গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলায় ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সবচেয়ে বেশি। ওই এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন ৫৫২ জন মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে ৪৬৩ জন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। ফলে সরকার এ ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে।
জানা যায়, গত ৩ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মুহাম্মদ নূর আলম এ নির্দেশে কোটালীপাড়া উপজেলার ৪৬৩ জন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতা স্থগিত করা হয়। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কোটালীপাড়া উপজেলা কমান্ডের কমান্ডার হাজী সরদার আব্দুল মালেকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই নির্দেশ দেয়া হয়।
ভাতাপ্রাপ্ত ৫৫২ মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে ৪৬৩ জনের ভাতা স্থগিত করার ঘটনাটি কোটালীপাড়ায় এখন সর্বত্র আলোচিত।এদিকে সমাজ সেবা অধিদপ্তর সা্ংবাদিকদের জানায়, কোটালীপাড়া উপজেলায় সম্মানী ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন ৫৫২ জন। এর মধ্যে ৪৬৩ জনকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা উল্লেখ করে কোটালীপাড়া উপজেলা কমান্ডার হাজী সরদার আব্দুল মালেক গত ১৮ অক্টোবর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় উল্লেখিত নির্দেশ দেয়।
ভাতা বন্ধ হওয়া ৪৬৩ জনের তালিকা রয়েছেন কোটালীপাড়া উপজেলা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার মো. সামচুল হক, ডেপুটি কমান্ডার আবুল কালাম আজাদ, আশালতা বৈদ্য, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী অনিল কুমার দের মত মুক্তিযোদ্ধার নাম।
সম্মানী ভাতা বন্ধের আবেদন করার বিষয়টি নিশ্চিত করে কোটালীপাড়া উপজেলা কমান্ডের কমান্ডার হাজী সরদার আব্দুল মালেক সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোটালীপাড়ায় অনেক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে। যা যাচাই বাছাই করা প্রয়োজন।’
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী অনিল কুমার দে বলেন, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে ২২টি গান গেয়েছি। আমার কাগজপত্র দেখে সরকার আমাকে ভাতা দিচ্ছে। এখন কেউ যদি আমাকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বলে তার চেয়ে পরিতাপের বিষয় আর নেই।’
সাবেক কমান্ডার মো. সামচুল হক বলেন, ‘বর্তমান কমান্ডার হাজী সরদার আব্দুল মালেক নির্বাচিত হওয়ার আগের তিন বছর আমি মুক্তিযোদ্ধাদের ভোটে নির্বাচিত কমান্ডার ছিলাম। আমাকে যদি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বলে তবে সে নিজেই ভুয়া।’
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন হেমায়েত বাহিনীর প্রধান বীর বিক্রম হেমায়েত উদ্দিন বলেন, ‘আমার জানা মতে কোটালীপাড়ার ভাতাপ্রাপ্ত কোনো মুক্তিযোদ্ধা ভুয়া নয়।’