সত্যিকারের বিরোধী দল হতে শিগগিরই মন্ত্রিপরিষদ থেকে পদত্যাগের পরিকল্পনা রয়েছে জাতীয় পার্টির।'শিগগিরই মন্ত্রিসভা ছাড়ছে জাতীয় পার্টি'।
শুক্রবার সন্ধ্যায় গুলশানে তার বাসভবনে বৈঠকে রওশন এরশাদ ও নিশা দেশাই-
বৈঠকে এ আলোচনার সত্যতা নিশ্চিত করেন বিরোধীদলীয় নেতার রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসিহ।বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশন এরশাদ সফরত যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়ালের সঙ্গে বৈঠকে দলটির এ পরিকল্পনার কথা জানান।
জাতীয় পার্টির সত্যিকারের বিরোধী দল হতে সরকার ত্যাগের পরিকল্পনা রয়েছে কিনা-নিশা দেশাইয়ের এ প্রশ্নের জবাবে রওশন বৈঠকে বলেন, 'তার দল সত্যিকারের বিরোধী দল হতে চায়। এ কারণে যথা শিগগির মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের পরিকল্পনা রয়েছে।'
নিশা দেশাই জানান, যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় পার্টিকে সত্যিকারের বিরোধী দল হিসেবে আশা করে। রওশন তাকে বলেন, জাতীয় পার্টি গঠনমূলক বিরোধী দলের ভূমিকায় রয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে রওশনের বাসভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনাসহ দেশটির পাঁচ প্রতিনিধি এতে অংশ নেন।
প্রায় এক ঘণ্টার এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী, জাতীয় পার্টির এমপি এবিএম রহুল আমিন হাওলাদার, ফখরুল ইমাম, মো. সেলিমউদ্দিন, রওশন আরা মান্নান এবং বিরোধীদলীয় নেতার রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসিহ।
বৈঠকে উপস্থিত জাতীয় পার্টির নেতারা জানান, নিশা দেশাই বিরোধীদলীয় নেতার কাছে জানতে চান, বিএনপিবিহীন ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জাতীয় পার্টি কেন অংশ নিয়েছিল? জবাবে রওশন এরশাদ যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানান, নির্বাচন-পূর্ব সহিংসতা থেকে দেশকে বাঁচাতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো উপায় ছিল না।
বিএনপির নির্বাচন বর্জন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে সরকারের সবরকম প্রচেষ্টা ছিল। তৎকালীন সর্বদলীয় সরকার বিএনপিকে আশ্বস্ত করেছিল সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। সর্বদলীয় সরকারে বিএনপিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দিতেও রাজি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।'
সর্বদলীয় সরকারে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন রওশন এরশাদ।
নির্বাচনের পর সংসদে প্রধান বিরোধী দলের আসনে বসলেও সরকারেও অংশ নেয় জাতীয় পার্টি। মন্ত্রিসভায় দলটির তিনজন সদস্য রয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের জিজ্ঞাসায় বিরোধীদলীয় নেতা জানান, তার দল নির্দলীয় বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় বিশ্বাসী নয়। তিনি বৈঠকে বলেন, অতীতে প্রতিটি নির্বাচনের পর বিরোধী দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সমালোচনা করেছে। ব্যবস্থাটি ক্রটিপূর্ণ প্রমাণিত হয়েছে। নির্বাচনে এ পদ্ধতির প্রয়োজন নেই।
বৈঠকে শেষে তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে আগামী নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে কথা বলেছেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বিরোধী দলের নেতা তাকে জানিয়েছেন, আগামী নির্বাচন যথাসময়েই হবে। কোনো পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। কিন্তু আগাম নির্বাচনের কোনো সম্ভাবনা নেই।