ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর সংসদ সদস্য পদ। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তার সংসদ সদস্য পদ খারিজ চেয়ে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত অজ্ঞাত কারণে আটকে আছে।
আর এ কারণে দলের প্রাথমিক সদস্য পদ হারানোর ফলে তার সংসদ সদস্য পদ নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কের অবসান হচ্ছে না। চিঠি ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না সংসদ সচিবালয়।
গত ২৪ অক্টোবর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর সংসদ সদস্য পদ খারিজ চেয়ে নির্বাচন কমিশনে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন দলটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
ওই সিদ্ধান্তের পর প্রায় এক মাস কেটে গেলেও চিঠি পাঠানো হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে দলটির উপ-দপ্তর সম্পাদক মৃনাল কান্তি দাস জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। এ বিষয়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন তিনি।
এর আগে গত ২৭ অক্টোবর তিনি বলেছিলেন, ‘চিঠিটি প্রস্তুতের প্রক্রিয়া প্রায় শেষ। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি ইসিতে পাঠানো হবে।’
এ ব্যাপারে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা সম্ভব হয়নি।
এদিকে চিঠি না পৌঁছানোয় সংসদে লতিফ সিদ্দিকীর অবস্থান এখনও আওয়ামী লীগের সঙ্গেই। অপরিবর্তীত রয়ে গেছে অধিবেশন কক্ষে তার বসার আসনটিও।
আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্য হিসেবে লতিফ সিদ্দিকীর আসন স্পিকারের ডান পাশে ট্রেজারি বেঞ্চের প্রথম সারিতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। একই সারির শুরুতে বসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সহকারি সচিব মো. নাজমুল হক জানান, তার (লতিফ সিদ্দিকীর) আসন পরিবর্তনের কোনো নির্দেশনা তিনি পাননি।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে নবী (সা.), হজ ও তাবলীগ জামাত সম্পর্কে অবমাননাকর বক্তব্য দেয়ায় লতিফ সিদ্দিকীকে প্রথমে মন্ত্রিপরিষদ থেকে অপসারণ করা হয়। এরপর তাকে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য পদ ও সর্বশেষ দলের সাধারণ সদস্য পদ থেকেও বহিষ্কার করা হয়।
দলের সদস্যপদ হারানোর পর তার সংসদ সদস্য পদ থাকছে কি না সে বিতর্কেরও অবসান হয়নি। কেননা এ ব্যাপারে সংবিধান এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) স্পষ্ট করে কিছু বলা নেই। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে চিঠি পাঠানো হলে এ বিতর্কের অবসান হতো বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
সংসদ সদস্য পদ শূন্য প্রসঙ্গে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি যদি উক্ত দল থেকে পদত্যাগ করেন অথবা সংসদে উক্ত দলের বিপক্ষে ভোটদান করেন, তাহলে তার সংসদ সদস্য পদ বাতিল হবে।’ তবে বহিষ্কার করা হলে কী হবে তা স্পষ্ট নয়।
সংসদ বিশ্লেষকদের মতে, আইনে স্পষ্ট কিছু না থাকায় সরকার যা চাইবে তা-ই হবে। অতীতে এমনটাই হয়েছে।