দলে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। নিজেরা নিজেরা গুলি খেয়ে মরছে। আওয়ামী লীগ ১৯৭৪ সালে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে যেভাবে বাকশাল কায়েম করেছিল, ঠিক একই কায়দায় আবারও শেখ হাসিনা এগিয়ে যাচ্ছেন।’
আওয়ামী লীগ খুনি, ফ্যাসিস্ট দল দাবি করে ফখরুল বলেন, ‘এই সরকারের নির্দেশে পুলিশ ৩ মাসে ৩১০ জনকে গুলি করে হত্যা করেছে। নিরাপত্তা বাহিনীর নামে ৬৫ জনকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গুম করেছে। আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে তারা খুনি, ফ্যাসিস্ট এবং নির্যাতনকারী দল। তারা ক্ষমতায় থাকলে আমাদের অস্তিত্ব থাকবেনা। দেশের স্বাধীনতা বিপন্ন হবে। গণতন্ত্র ধবংস হবে।’
এ সময় তিনি নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে এই সরকারের পতন ঘটাতে রাজপথে নামার আহ্বান জানান।
পরে জাসাস এর উদ্যোগে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়