DMCA.com Protection Status
title="৭

কারাগারে গিয়েও চোটপাট কমেনি ধর্মদ্রোহী লতিফ সিদ্দিকীর

1417061129কারাগারেও চোটপাট কমেনি ধর্ম নিয়ে মন্তব্য করে মন্ত্রিত্ব ও দলীয় পদ হারানো এমপি মুরতাদ আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর। প্রথম শ্রেনীর  ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দি হিসেবে তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ২৬নং দালানে  রয়েছেন।

 

বুধবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত তার ধমকে তটস্থ রয়েছেন অন্তত তিনজন কারারক্ষী। এ বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেছেন কারারক্ষীরা। তার ধমক থেকে রক্ষা পায়নি লতিফের সেবায় নিয়োজিত সেবকও। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।



এদিকে গতকাল বিকালে একজন আইনজীবী ও লতিফ সিদ্দিকীর ব্যক্তিগত কর্মচারী কারাগারে তার সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন। এ সময় তিনি দ্রুত আইনি দিক দেখার নির্দেশ দেন ওই আইনজীবীকে। তবে ওই আইনজীবীর নাম সন্ধ্যা পর্যন্ত জানাতে পারেনি জেল কর্তৃপক্ষ।    

 

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার নেসার আলম বলেন, ডিভিশনপ্রাপ্তরা যেসব সুযোগ পান তার সব কিছুই ওনাকে দেয়া হচ্ছে। ছাব্বিশ সেলের  চৌকা (রান্নাঘর) থেকে পছন্দের খাবারও পাচ্ছেন লতিফ সিদ্দিকী। ২৬টি রুম থাকার কারণে ওই ভবনটির এই নামকরণ করা হয়েছে। ‘দালান’ হিসেবেও এ ভবন পরিচিত।

 

কারাগারের মূল ফটক দিয়ে দেড়শ গজ পথ হাঁটার পর আরেকটি ফটক। সেটি পার হয়ে বাঁদিকে আরও একশ গজ রাস্তা পার হলে এই ভবন। সাবেক প্রধান বনরক্ষক ড. ওসমান গনি ছাড়াও আরও ২৪ জন বন্দি ওই ভবনে আছেন। তার রুমে একটি চকি, একটি টেবিল, একটি  চেয়ার, তোশক, বালিশ, বিছানার চাদর ব্যবহারের সুবিধা দেয়া হয়। 



কারা সূত্র জানায়, বুধবার সকালে আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে রুটি, আলু ভাজি ও চা দেয়া হয়। দুপুরে দেয়া হয় চিকন চালের ভাত, সবজি ও রুই মাছের তরকারি। এর আগে মঙ্গলবার রাতে দেয়া হয় ভাত ও গরুর গোশত।

মঙ্গলবার রাতে কারারক্ষীদের সঙ্গে চোটপাট না করলেও বুধবার সকালের নাশতা দিতে দেরি হওয়ার অজুহাতে এক কারারক্ষীকে ইচ্ছেমতো ধমকান তিনি। পরে ওই কারারক্ষী জেলার ও সিনিয়র সেল সুপারকে বিষয়টি অবহিত করেন। এ ছাড়া দুপুরের খাবার দেয়ার সময় তার সেবককে ধমক দেন। বিছানার চাদর ও রুম পরিষ্কার না থাকার অজুহাত তুলে বিকালে ওই সেবককে তিনি গালাগালিও করেন। এরপর কারা কর্তৃপক্ষ তাকে সাবধান করেন। প্রয়োজনে জেলকোড অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার কথাও স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়। এ সময় লতিফ সিদ্দিকীও তার অতীত তুলে ধরে জেল কর্তৃপক্ষকে সাবধান করেন।

 

জানা গেছে, মঙ্গলবার কারাগারে যাওয়ার পর থেকে লতিফ সিদ্দিকীর সঙ্গে তার পরিবারের সদস্যরা কেউ সাক্ষাত্ করতে আসেনি। এমনকি তার নির্বাচনী এলাকার কোনো ব্যক্তিও জেল কর্তৃপক্ষের কাছে সাক্ষাতের আবেদন করেননি। তবে বিকালে একজন আইনজীবী ও লতিফ সিদ্দিকীর এক কর্মচারী তার সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন। তারা আধাঘণ্টা অবস্থান করেন। 



উল্লেখ্য, গত ২৮ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে রাসূল (সা.), পবিত্র হজ, তাবলিগ জামাত এবং প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় মন্ত্রিসভা ও দল থেকে অপসারিত হন লতিফ সিদ্দিকী। একই সঙ্গে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ঢাকাসহ  দেশের ১৮টি জেলার আদালতে ২২টি মামলা হয়। নির্ধারিত সময়ে আদালতে হাজির না হওয়ায় অন্তত ৭টি মামলায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এরপর গত রবিবার রাতে তিনি ঢাকায় ফিরে অজ্ঞাত স্থানে চলে যান। মঙ্গলবার দুপুর একটায় তিনি ধানমণ্ডি থানায় আত্মসমর্পণ করেন। পরে আদালতে হাজির হলে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়। 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!